ডিএসসিসি কাউন্সিলর নির্বাচন ২০২০
৭৩ নম্বর ওয়ার্ড: পরিকল্পিত নগরায়ণ করার অঙ্গীকার
ডেমরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মো. শফিকুল ইসলাম, সোহ্রাওয়ার্দী ও আমিনুল ইসলাম। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নবসৃষ্ট ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে পরিকল্পিত নগরায়ণ করার অঙ্গীকার করেছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। আধুনিক স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাসহ প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করতে চান তারা।
আর সুষ্ঠু নগরায়ণের লক্ষ্যে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখতে সবার সহযোগিতা চান প্রার্থীরা। চাঁদাবাজি নির্মূল করার অঙ্গীকার করেছেন অনেক প্রার্থী।
নগরীর সবুজবাগ থানাধীন নন্দিপাড়া বাজার, দক্ষিণগাঁও নয়াবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিণগাঁও পশ্চিমপাড়া, দক্ষিণগাঁও, দক্ষিণগাঁও দাসপাড়া, দক্ষিণগাঁও ৬নং রোড, দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ, বেগুনবাড়ি, ভাইগদিয়া, মানিকদিয়া ও উত্তর মানিকদিয়া পর্যন্ত এলাকা নিয়ে গঠিত ডিএসসিসির ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড।
এখানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার হলেও ওয়ার্ডে প্রায় ১ লাখ মানুষের বসবাস।এটি সংসদীয় ঢাকা-৯ আসন ও ৪নং আঞ্চলিক কার্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত এলাকা। ডিএসসিসির নতুন এ ওয়ার্ড উন্নয়নের ছোঁয়া এখনও লাগেনি। এলাকাটি আজও সুবিধাবঞ্চিত।
ডিএসসিসির ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হলেন- বর্তমান কাউন্সিলর ও দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম (করাত)।
বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হলেন- দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এইচএস সোরাওয়ার্দী (ঘুড়ি)। স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন- আমিনুল ইসলাম চৌধুরী (লাটিম)।
সরেজমিন দেখা গেছে, ডিএসসিসির ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা ও অবৈধ দখলের কারণে বাড়ছে নাগরিক দুর্ভোগ।
দু’একটি এলাকায় আধুনিকতার ছোঁয়া ও বহুতল ভবন থাকলেও বাকি এলাকাগুলোতে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের প্রতিচ্ছবিই ফুটে ওঠে।
ইতিমধ্যে স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাসহ ওয়ার্ডের অভ্যন্তরীণ কিছু রাস্তার উন্নয়ন হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন হয়নি। ওয়ার্ডে গ্যাস সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশুদ্ধ পানিরও অভাব প্রকট।
সড়কে নেই সড়ক বাতি, যত্রতত্র ময়লার স্তূপ, নোংরা পরিবেশ ও খালের দুর্গন্ধযুক্ত পচা পানিতে বিষিয়ে উঠেছেন অধিবাসীরা।
ওয়ার্ডটিতে কোনো কমিউনিটি সেন্টার, পার্ক-শিশুপার্ক, স্টেডিয়াম, লাইব্রেরিসহ কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই। শত বছরেও গড়ে ওঠেনি কোনো কলেজ, ডাকঘর, সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
মো. শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, গত কাউন্সিলর নির্বাচনে আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করার পর ওয়ার্ডে আধুনিক স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাসহ অভ্যন্তরীণ অধিকাংশ রাস্তার উন্নয়ন করা হয়েছে।
এখনও এলাকার প্রধান সড়কসহ বেশকিছু সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে এলাকার সামাজিক উন্নয়ন ও নাগরিক সেবায় নিয়োজিত রয়েছি।
আর ১৭ বছর বৃহত্তর ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আর সব দিক থেকে বিবেচনায় আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে সমর্থন দেয়া হয়েছে শুধু উন্নয়নের স্বার্থে।
আবারও নির্বাচিত হলে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রামের প্রতিচ্ছবিকে পেছনে ফেলে সুষ্ঠু পরিকল্পিত নগরায়ণ করব।
যেখানে মানুষের জীবনযাত্রার মান সর্বাধুনিক হবে। নাগরিক সেবাগুলো নিশ্চিত করে এখানে নাগরিক সুবিধা সম্পন্ন করে সব ধরনের অবকাঠামো পর্যায়ক্রমে নির্মাণ করা হবে।
এইচএস সোহরাওয়ার্দী যুগান্তরকে বলেন, আমি ১৯৭৭ সাল থেকে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে থেকে রাজনীতিতে জড়িত হয়ে রাজপথে থেকেছি। সেই সময় থেকেই এলাকার উন্নয়নে জড়িত।
২০১১ সাল থেকেই সফল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দক্ষিণগাঁওয়ের সার্বিক উন্নয়ন করেছি। দক্ষিণগাঁও ইউনিয়নের রূপচিত্র পরিবর্তন করতেও নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও ত্যাগ-তিতিক্ষা করতে হয়েছে। বিএনপির আস্থাভাজন হিসেবে আমাকে সমর্থন দেয়া হয়েছে।
তাই কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে এ ওয়ার্ডের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করব। আমি এলাকার স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনে থেকে সমাজে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছি।
একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা রয়েছে। ওয়ার্ডটিকে রাজধানীর সর্বাধুনিক নাগরিক সুবিধা সংবলিত ওয়ার্ডে রূপান্তরিত করতে প্রথমেই সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দূর করব।
এখানকার অবৈধ দখল, মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিসহ নানা প্রতিবন্ধকতা শক্ত হাতে দমন করব।
আমিনুল ইসলাম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ডিএসসিসির অনুন্নত এ ওয়ার্ডটিতে আজও নাগরিক অধিকার ও সেবা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
আমি নির্বাচিত হলে প্রথমেই এলাকার নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সেবাগুলো নিশ্চিত করব। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, সড়ক বাতি ও সর্বত্র সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।
এছাড়া মশক নিধন, শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশের জন্য সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়তে ব্যবস্থা নেব। শক্ত হাতে এলাকার মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি দমন করে এলাকায় সুষ্ঠু-সুন্দর সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করব।
