সাক্ষাৎকার: আখতার হোসেন
কাজের ভিত্তিতে সময় পাবে বর্তমান সরকার
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন চায় এনসিপি * আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত; এক্ষেত্রে সবার ঐকমত্য প্রয়োজন * বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগের চোখ দিয়ে দেখার নীতি ভারতকে বদলাতে হবে * আওয়ামী বয়ানের মধ্য দিয়ে ৭১-এর গৌরবকে আসলে দুর্বিষহভাবে ক্ষুণ্ন্ন করা হয়েছে
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পতিত স্বৈরাচারের বিচার এবং সংস্কারের যে উদ্যোগুলো আছে, সেগুলো দৃশ্যমান করতে যতটুকু সময় প্রয়োজন অন্তর্বর্তী সরকার সে সময়টুকু পেতে পারে। অর্থাৎ কাজের ভিত্তিতে সময় পাবে বর্তমান সরকার। এর বাইরে কোনোভাবেই কালবিলম্বের সুযোগ নেই। যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন। রক্তাক্ত জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় সাধারণ ছাত্র-জনতার সম্মিলনে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক দলটির এই নেতা আরও বলেন, তাদের প্রত্যাশা-প্রতিবেশী ভারত, চীন, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অপরাপর দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে একটি মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠুক। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখার নীতি ভারতকে বদলাতে হবে। ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও ৫২ বা ৪০-এর পাকিস্তান আন্দোলনসহ প্রতিটি সংগ্রামের ফিরিস্তি প্রবলভাবে হৃদয়ে ধারণ করেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ২৪-এর যে গণ-অভ্যুত্থান, সেটিকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে চান। বুধবার এনসিপির প্রধান কার্যালয়ে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে নবগঠিত দলের আয়-ব্যয়, অভ্যন্তরীণ নানা সংকট, নেতাদের বিলাসী জীবন, চাঁদাবাজির অভিযোগ, সংস্কার, নির্বাচন এবং দলটির আদর্শসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন আখতার হোসেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিশেষ প্রতিনিধি তোহুর আহমদ। সঙ্গে ছিলেন শহর প্রতিনিধি নাজমুল হক।
যুগান্তর : আপনারা নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। বিদ্যমান দলগুলোর সঙ্গে আপনাদের পার্থক্য কি?
আখতার হোসেন : আপনারা জানেন, ২৪-এর অভ্যুত্থানের অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়েই জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অল্প কিছুদিন আগে আত্মপ্রকাশ করেছে। তারুণ্যের কারণে শুরুতেই একটি আলাদা মাত্রা নিয়ে দলের যাত্রা। এর বাইরে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা এবং আগের পেশিশক্তি নির্ভর রাজনীতি থেকে একটা নীতিনির্ভর রাজনীতিতে উত্তরণ এনসিপির আগ্রহের অন্যতম কেন্দ্র।
যুগান্তর : চারদিক থেকে নির্বাচনের দাবি উঠছে। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বচনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আপনাদের প্রস্তুতি কি?
