Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

আতঙ্কিত নগরবাসী

খুলনায় ধরা পড়ছে না রাজনৈতিক হত্যাকারী

Icon

নূর ইসলাম রকি, খুলনা

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশায় গুলি ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয় দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান মোল্লাকে। গুলি করার তিন দিন পর মারা যান ৩০নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আমির হোসেন বোয়িং। এভাবে ১৩ মাসে খুলনা মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রায় অর্ধশত হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আলোচিত এসব হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ধরতে পারছে না পুলিশ। পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তা খুলনার রাজনৈতিক নেতাদের ভাবিয়ে তুলছে। চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নগরবাসী।

২ নভেম্বর রাতে আড়ংঘাটা থানাধীন কুয়েট আইটি গেটের কাছে যোগীপোলের বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্য মামুন শেখের ভাড়া করা অফিসে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে। এসময় অফিসে থাকা শিক্ষক মো. এমদাদুল হক নিহত হন। আহত হয় মামুন শেখ ও মিজানুর রহমান। এ ঘটনার পর থেকে এলাকা ছেড়েছেন মামুন শেখ। সন্ত্রাসীদের ভয়ে থানায় মামলাও করেননি ভুক্তভোগীরা। পরবর্তীতে আড়ংঘাটা থানার এসআই দীপংকর বোস বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ভুক্তভোগীরা মামলা করতে চাননি। এলাকার কেউ তথ্যও দিচ্ছে না। সিসিটিভি ফুটেজেও তেমন কিছু উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

দৌলতপুরের যুবদল নেতা মাহবুব হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে হত্যার ঘটনায় আমরা সাতজনকে আটক করেছিলাম। এর মধ্যে রায়হান জামিন নিয়েছে। কিছু ভিডিও ফুটেজ যাচাই-বাছাই করার জন্য সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে। পরিপূর্ণভাবে হত্যার বিষয়ে উদঘাটন না হলেও আধিপত্য বিস্তার ও মাদকসংক্রান্ত কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

নগরীর টুটপাড়া তালতলা হাসপাতালের সামনে সন্ত্রাসীরা আমির বোয়িং মোল্লাকে গুলি করার চারদিন পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আবদুল্লাহ খুলনা থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এছাড়া যুবদল নেতা মানিক হাওলাদার মামলায় একজন আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এবং চার্জশিট দাখিল করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

এছাড়াও নগরীর ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম মিঠু, কৃষক দল নেতা মাফিজুর রহমান, হরিণটানার শিশুবাগান এলাকায় ছাত্রদল কর্মী সাগর মোল্লাকে ছুরিকাঘাত, খালিশপুরের নিউমার্কেট এলাকায় যুবদল নেতা মো. মাসুদ হোসেনকে কুপিয়ে জখম, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম হোসেনকে খুনের মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে।

মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা যুগান্তরকে বলেন, পুলিশের নীরবতায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে বারবার এসব নিয়ে কথা বলছি। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। পুলিশ দায়সারা কাজ করছে। আমাদের দাবি, অপরাধী যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন তাকে আটক করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) যুগান্তরকে জানান, গেল ৫ আগস্টের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা কমতে শুরু করেছে। খুলনায় প্রায় অর্ধশত হত্যা হয়েছে আগস্ট পরবর্তী সময়ে। আমরা এগুলো নিবিড়ভাবে তদন্ত করছি। রাজনৈতিক হত্যাগুলো অবশ্যই বিশেষ বিবেচনা করা হচ্ছে। দ্রুতই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম