Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

হেসেখেলে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

Icon

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হেসেখেলে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

যাহা বাহান্ন তাহাই তিপ্পান্ন। দুই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং ও হারার ধরনকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করলে অতিশয়োক্তি হবে না। প্রথম ওয়ানডের জেরক্স কপি যেন দ্বিতীয় ম্যাচ।ক্যারিবীয়দের সামান্য উন্নতি। ঈষৎ উন্নতি বাংলাদেশেরও। দুদিন আগে উইন্ডিজকে ১২২ রানে থামিয়ে বাংলাদেশ জিতেছিল ছয় উইকেটে। শুক্রবার মিরপুরে অতিথিরা ১৪৮ অবধি পৌঁছল। স্বাগতিকদের জয় সাত উইকেটে। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ জিতেছিল ৯৭ বল বাকি থাকতে। দ্বিতীয়টি জিতল ১০০ বল হাতে রেখে। প্রথম ম্যাচে তামিম ইকবাল ছয় রানের জন্য ফিফটির ট্রেন মিস করেছিলেন। কাল সেই ভুল আর করেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। মিল আরও রয়েছে। প্রথম ওডিআইতে সাকিব আল হাসান আট রানে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা। দ্বিতীয় ম্যাচে মেহেদী হাসান মিরাজও চার উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ।

এই সিরিজে এক চিত্রনাট্য দিয়ে এভাবেই নির্মাণ করা যায় শেষ ওডিআইও। যেটি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে সোমবার। তার আগে ঢাকায় ২-০তে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশ নিজেদের করে নিয়েছে অনুমিতভাবেই। চট্টগ্রামে শেষ ওডিআইয়ে ফলাফল উলটো হলে সেটাই হবে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে দল নিয়ে এসেছে, তাদের কাছ থেকে এমন নিষ্প্রাণ ক্রিকেটই প্রত্যাশিত। ক্লাসের সবচেয়ে নির্বোধ শিক্ষার্থীর মতো পরীক্ষার পর পরীক্ষায় এমন ফলই করে যাবে তারা। সিরিজের ফয়সালা হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামে শেষ ম্যাচে দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে বাংলাদেশ। বেঞ্চের খেলোয়াড়দের দেখে নিতে চান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এদিকে সিরিজ জেতায় জাতীয় দলকে কাল অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অভিনন্দন বার্তায় ক্রিকেটপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী দল ও বোর্ডের সবাইকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ দলের এই জয়ের ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

মিরপুরের একই উইকেটে খেলা, এবার টস জিতলেও সেই ছন্নছাড়া ব্যাটিং। ৪৩.৪ ওভারে ১৪৮ রানে অলআউট উইন্ডিজ। জবাবে লিটন দাসের আগ্রাসি শুরুর পর সিরিজে তামিম ইকবালের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি (৫০)। এরপর সাকিব আল হাসানের অপরাজিত ৪৩ রানে ১০০ বল হাতে রেখেই সাত উইকেটের জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটি টাইগারদের টানা তৃতীয় সিরিজ জয়। র‌্যাংকিং ছাপিয়ে এখন আলোচনা আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগ নিয়ে। টানা দুই জয়ে বাংলাদেশের পয়েন্ট ২০। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের পর বাংলাদেশের অবস্থান তিনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ দশ ম্যাচে এটি বাংলাদেশের নবম জয়।

১৪৯ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়ায় কখনোই তেমন বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে। শুরুতে ছন্দে ফেরার আভাস দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন লিটন দাস। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তাকে ফেরান আকিল হোসেন। ২৪ বলে চার চারে লিটন করেন ২২ রান। সাকিবের জায়গায় ওয়ানডাউনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন বেশ আক্রমণাত্মক। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। আগের ওভারে জেসন মোহাম্মেদের বলে লং অনে ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান। এক ওভার পর সেই জেসনের বলেই ক্যাচ দিয়ে ১৭ রানে ফেরেন। আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি মিস করলেও এদিন ভুল করেননি তামিম। পেয়ে যান ক্যারিয়ারের ৪৮তম ওয়ানডে ফিফটি। ঠিক ৫০ রানেই আউট হয়েছেন তামিম। এরপর মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে ৫০ বলে অপরাজিত ৪৩ করে দলকে জিতিয়ে ফেরেন সাকিব।

এর আগে ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ২৫ রানে চার উইকেট নিয়ে উইন্ডিজকে গুঁড়িয়ে দেন ম্যাচসেরা মিরাজ। তার আগের সেরা ছিল এই ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ২৯ রানে চার উইকেট। সিরিজ শুরুর আগে মিরাজ একাদশে ঠাঁই পাবেন কি না, তা নিয়ে জোর আলোচনা চলেছে। বেশ কিছুদিন ধরে শুরুর সেই ফর্ম ছিল না তার। সময়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে গেছেন আরেক অফ-স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসানও। সাম্প্রতিক ফর্ম, আগ্রাসি ব্যাটিংয়ের জন্য মেহেদী হাসানকে অনেকে এগিয়ে রাখছিলেন। টিম ম্যানেজমেন্ট মিরাজেই আস্থা রেখেছেন। প্রথম ম্যাচে ভালো বোলিংয়ে নিয়েছিলেন এক উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে করলেন বাজিমাত। মিরাজ-ঝলকের আগে শুরুটা দুর্দান্ত করেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম ওভারে এক রান, দ্বিতীয় ওভার মেডেন। তৃতীয় ওভারে পেয়ে যান সুনীল আমব্রিসের উইকেট। পেয়ে যান আরেকটি মেডেনও। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে আসেন অধিনায়ক। দশ ওভারে ক্যারিবীয়রা তুলতে পারে মাত্র ২২ রান। অভিষেকে দারুণ বোলিংয়ে তিন উইকেট পাওয়া হাসান মাহমুদের ওপর চড়াও ছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা। এর মাঝে নিজের তৃতীয় ওভারে জোড়া আঘাত আনেন মিরাজ। প্রথম বলেই কেজর্ন ওটলেকে তামিমের ক্যাচ বানান। এরপর চতুর্থ বলে জশুয়া দ্য সিলভাকে সরাসরি বোল্ড করেন। পরের ওভারে এসে আন্দ্রে ম্যাকার্থিকে তুলে নেন সাকিব। ১৫ থেকে ২০ ওভারে মাত্র ১০ রান নিতে পারে সফরকারীরা। ৪১ রানে পাঁচ ও ৮৮ রানে আট উইকেট হারানো উইন্ডিজ যা একটু লড়াই করেছে শেষ দুই উইকেটে। নবম উইকেটে ৩২ এবং দশম উইকেটে ২৮ রান করে তারা। সর্বোচ্চ ৪১ রান করা রভম্যান পাওয়েলকে তুলে নিয়ে ক্যারিবীয়দের অলআউট করেন মিরাজ। প্রথম স্পেলে চার ওভারে দুই মেডেনে মাত্র দুই রান দিয়ে এক উইকেট নেওয়া মোস্তাফিজ দ্বিতীয় স্পেলেও ভালো করেছেন। শেষ স্পেলে চার ওভারে ১৩ রান দিয়ে তুলে নেন আরও একটি উইকেট। সাকিব ৩০ রানে নেন দুটি উইকেট, হাসান মাহমুদের উইকেট একটি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম