ডেমরা-রামপুরা সড়ক
পণ্যবাহী ট্রাক-লরির দীর্ঘ লাইনে যানজট
ডেমরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডেমরা রামপুরা সড়কে নিত্য যানজটে যাত্রী ও যানবাহন চালকেরা নাকাল হয়ে পড়েছেন। প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রশস্ত এ সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রায় প্রতিদিনই এ সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। আর রাতের বেলার দুর্ঘটনায় সৃষ্টি হওয়া যানজটে পণ্যবাহী ট্রাক-লরির দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কেই থেমে থাকতে হয় যানবাহন চালকদের। এ সময় যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি অটোরিকশা ও লেগুনাসহ প্রায় সব ধরনের যানবাহন আটকে যায়। যাত্রী ও যানবাহন চালকদের ভোগান্তি যেন চরম আকার ধারণ করে। অনেক যাত্রীর জরুরি মুহূর্তে দীর্ঘ পথ হেঁটে যেতে হয়। সরেজমিন দেখা গেছে, রোববার রাতে নাকদারপাড় ব্রিজে হাইনেস ও মিনি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এ সময় মিনি ট্রাকটি সড়কে আটকে গিয়ে শুরু হয় যানজট। এ সময়ের মধ্যে রামপুরা থেকে ডেমরাগামী সব যানবাহন আটকা পড়ে। পরে সড়কের উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন হয়ে অসহনীয় যানজট সৃষ্টি হয়। ওই যানজট সোমবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ভোগান্তি কমাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাদের ফেসবুক পেজে দীর্ঘ যানজটের পোস্ট করেন। আর মুহূর্তের মধ্যেই ভিডিও ও ছবি দেয়া পোস্টগুলো ভাইরাল হয়ে যায়। পরে মানুষ বিকল্প পথ ব্যবহার করায় সোমবার দুপুরের পর যানজট কিছুটা স্বাভাবিক হয়। তবে এই চিত্র প্রতিনিয়ত ঘটছে বলে অভিযোগ যাত্রী ও পথচারীসহ চালকদের। আর এ সড়ক দিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে পণ্যবাহী ট্রাক-লরি ও ২০ থেকে ৩০ চাকার যানবাহন চলাচল করে বলে যানজট লেগেই থাকে। এ বিষয়ে গুলশানগামী যাত্রী মিজানুর রহমান মোল্লা বলেন, রোববার রাতের যানজটের কারণে নাকদারপার থেকে হেঁটে মেরাদিয়া বাজার পর্যন্ত যেতে হয়েছে। গাড়ি চলাচলের জন্য একটু জায়গাও ফাঁকা নেই। আর মাঝেমধ্যেই এ ধরনের সমস্যায় পড়ি। সরেজমিন আরও দেখা গেছে, রাজধানীর প্রবেশদ্বার ডেমরা থেকে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা-রামপুরা দুটি সড়ক ঢাকামুখী হয়েছে। এক্ষেত্রে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এক্সপ্রেসওয়ের উন্নতি হওয়ায় এ সড়কে যানজট তেমন একটা লাগে না। তবে ডেমরা রামপুরা সড়কের কোনো উন্নয়ন না হাওয়ায় এ সড়কে যানজট নিয়মিত ঘটনা। এছাড়াও এই সড়ক দিয়েই দূরপাল্লার পণ্যবাহী ট্রাক লরিসহ ৩০ চাকার গাড়িও প্রতিনিয়ত চলাচল করে। অথচ ভারী পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে এসব উপযুক্ত না থাকলেও চালকরা সময় ও ১৮০০ টাকা টোল বাঁচাতে এ সড়কটি ব্যবহার করে। তাই যানজট এখানকার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এ বিষয়ে শরিফ হোসেন লিটন নামে এক যাত্রী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজে ডেমরা-রামপুরা সড়কটিই আমাদের একমাত্র ভরসা। তবে এই সড়কটি বর্তমানে যানজটের জন্য বিষফোড়া হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ত্রিমোহনী ও নাকদারপার ব্রিজটি অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক-লরি চলাচলের জন্য কোনোভাবেই উপযুক্ত নয়। তার পরও চালকরা কোনো না কোনোভাবে এ সড়ক দিয়ে আসতে শুরু করেছে। ট্রাফিক ডেমরা জোনের ইনস্পেকটর (টিআই) মো. সুলতান বলেন, যেহেতু রাজধানীর প্রবেশদ্বার ডেমরা, সেহেতু ডেমরা থেকে আমরা যানবাহন দ্রুত সরিয়ে দেই। তবে ডেমরা-রামপুরা সড়কের আমুলিয়া ও নাকদারপাড় এলাকার যানবাহন বিকল হলে যানজট সৃষ্টি হয়। আর ত্রিমোহনী ও নাকদারপার ব্রিজটি অপ্রশস্ত। একই সঙ্গে মূল সড়কটি ও অপ্রশস্ত থাকায় গাড়ি বিকল হলে যানজট সৃষ্টি হয়। তবে সড়কটি যদি পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা হয় তাহলে যানজটের সমস্যা কমে যাবে।
