কমিশন চাঁদাবাজিতে সবজি বাজারে আগুন
প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে সবজি। খুচরা বাজারে যেন ‘আগুন’ লেগেছে। হাত দেওয়ার উপায় নেই। মূলত চাঁদাবাজি ও কমিশন বাণিজ্যের কারণেই সবজির দাম টালমাটাল। কৃষক থেকে ভোক্তার কাছে সবজি আসতে দুই থেকে তিনগুণ দাম বেড়ে যায়। সমস্যা চিহ্নিত হলেও সমাধানে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। উলটো বাজার অব্যবস্থাপনায় মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্যের সঙ্গে চাঁদাবাজির ধরন পালটাচ্ছে। গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর এই চাঁদা তোলার ক্ষেত্র শুধু হাতবদল হয়েছে। সেই সঙ্গে পাইকারি আড়তে অবৈধ ‘কমিশন বাণিজ্য’ আগের মতোই চলছে পুরোদমে। সবমিলিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানী ঢাকায় আসতে ট্রাক ভাড়ার সঙ্গে চার স্থানে চাঁদা দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষক পর্যায় থেকে ক্রেতা পর্যন্ত সবজি আসতে পাঁচ হাত বদল হচ্ছে। এতে প্রতি ধাপেই বাড়ছে দাম। এ পরিস্থিতিতে কৃষকের প্রতি কেজি ৪০-১৫ টাকার বেগুন ক্রেতাকে ১২০-১৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। অন্যান্য সবজিরও একই অবস্থা। এতে একজন কৃষক তার প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাচ্ছেন না। পাশাপাশি অতিরিক্ত দামে সবজি কিনে ঠকছেন ভোক্তারা। আর পকেট ভারী করছেন মধ্যস্বত্বভোগী। যুগান্তরের নিজস্ব অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এদিকে সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সবজির দাম বিষয়ক প্রতিবেদনেও এমন তথ্যের উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি সরকারের সংশ্লিষ্টরা সবজির দাম বৃদ্ধির পেছনে পরিবহণ চাঁদাবাজি ও মধ্যস্বত্বভোগীসহ অনেক সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। তবে বছরের পর বছর এমন চিত্র দেখা গেলেও তদারকি সংস্থা প্রায় নির্বিকার। তারা সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে একদিকে পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ভোক্তার কাঁধে চাপছে বাড়তি মূল্যের বোঝা। যা একদিকে ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির হার বাড়িয়ে দিচ্ছে।
যুগান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পণ্য উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা পর্যায়ে আসতে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোতে হচ্ছে। এর মধ্যে আছে-কৃষক, স্থানীয় ব্যবসায়ী, ব্যাপারি, কমিশন বিক্রেতা, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী। প্রতিটি ধাপেই সবজির মূল্য বেড়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে আছে নামে-বেনামে চাঁদাবাজি। পাশাপাশি পাইকারি আড়তে সরাসরি পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। কমিশন বাণিজ্যে পণ্য খালাস করতে হচ্ছে। এসব কিছু যোগ করে সবজির দাম নির্ধারণ হচ্ছে। এর সঙ্গে লাভ যোগ করে খুচরা বিক্রেতা ভোক্তার হাতে সবজি তুলে দিচ্ছেন।
সরেজমিন চাঁদা তোলার চিত্র : মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা। যশোরের সাতমাইল বারিনগর বাজারে উপস্থিত হলেন সবজি ব্যাপারি সিদ্দিক (ছদ্মনাম)।
