Logo
Logo
×

বাংলার মুখ

কাউখালীতে সেচের অভাবে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত

Icon

সুশীল প্রসাদ চাকমা, রাঙামাটি

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাঙামাটির কাউখালীতে সেচের পানির অভাবে ব্যাহত হতে চলেছে কৃষি উৎপাদন। পানির অভাবে প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে মাঠজুড়ে অনাবাদি পড়ে থাকে বিস্তর চাষযোগ্য জমি। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে লোকসান গুনছেন কৃষক। সরেজমিন পরিদর্শনে এ তথ্য পাওয়া যায়। কৃষকরা জানান, বর্ষায় আমন চাষাবাদ করা গেলেও সেচের পানির অভাবে তাদের বিপুল পরিমাণ চাষযোগ্য জমি বোরো ও আউশ মৌসুমে সম্পূর্ণ অনাবাদি পড়ে থাকে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে এলাকার কৃষি উৎপাদন। ফসল উৎপাদনে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক। প্রতিবছর হারাচ্ছেন বিপুল পরিমাণ ধানসহ রবিশস্য ফলন। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ডানে উলটাপাড়া, বামে উলটাপাড়া ও রাঙ্গীপাড়া এলাকায় ৩০-৩৫ একর ধানি জমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে। পানি সেচের অভাবে বিপুল পরিমাণ এসব জমি প্রতিবছর বোরো ও আউশ মৌসুমে সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। চাষাবাদ করা যায় কেবল বর্ষায় আমন মৌসুমে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিটি মৌসুমে এসব জমি চাষাবাদ করা গেলে কোটি টাকার ফসল ফলানো সম্ভব হতো। কিন্তু পানি সেচের ব্যবস্থা না থাকায় এসব জমির চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক ও জমির মালিকরা। পাশে পাহাড়ি ছড়া রয়েছে। সেখানে বাঁধ অথবা স্লুইসগেট নির্মাণ করা হলে সহজেই পানি সেচের ব্যবস্থা গড়ে উঠত। এতে উপকৃত হতেন ৫০-৬০ জন জমির মালিক ও কৃষক। প্রতিবছর উৎপাদন হতো ধানসহ বিপুল পরিমাণ ফসল। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও এ পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি। স্থানীয় কৃষক ও জমির মালিক জয় শংকর তালুকদার, বরেন্দ্র তালুকদার, সংঘ লাল চাকমা, অমরসিং তালুকদার, করুন বিকাশ তালুকদার, দয়াল কান্তি তালুকদার, জয় কমল চাকমাসহ অনেকে বলেন, তাদের জমিতে প্রতিবছর বর্ষায় কেবল আমন ধান চাষাবাদ করে যথেষ্ট পরিমাণ ফসল উৎপাদন করেন। কিন্তু আমন চাষাবাদ করা গেলেও পানির অভাবে বোরো ও আউশ মৌসুমে কোনো রকম চাষাবাদই করতে পারেন না। পুরো দুটি মৌসুম জমিগুলো পরিত্যক্ত হয়ে থাকে। পানি সেচের ব্যবস্থা থাকলে ধান ছাড়াও তরমুজ, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, ঢেঁড়শ, ধন্দুল, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির চাষাবাদ করে প্রচুর উৎপাদন সম্ভব হতো। তারা পানি সেচের ব্যবস্থায় পাশের পাহাড়ি ছড়ায় বাঁধ অথবা স্লুইসগেট নির্মাণে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মুনিন্দ্র তালুকদার বলেন, ‘পানি সেচের ব্যবস্থা গড়ে উঠলে ওই এলাকার ৩০-৩৫ একর জমি চাষাবাদের উপযোগী হয়ে উঠবে। এতে প্রচুর ফসল উৎপাদন সম্ভব। উপকৃত হবেন ৫০-৬০ জন সংশ্লিষ্ট জমির মালিক ও কৃষক। এর আগে পানি সেচের ব্যবস্থার জন্য সরকারের বিভিন্ন জায়গায় আবেদন দিয়েছিলাম। কিন্তু এ পর্যন্ত কোথাও কোনো কাজ হয়নি। তাই এলাকার বৃহত্তর জনস্বার্থে ও কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ওইসব পতিত জমি চাষাবাদের জন্য পানি সেচের ব্যবস্থায় একটি বাঁধ অথবা স্লুইসগেট নির্মাণে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম