Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

জামায়াতে যোগ দিলেন মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাবেক এমপি ও মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিয়েছেন। শনিবার সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে তিনি যোগদান করেন।

সাক্ষাৎকালে আমিরে জামায়াতের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান দলের নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্যের ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগদান করেন। তিনি ইসলাম ও ইসলামি মূল্যবোধ, দেশের স্বার্থ এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অবশিষ্ট জীবন অতিবাহিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি তিনি জামায়াতে ইসলামীর নিয়ম-নীতি, আদর্শ, দলীয় শৃঙ্খলা ও আনুগত্যের প্রতি অনুগত থাকার অঙ্গীকার করেন। ডা. শফিকুর রহমান এ সময় তাকে আন্তরিকভাবে আলিঙ্গন করেন এবং দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করেন। এ অনুষ্ঠানে দলের সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান একজন মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মনোনয়নে দুবার কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এদিকে কিশোরগঞ্জ ব্যুরো জানায়, মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামানের ডাকনাম রঞ্জন। তৃতীয়বারের মতো তার দলবদলের ঘটনা এখন ‘টক অব দ্য কিশোরগঞ্জ’। অবস্থা এ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে, এ বিষয়ে তার নির্বাচনি এলাকা ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল রহমান কাঞ্চনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মেজর রঞ্জন এখন পচা মাল’ তাকে নিয়ে কথা বললেও দুর্গন্ধ ছড়াবে।

জানা গেছে, মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান ১৯৯০ সালের দিকে জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগদান করেন। তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসাবে তদানীন্তন কিশোরগঞ্জ-১ (কটিয়াদী) আসন থেকে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থি বক্তব্য বা আচরণের কারণে তিনি পাঁচবার বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তিনি বহিষ্কৃত হন।

জামায়াতে যোগদানের কারণ জানালেন আখতারুজ্জামান : জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেওয়ার কারণ সম্পর্কে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে, জামায়াতের বিরুদ্ধে নয়। জামায়াত তো দেশদ্রোহী কোনো দল নয়; একটি দেশপ্রেমিক দল। জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে এবং তাদের গঠনতন্ত্রেও সেটা স্পষ্টভাবে লেখা আছে। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের রোষানলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে জামায়াত। তাদের নেতাদের ফাঁসিতেও ঝুলিয়েছেন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, বিএনপি যেমন নির্যাতিত হয়েছে, নিপীড়ন ভোগ করেছে, মার খেয়েছে, মামলা-মোকদ্দমা খেয়েছে; অনুরূপভাবে জামায়াতও নির্যাতিত, নিষ্পেষিত হয়েছে।

আখতারুজ্জামান বলেন, ৫ আগস্টের পরে এখন যেখানে ফ্যাসিস্টবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে চলার কথা, ঐক্যের রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা; সেখানে বিভক্তির রাজনীতির সূচনা করল বিএনপি।

তিনি বলেন, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছে, ভালো কথা। আমিও তো মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু আমরা তো একাত্তর সালে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি, জামায়াতের সঙ্গে তো নয়। তা হলে এখন এসব নিয়ে কেন ঝগড়াঝাঁটি। আমার প্রশ্ন, আপনি (বিএনপি) কাদের স্বার্থে এখন জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলছেন?

আখতারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপির নেতারা এত পাগল হয়ে যান কেন, আমি তা বুঝতে পারি না।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম