দিনে স্কুল রাতে অটোচালক
আবুল কালাম আজাদ, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ)
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শিশুশ্রম আইনত নিষিদ্ধ হলেও বাস্তবতা ভিন্নকথা বলে। ঈশ্বরগঞ্জে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী পরিবারের অভাব-অনটন আর বাবার চিকিৎসার খরচ জোগাতে দিনের বেলায় স্কুলে পড়াশোনা করে এবং রাতে অটোরিকশা চালিয়ে সংসারের হাল ধরে রেখেছে।
সরেজমিন চরশিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সংগ্রামী শিশুটির জীবন সংগ্রামের কথা। জুনাইদের জন্ম নিবন্ধন না থাকায় সে উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত। শুধু তাই নয়, পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়া থেকেও সে বঞ্চিত হচ্ছে প্রধান শিক্ষিকা জানান এ কথা। পৌরসভার হোল্ডিং ট্যাক্সের টাকা দিতে না পারায় বাবা-মা তার জন্ম নিবন্ধন করতে পারছে না। প্রধান শিক্ষিকা মীনা খাতুন আক্ষেপ করে জানান, ছেলেটি লেখাপড়ায় খুবই ভালো। জুনাইদ স্কুলের প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় বাংলায় ৭১, ইংরেজিতে ৮২, গণিতে ৬৭, সমাজে ৬০, বিজ্ঞানে ৮০, ধর্মে ৯১, চারুকলায় ৪৮, শারীরিক শিক্ষায় ৪০, সংগীতে ৪৫ নম্বর পেয়ে উন্নীত হয়। অভাব-অনটনের সংসারের ব্যয়ভার বহন করতে সে নিজেই অটোরিকশা চালায়। জুনাইদের বাড়িতে গিয়ে তার মা আছমা বেগমকে দেখা যায় একটি ভাঙা ঘরে বসে রান্না করছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘স্বামী ৪ বছর ধরে অসুস্থ; কর্ম করার মতো ক্ষমতা নেই। সংসার চালাতে আমার অবুঝ শিশুকে দিনেরবেলায় স্কুলে পাঠাই, রাতের বেলায় অটো চালাতে দিই, যা দিয়ে সংসার কোনোরকমে চলছে।’ ছেলের জন্মনিবন্ধনের ব্যাপারে জানান, ‘আমাদের ঘরের পৌরকর বকেয়া বিল এসেছে আট হাজার আটশ পঁয়ষট্টি টাকা। করের টাকা দিতে না পারায় ছেলের জন্মনিবন্ধনও করতে পারতেছি না। জুনাইদ সবার কাছে দোয়া কামনা করে জানায়, ‘আমার পরিশ্রমেই আমাদের সংসার চলে।’