বেলা সাড়ে ৩টা নাগাদ লাউ, পটোলসহ একাধিক সবজি মিলে মোট ৩ টন সবজি কিনে ট্রাকে তুলে দেন। বাজার কমিটি মনপ্রতি ৬ টাকা চাঁদা নেয়। ফলে শুরুতেই ৩ টন বা প্রায় ৮১ মন সবজিতে চাঁদা গুনতে হয় ৪৮০ টাকা। এরপর বিকাল ৫টা; যশোরের সাতমাইল বাড়িনগর বাজার থেকে ঢাকা মেট্রো-ড-১৪... (প্রকাশ করার না শর্তে পুরো নম্বর দেওয়া হলো না) সিরিয়ালের ওই ট্রাকে চেপে যুগান্তরের এই প্রতিবেদক হেলপারের ছদ্মবেশে ঢাকার কাওরান বাজারের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। পদ্মা সেতু পার হয়ে ধলেশ্বরী ব্রিজ দিয়ে সরাসরি কেরানীগঞ্জ আসতে বেজে যায় রাত তখন ৯টা ৫২ মিনিট। এর মধ্যে দুই সেতু টোল বাবদ ১ হাজার ৮৫০ টাকা ছাড়া সড়কে কোথাও চাঁদা দিতে হয়নি। ট্রাক কেরানীগঞ্জ কদমতলী হয়ে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু পার করে জ্যাম ঠেলে চলতে চলতে গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাত সাড়ে ১১টায় এসে পৌঁছায়। এবার ট্রাকটি জিপিও হয়ে শাহবাগ, বাংলামোটর পার হয়ে কাওরান বাজার পেট্রোবাংলা ভবনের সামনের রাস্তায় আসতেই সরব হয়ে ওঠে একাধিক যুবক। ট্রাকসংশ্লিষ্টরা ওদের নাম দিয়েছেন ‘মাস্ক বাহিনী’। এই বাহিনীর সদস্যরা ট্রাকের সামনে এসে প্রথমেই মালামাল দ্রুত সবজি আনলোড করতে বলে। পরে বের হয়ে যাওয়ার সময় টাকা রেডি রাখতে বলে। যেমন কথা তেমন কাজ। পেট্রোবাংলা ভবনের সামনে দিয়ে রাত ১১টা ৩২ মিনিটে ট্রাকটি বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন ভবনের সামনে দাঁড়ায়। শুরু হয় সবজি নামানোর কাজ। দেড় ঘণ্টা ধরে সবজি নামানোর পর ঝাড়ুদার ও লেবারদের খরচ এবং সিটি করপোরেশনের কথা বলে ২০০ টাকা করে মোট ৬০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এক প্রকার জোর করেইে এই টাকা নেওয়া হয়। এই টাকা দিয়ে আবার পেট্রোবাংলা ভবনের সামনে আসতেই একজন যুবক ট্রাক থামিয়ে ৭০০ টাকা চাঁদা আদায় করে। এরপর ট্রাকটি যাওয়ার অনুমতি মেলে। এভাবে ‘যশোর টু কাওরান বাজার’ সবজি ট্রাকে চাঁদাবাজির প্রকৃত চিত্র উঠে আসে। হিসাব করে দেখা হয়, যশোর থেকে কাওরান বাজার আসার পথে প্রায় ১৮৮ কিলোমিটার রাস্তায় মোট চাঁদা দিতে হয় ১৭৮০ টাকা। সেক্ষেত্রে তিন টনের ট্রাক ভাড়া ১৬ হাজার টাকার সঙ্গে চাঁদার ১৭৮০ টাকা যোগ করলে রাস্তায় খরচ হয় মোট ১৭ হাজার ৭৮০ টাকা।
ট্রাক ড্রাইভার শরিফ (ছদ্মনাম) যুগান্তরকে আরও কিছু ভয়াবহ তথ্য দেন। তিনি বলেন, যশোর থেকে প্রতিদিন কাঁচা মালবাহী প্রায় ২০০ ট্রাক যাওয়া-আসা করে। সেই মাস্ক বাহিনীতে চাঁদা না দিলে গাড়ির ১৫-২০ হাজার টাকার সামনের গ্লাস ও লুকিং গ্লাস ভেঙে দেয়। গায়ে হাত তোলে। কিছুই করার থাকে না। তিনি আরও বলেন, এই রুট ছাড়াও পোস্তাগোলা ব্রিজ থেকে নামার পর ২০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। এটার কোনো রসিদ নেই। এখান থেকে যেতে না যেতেই দয়াগঞ্জের মোড়ে ১০০-৩০০ টাকা দিতে হয়। এরপর ডেমরা ফ্লাইওভারের সামনে গেলে চাঁদাবাজদের দিতে হয় ২০০-৬০০ টাকা। কাজলা-চিটাগাং রোডেও একই অবস্থা। সবই হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে দিয়ে। পুলিশের গাড়ি সামনেই দাঁড়ানো থাকে, কিন্তু তারা কিছুই বলে না।
