Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ

শ্রুতিমধুর, আশাজাগানিয়াও

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ

বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেওয়া তার এই ভাষণ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। প্রধান উপদেষ্টা নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান দ্ব্যর্থহীনভাবে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, কেউ ভয় দেখিয়ে, সন্ত্রাস করে, রক্ত ঝরিয়ে এই যাত্রা থামাতে পারবে না। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নির্বাচন ঠেকাতে পরাজিত শক্তি কঠিনভাবে পরিকল্পনা করে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসীদের অপচেষ্টা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ করে দেওয়া হচ্ছে। ইনকিলাব মঞ্চের শরিফ ওসমান হাদির ওপর যে হামলা হয়েছে, তা বাংলাদেশের অস্তিত্বের ওপর আঘাত হিসাবে দেখেছেন তিনি। পরাজিত শক্তি আর কোনোদিন বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন হয়ে গেলে ফ্যাসিবাদী শক্তির বন্ধুরাও তাদের প্রতি সমর্থন জোগাতে বেকায়দায় পড়বে। প্রধান উপদেষ্টা তার মত ব্যক্ত করেছেন, যারা ভোটের বাক্স ডাকাতি করবে, তারা মানুষের স্বাধীনতা হরণকারী এবং জাতির শত্রু। গণভোটে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নির্মাণে জনগণের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বর্তমান সরকার তফসিল ঘোষিত হওয়া আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর। স্মরণ করা যেতে পারে, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে অনেক আগেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় তিনি উদ্যোগী হয়েছেন। শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় অনেকেই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে সেই শঙ্কা দূর করতে সচেষ্ট হয়েছেন এবং সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করছে, নির্বাচন সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এর কোনো বিকল্পও নেই অবশ্য। সংস্কার প্রস্তাবগুলো যেহেতু ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে, ফ্যাসিবাদী অপরাধীদের বিচারকার্য চলমান রয়েছে, তাই নির্বাচনের ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়। চ্যালেঞ্জ যা, তা হলো নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলা। প্রধান উপদেষ্টার আশঙ্কা অমূলক নয় যে, পরাজিত শক্তি নির্বাচন বানচাল করার অপচেষ্টা করবে। এ লক্ষ্যে তারা অপকর্ম চালানোর চেষ্টা করবে, এ ব্যাপারেও কোনো সন্দেহ নেই। তাই সরকারের উচিত হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো। আর কোনো টার্গেটেড আক্রমণ যেন না হয়, সেদিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। নিজেদের মধ্যে অনৈক্য যে একসময় বিপদ ডেকে আনতে পারে, এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে অবশ্যই। গাছাড়া ভাব দিয়ে নাশকতা ঠেকানো যাবে না। এ ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল, সর্বোপরি ভোটার শ্রেণির দায়িত্ব অপরিসীম। জনগণের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হলে কোনো অপশক্তিই নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম