যৌতুকের জন্য নির্যাতন
স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে যায় স্বামী, কুকুরের কামড়ে হাসপাতালে
কিশোরগঞ্জ ব্যুরো
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কিশোরগঞ্জে যৌতুকের জন্য এক নারীকে অমানুষিক নির্যাতন করে রাস্তায় ফেলে যায় স্বামী। অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন ওই গৃহবধূ। তখন পথের কুকুর কামড়ে রক্তাক্ত করে তাকে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
২৬ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের চৌধুরীহাঁটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার কিশোরগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারীর মা। এতে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী মো. শহীদ মিয়া, শ্বশুর সাবান মিয়া ও শাশুড়ি মঞ্জিলা খাতুনকে আসামি করা হয়েছে। তারা চৌধুরীহাঁটি গ্রামের বাসিন্দা। ভুক্তভোগীর বাড়িও একই গ্রামে। তিনি গৃহকর্মীর কাজ করেন।
মামলায় বলা হয়, ২০২০ সালে শহীদ মিয়ার সঙ্গে ভুক্তভোগী নারী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকেই এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য ওই নারীকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশও হয়। ২৬ নভেম্বর ওই নারীর কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করেন স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি। টাকা দিতে রাজি না হলে তার ওপর নেমে আসে বর্বরোচিত নির্যাতন। বাঁশ ও এসএস পাইপ দিয়ে তাকে বেধড়ক পেটান স্বামী শহীদ মিয়া। একপর্যায়ে ওই নারী অচেতন হয়ে পড়লে তাকে বাড়ির পাশে সামনের সড়কে ফেলে দিয়ে আসেন অভিযুক্তরা। এ সময় কুকুর ওই নারীকে কামড়ে রক্তাক্ত করে। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ভুক্তভোগীর মা বলেন, আমার মেয়েকে মেরে কোমরের হাড় ভেঙে ফেলেছে তারা। এমন অবস্থা করেও তারা শান্ত হয়নি। আমাদের রাস্তাঘাটে পেলে মারধরের হুমকি দিচ্ছে। তাই আতঙ্কে আছি। গরিব মানুষ বলে কী বিচার পাব না? কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাজরীন তৈয়ব বলেন, কোমরে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ওই নারী। এছাড়া কুকুরও কামড় দিয়েছিল তাকে। বর্তমানে তার অবস্থা উন্নতির দিকে।
অভিযুক্ত স্বামী মো. শহীদ মিয়া বলেন, আমি তাকে মেরেছি, কিন্তু এসএস পাইপ দিয়ে মারিনি। আমি তাকে রাস্তায়ও ফেলে আসিনি। আমার স্ত্রী ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি থেকে নিজেই চলে যায়। আমাদের নামে যেসব বলা হয়েছে, সব মিথ্যা। বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহাদাত হোসেন মামুন বলেন, বাদীর জবানবন্দি নিয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আদালতের আদেশ এখনো হাতে আসেনি। পেলেই তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করব।