আখতার হোসেন : দল গঠনের পর আমরা খুবই কম সময় পেয়েছি। ২ মাসেরও কম। আমরা জোরকদমে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সারা দেশের জেলা, মহানগর এবং থানা কমিটিগুলো গঠনের ব্যাপারে আমাদের সংগঠকরা কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা আশাবাদী যে আসন্ন নির্বাচনের আগেই নিবন্ধনের জন্য যে শর্তগুলো রয়েছে তা আমরা পূরণ করতে পারব।
যুগান্তর : আপনি বলতে চাচ্ছেন নির্বাচনে অংশ নিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
আখতার হোসেন : অবশ্যই। তবে আমাদের দাবির জায়গাটা হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন।
যুগান্তর : গণপরিষদ নির্বাচন, ৭১, সংবিধান ইত্যাদি নিয়ে কথা বলছেন। আপনাদের দলীয় আদর্শ কি।
আখতার হোসেন : বিদ্যমান সমাজ বাস্তবতায় ডানপন্থি অথবা বামপন্থি রাজনীতির যে ধারা আছে, সেদিকে নয়। আমরা বাংলাদেশে একটা মধম্যপন্থি রাজনীতির কথা বলছি। এছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাসের যে পাটাতন এবং সংগ্রামের ফিরিস্তিগুলো আছে-যেমন ৪০-এর পাকিস্তান বা ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান। আমরা এর সবকিছুকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে উত্তরণের একটি জার্নি হিসাবে দেখি।
যুগান্তর : আপনাদের বেশ কিছু দাবি যেমন পুরোনো সংবিধান ছুড়ে ফেলা ইত্যাদি কারণে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখছেন অনেকে।
আখতার হোসেন : মুক্তিযুদ্ধ যেমন আমাদের জাতিকে একত্রিত করেছিল চব্বিশেও কিন্তু ঠিক তাই। তবে ৭১-এর চেতনা কিন্তু ৭২-এর সংবিধানে বাস্তবায়িত হয়নি। এ কারণেই আমরা একটা নতুন সংবিধানের কথা বলছি। যাতে ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী কাঠামোর উত্থান ঘটানোর ক্ষেত্রে দেশের সংবিধান শক্ত প্রতিবন্ধক হতে পারে।
যুগান্তর : ৭১-এর চেতনা নিয়ে তাহলে বিতর্ক হচ্ছে কেন?
আখতার হোসেন : মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ৭১ নিয়ে এতদিন যে আওয়ামী ন্যারেটিভ চলে এসেছে আমরা সে জায়গায় নিজেদের পর্যবসিত করতে চাই না। আওয়ামী লীগের চোখ দিয়ে নয়, আমরা ৭১ কে সাধারণ জনতার চোখ দিয়ে দেখতে চাই। আওয়ামী বয়ানের মধ্য দিয়ে ৭১-এর গৌরবকে আসলে দুর্বিষহভাবে ক্ষুণ্ন্ন করা হয়েছে।
যুগান্তর : বর্তমান সরকারের মেয়াদকাল নিয়ে এনসিপির ভাবনা কি?
আখতার হোসেন : গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। ফলে আমরা মনে করি যে পতিত স্বৈরাচারের বিচার এবং সংস্কারের যে উদ্যোগগুলো আছে সেগুলো দৃশ্যমান করতে যতটুকু সময় প্রয়োজন সেটুকু সময় বর্তমান সরকার পেতে পারে। অর্থাৎ সরকার সময় পাবে তার কাজের ভিত্তিতে। এর বাইরে কোনোভাবেই তাদের কালবিলম্বের সুযোগ নেই।
যুগান্তর : আগামী নির্বাচনে অংশ নিলে আপনারা এককভাবে প্রার্থী দেবেন নাকি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবেন?
আখতার হোসেন : দলীয় আদর্শ এবং নীতিনির্ধারণী বিষয়ে মিলের জায়গা থেকে নির্বাচনি জোট হলেও হতে পারে। তবে এই মুহূর্তে স্বাতন্ত্র্য ধরে রেখে সংগঠনিক তৎপরতা এবং দলের পরিধি বিস্তৃতির দিকেই আমরা বেশি মনোযোগী।
যুগান্তর : আপনাদের আন্দোলন তো কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না। এটা একটা চাকরিতে প্রবেশে বৈষম্য বা কোটাবিরোধী আন্দোলন ছিল। পরে আপনারা দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলেন। আপনাদের অনেকেই সেভাবে পেশায় ঢোকেননি। তাহলে ভবিষ্যতে ফুলটাইম রাজনীতিই কি আপনাদের পেশা হতে যাচ্ছে।
আখতার হোসেন : এখন এনসিপিতে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই ছাত্রত্ব শেষ করে পেশা জীবনে প্রবেশ করেছেন। অনেকে নিজেদের মতো করে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। নেতৃত্বের মধ্যে স্বল্পসংখ্যক যারা এখনো পেশা জীবনে প্রবেশ করেননি। অচিরেই তারা হয়তো সেটা করবেন। বৈধ উপায়ে জীবিকা নির্বাহের অবলম্বন তারা নিজেরাই খুঁজে নেবেন।
যুগান্তর : অনেক রাজনৈতিক দলে কিছু সংখ্যক নেতা বা নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের একটা ভাতা বা সম্মানি দেওয়ার রেওয়াজ চালু আছে। এনসিপিতেও কি এ ধরনের কোনো মডেল চালু হতে পারে।