তিনি বলেন, আগে চাঁদাবাজরা নামে-বেনামে সংগঠনের টোকেনে চাঁদা নিত। ৫ আগস্টের পর টোকেন দিচ্ছে না। ভিক্ষুকের মতো হাত বাড়িয়ে টাকা নিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চাঁদা নিচ্ছে না। আগে লাইসেন্স নং ০১৫৫৬৮ সূচনা ট্রান্সপোর্টের একটি কার্ড এক মাসের জন্য ১৫০০ টাকা করে কিনে নিতে হতো। এই এক মাস মেয়াদের কার্ড সঙ্গে থাকলে সমগ্র বাংলাদেশের যে কোনো রাস্তায় পুলিশ ট্রাক থামালেও মামলা দিত না। এখন শুধু কাগজ ঠিক না থাকলে ২০০-৫০০ টাকা চাঁদা নিচ্ছে।
অন্যদিকে বগুড়ার মহাস্থান হাটের ব্যাপারি মোকছেদ আলী, সিরাজুল ইসলাম, মোস্তাফিজার রহমান প্রায় অভিন্ন তথ্য দিয়ে যুগান্তরকে জানান, তারা বাজারের পাইকারি ক্রেতাদের কাছে কাঁচা শাকসবজি কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন মোকামে পাঠানোর জন্য ট্রাকে লোড দেন। মোকামে পৌঁছাতে ২২ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা ভাড়া লাগে। তারা আরও বলেন, পথে বিভিন্ন জেলায় ট্রাফিক ও শ্রমিক সংগঠন, পৌরসভাসহ বিভিন্ন খাতে প্রতি ট্রাকে ৮০০ থেকে হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। ট্রাকের চালকরা এ চাঁদা দিয়ে থাকেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যশোরের সাতমাইল বারিনগর বাজারে কৃষক প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন ১২৫ টাকায়। সেখান থেকে ব্যাপারিরা এই পণ্য ঢাকার কাওরান বাজারে ১৩০ টাকায় বিক্রি করছে। আড়তে কমিশন বাণিজ্যের নামে ফড়িয়া যাদের কোনো ট্রেড লাইসেন্স নেই এমন মধ্যস্বত্বভোগী ব্যাপারিদের কাছ থেকে নিয়ে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ পাইকারদের কাছে বিক্রি করছে ২০০ টাকায়। এখানেই পণ্যের দাম দ্বিগুণ করে তুলছে সেই কমিশন বিক্রেতারা। পরে পাইকারি বিক্রেতারা বিক্রি করছে ২১০-২২০ টাকা। যা খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাদের ২৪০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। পাশাপাশি বগুড়ায় কৃষক পর্যায় থেকে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যাপারিরা ঢাকায় এনে বিক্রি করছেন ৪৫-৫৬ টাকা। কমিশন বাণিজ্যের নাম করে ফড়িয়া বিক্রেতারা সেই ঢ্যাঁড়শ ৫৫-৬৫ টাকায় বিক্রি করছে পাইকারদের কাছে। পাইকারি বিক্রেতারা আবার খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে ৭০-৮০ টাকা। আর খুচরা বিক্রেতারা ক্রেতার কাছে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়শ বিক্রি করছে ৮৫-৯০ টাকা। কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে এই বেগুন ক্রেতার ১২০-১৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। মাঝে হাতবদল হয়েছে আরও তিনবার। এর মধ্যে ব্যাপারিরা বিক্রি করেছে ৪৫-৫০ টাকা। কমিশন বিক্রেতারা বিক্রি করেছে ৫০-৭০ টাকা। পাইকারি বিক্রেতারা বিক্রি করেছে ৯০-১০০ টাকা।
পাশাপাশি কৃষক পর্যায় থেকে প্রতি কেজি পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা। ব্যাপারিরা বিক্রি করছে ৪৫-৫০ টাকা। কমিশন বিক্রেতারা অধিক লাভ রেখে বিক্রি করছে ৫৫-৬৫ টাকা। পাইকারি বিক্রেতারা বিক্রি করেছে ৭০-৮০ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে এই পটোল প্রতি কেজি কিনতে ক্রেতার ৮০-৯০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকের ৬০-৬৫ টাকা বিক্রি করলা ক্রেতার ১০০-১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। কৃষকের ৪০ টাকা কেজির ধুন্দল ভোক্তা খাচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। চাষির ৫০ টাকা কেজি দরের শসা ক্রেতার ৮০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ কৃষক ৩৫-৪০ টাকা বিক্রি করলেও ক্রেতার ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উল্লিখিত সবজির যৌক্তিক মূল্যের তালিকায় বলা হয়েছে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি বেগুন যৌক্তিক মূল্য হওয়ার কথা ৬০-৯০ টাকা। প্রতি কেজি পটোলের যৌক্তিক মূল্য দেওয়া আছে ৬০-৭০ টাকা। পাশাপাশি সংস্থাটি বলছে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচের পর্যায়ে যৌক্তিক মূল্য হওয়ার কথা ১৪০-১৮০ টাকা। ঢ্যাঁড়শের যৌক্তিক মূল্য কেজিপ্রতি ৬০-৮০ টাকা, করলা ৮০-১০০, ধুন্দল ৬০-৮০, শসার যৌক্তিক মূল্য দেওয়া হয়েছে ৪০-৮০ টাকা। এছাড়া ঝিঙ্গা প্রতি কেজি খুচরা পর্যায়ে যৌক্তিক মূল্য দেওয়া হয়েছে ৬০-৯০ টাকা।
রাজধানীর নয়াবাজারে সবজি কিনতে আসা মো. আমিনুল হক যুগান্তরকে বলেন, খুচরা বাজারে সবজির ব্যাপক সরবরাহ আছে। তবে দাম অনেক বেশি। বিক্রেতারা দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বলছেন সরবরাহ কম। বৃষ্টিতে সবজি নষ্ট হয়েছে। কিন্তু বাজারে সরবরাহ দেখে তেমনটা মনে হচ্ছে না। বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। বাজারে একাধিক সবজির কেজি ১০০ টাকার উপরে। কিছু সবজি ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে।
এদিকে সরেজমিন দেখা গেছে, যশোরের সাতমাইল বারিনগর বাজারে সবজি বিক্রি করতে এসেছেন কৃষক মো. আমিনুল ইসলাম, তিনি যুগান্তরকে বলেন, টেলিভিশনে দেখি ঢাকায় সবজির দামে আগুন। কিন্তু আমার যে দামে সবজি বিক্রি করছি, ক্রেতারা তা কয়েকগুণ বেশি দামে কিনছেন। যদিও আগের তুলনায় এবার আমাদের সবজির দাম কিছুটা ভালো। কিন্তু ঢাকায় সবজির দাম এত বেশি হওয়ার ন্যূনতম কোনো কারণ নেই।
যশোরের সবজি ব্যবসায়ী মো. আতিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমাদের কাছ থেকে ফড়িয়া ও কমিশন বিক্রেতারা সবজি নিয়ে অধিক লাভে বিক্রি করছে। যা থাকার কথা না। আমরা কৃষক থেকে সবজি নিয়ে সরাসরি পাইকারদের কাছে বিক্রি করতে পারলে সবজির দাম এত বেশি হতো না।
বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়তদার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান মাস্টার যুগান্তরকে বলেন, কৃষক পর্যায় থেকে খুচরা বাজারে দামের ব্যবধান অনেক বেশি। এজন্য চাঁদাবাজি ও ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা দায়ী। তিনি জানান, আগে কারা চাঁদা নিত তা সবার জানা, এখন তাদের মাধ্যমে হাতবদল হয়েছে। ফলে সেই আগের নিয়মেই পণ্যের দাম বাড়ছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় মধ্যস্বত্বভোগীরা অতি মুনাফা লুটছে। যদি কৃষক পর্যায় থেকে সরাসরি পাইকারি ও খুচরা বাজারে পণ্য বিক্রির উপায় থাকত, তবে মধ্যস্বত্বভোগীরা অতি মুনাফা করতে পারত না। পাশাপাশি চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার বলেন, আড়তদাররা পাকা ক্যাশমেমো দেন না, এ কারণে ব্যাবসায়ীরা অসৎভাবে মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে অসঙ্গতি পেলেই জরিমানার সঙ্গে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হচ্ছে।
( প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছে যশোর ও বগুড়া ব্যুরো)