আখতার হোসেন : এই মুহূর্তে দলের জন্য যে আর্থিক পলিসি তৈরির কাজ চলছে। সেখানে খসড়া আকারে এ বিষয়টি এসেছে। পলিসি যখন চূড়ান্ত হয়ে যাবে তখন হয়তো এটি বিস্তারিত বলা যাবে।
যুগান্তর : আপনাদের দলের গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কাজ ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে বলে আমরা শুনেছি।
আখতার হোসেন : হ্যাঁ। আমরা একটা টিমকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তারা ইতোমধ্যে একটি খসড়া দাঁড় করাতে পেরেছেন। এখন সেটি নিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। সামনের কোনো একটা সাধারণ সভায় এই খসড়া উত্থাপন করা হবে।
যুগান্তর : আর্থিক অভিযোগের দায়-দায়িত্বের জায়গা থেকে ইতোমধ্যে একজন কেন্দ্রীয় নেতাকে আপনারা অব্যাহতি দিয়েছেন। কিন্তু আপনাদের মধ্যে অনেক তারকা মানের নেতাকে জড়িয়ে চারদিকে নানা কথাবার্তা চালু রয়েছে। কেউ কেউ কোটি টাকার গাড়ি নিয়ে ঘুরছেন। অনেকের বিলাসী জীবনযাপনের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আখতার হোসেন : আমাদের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যদি আর্থিক, চারিত্রিক, ফৌজদারি বা অন্য কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায় তবে সেগুলো তদন্ত করে কিভাবে নিষ্পত্তির দিকে অগ্রসর হওয়া যায় সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি দলের সাধারণ সভায় শৃঙ্খলা এবং তদন্ত কমিটি করার ব্যাপারে সদস্যরা জোর দিয়েছেন। ইতোমধ্যে কমিটিকে অভিযোগ আমলে নেওয়ার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।
যুগান্তর : একটা নবগঠিত দল হিসাবে অর্থের উৎসটা কিন্তু আপনারা সেভাবে এখনো বলেননি।
আখতার হোসেন : যথাযথ প্রক্রিয়ায় অডিটের মধ্য দিয়ে দাতাদের নাম এবং তাদের সহায়তার অর্থের পরিমাণসহ আয়-ব্যয়ের প্রতিটি খাত আমরা উল্লেখ করব। এতটুকু বলতে পারি এখন পর্যন্ত সদস্যদের চাঁদা এবং শুভার্থীদের সহায়তায় দলের আর্থিক প্রয়োজন মেটানো হচ্ছে।
যুগান্তর : একটা কথা শোনা যায় যে আপনাদের দলের যারা ডোনার বা ব্যয়ভার চালাচ্ছেন তাদের কেউ কেউ ফ্যাসিস্টের দোসর। বিশেষ করে কালোটাকার মালিকদের কেউ কেউ শেলটার পেতে আপনাদের পেছনে অর্থ ঢালছেন।
আখতার হোসেন : এটা স্পষ্ট করে বলছি যে কোনোভাবেই পতিত স্বৈরাচারের দোসর বা তাদের কোনো অংশের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশে পতিত স্বৈরাচারের পুনর্বাসনের ক্ষেত্র যাতে প্রস্তুত না হয় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যেসব অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো এখনো অভিযোগ হিসাবেই সীমাবদ্ধ।
যুগান্তর : বিদ্যমান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হতে পারে। আপনাদের নিজেদের ভেতরেও মতভিন্নতা দেখা যাচ্ছে।
আখতার হোসেন : প্রত্যেক দলের একটা নিজস্ব মতাদর্শ রয়েছে। তাই ভিন্নমত থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে আমাদের একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া আমরা বিশ্বাস করি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সম্পর্ক যেন কখনোই শত্রুতায় পর্যবসিত না হয়।
যুগান্তর : আপনাদের দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচিত। বিশেষ করে সচিবালয় অথবা বাইরে পুলিশ বা অন্য জায়গাগুলোতে তদবির বাণিজ্যেরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
আখতার হোসেন : আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে কেউ যদি চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত হন এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে। আমরা অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। কারণ আমাদের ঐকান্তিক চাওয়া হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি যেন পূর্বের মতো চাঁদাবাজি বা টেন্ডারবাজি ঘিরে আবর্তিত না হয়।
যুগান্তর : তরুণদের ভোটার করতে আপনারা ইতোমধ্যে একটি বয়স কাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছেন। অপেক্ষাকৃত তরুণদের মধ্যে আপনাদের বড় ধরনের সমর্থন বা ভোটব্যাংক রয়েছে?
আখতার হোসেন : এনসিপি তরুণদের দল। এছাড়া সময়ের ফেরে আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন তরুণদের মধ্যে বোঝাপড়াটা অনেক বেশি পরিপক্ব। ইন্টারনেটের কল্যাণে তারা রাজনীতি নিয়ে বেশ সচেতন। এছাড়া বহির্বিশ্বেও ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে বয়সের বাধা কমিয়ে আনা হচ্ছে। তবে অবশ্যই আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে এটা চূড়ান্ত হতে পারে।
যুগান্তর : বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচন করতে গেলে প্রার্থীদের বিপুল অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন হয়। ফলে নির্বাচনে গেলে আপনাদের প্রার্থীদের এত বিপুল অর্থের জোগান কোত্থেকে আসবে?
আখতার হোসেন : এই যে কালোটাকার নির্বাচনের সংস্কৃতি সেটার পরিবর্তন চাইছি। এক্ষেত্রে ভোটারদেরও দায়িত্বের জায়গা আছে। তাদেরও সচেতন হতে হবে। যেন টাকার বিনিময়ে ভোট বিক্রি না হয়। বরং যোগ্য এবং প্রতিশ্রুতিশীল নেতৃত্বের প্রতি যেন তাদের সমর্থন থাকে।
যুগান্তর : আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি করেছে এনসিপি। এ বিষয়ে আপনাদের সর্বশেষ অবস্থান কী ?
আখতার হোসেন : আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে সবার ঐকমত্য প্রয়োজন। তবে আমাদের চাওয়া হচ্ছে অন্তত দলগতভাবে আওয়ামী লীগের যাতে বিচারটা হয়। এ জন্য বিচারের আগে নিবন্ধন স্থগিত রাখা বা তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ইত্যাদি প্রয়োজন। বিশেষ করে ১৬ বছর ধরে তাদের যে ফ্যাসিবাদ, গুম, খুন এবং গণহত্যা এগুলো যাতে প্রস্তাবিত জুলাই চার্টারে প্রতিফলিত হয় সে ব্যাপারে আমরা অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি।
যুগান্তর : কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি ঐক্য দেখা না যায়। দলগুলোর প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে যদি বিচ্যুতি ঘটে?
আখতার হোসেন : জনগণ যে সব সময় রাজনৈতিক দলগুলোর মুখাপেক্ষী তা কিন্তু নয়। আপনারা দেখবেন যে, ফ্যাসিবাদের আমলে যখন দেশের সব রাজনৈতিক দল পর্যুদস্ত। আশা হারা অবস্থায় পড়েছে। তখনই আসলে ২৪-এর অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। জনগন স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসে শেখ হাসিনার অপশাসনের যবনিকাপাত ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। ফলে কোনো রাজনৈতিক শক্তির পক্ষ থেকেও যদি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের চেষ্টা দেখা যায় সেটা জনগণ কখনোই গ্রহণ করবে না।

