জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ
যানজট আর পরিবহণ সংকটে দিনভর দুর্ভোগ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জাতীয় সমাবেশকে ঘিরে শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ছিল তীব্র যানজট। সমাবেশে যোগ দিতে নেতাকর্মীদের ঢল আর বাস সংকটে নাকাল হয়ে পড়েন নগরবাসী। বিশেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী রাস্তাগুলোতে ছিল তীব্র যানজট। একই চিত্র ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও। যাত্রাবাড়ী থেকে চিটাগাং রোড, সোনারগাঁ হয়ে মদনপুর পর্যন্ত একাধিক পয়েন্টে থেমে থেমে চলেছে গাড়ি। সন্ধ্যায় সমাবেশ শেষে ফিরতেও তীব্র যানজটে লোকজন চরম ভোগান্তির শিকার হন। এদিকে সমাবেশ ঘিরে যানজট ও যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এক ফেসবুক পোস্টে সাময়িক অসুবিধার জন্য নগরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে জামায়াত।
সরেজমিন দেখা গেছে, শনিবার সকাল থেকেই ফার্মগেট, কাওরান বাজার থেকে বাংলামোটর, শাহবাগ, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান-সব পথেই গাড়ির চাকায় ছিল ধীর গতি। মেট্রোরেলেও ছিল যাত্রীদের ভয়াবহ চাপ।
যানজটে আটকে পড়া লোকজন কেউ হেঁটে, কেউবা ব্যাটারিচালিত রিকশায় গন্তব্যে গেছেন। গণপরিবহণ কম থাকায় নগরবাসীকে ঝুঁকতে দেখা গেছে রিকশা-অটোর দিকে। তবে সেগুলোও সহজলভ্য ছিল না। যেগুলো মিলছে, সেগুলোর ভাড়াও ছিল আকাশছোঁয়া। মৎস্যভবন থেকে প্রেস ক্লাব-মাত্র এক কিলোমিটার পথের জন্য রিকশাচালকরা হেঁকেছেন ১৩০ টাকা। শাহবাগ মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী আফজাল হোসেন বলেন, ঢাকা মেডিকেলে যেতে সাধারণ দিনে রিকশা ভাড়া লাগে ৩০-৪০ টাকা। আজকে বলছে ১২০ টাকা।
যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা আফরোজা চৌধুরী বলেন, মেয়েকে ডাক্তার দেখাতে পান্থপথে যেতে সময় লেগেছে ৪ ঘণ্টা। ফার্মগেটের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, রাস্তায় যত বাস, তার অর্ধেকই জামায়াতের লোকজনে ঠাসা। মাইক্রোবাসেও গাদাগাদি করে লোক যাচ্ছে।
রাজধানীর প্রবেশপথসহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশের রাস্তায় দেখা গেছে হাজার হাজার নেতাকর্মীর মিছিল। কেউ হেঁটে, কেউ রিকশায় সমাবেশস্থলে পৌঁছান। নগরীর শাহবাগ, মৎস্যভবন, পল্টন, বাংলামোটর, সায়েন্সল্যাব-প্রতিটি পয়েন্টে রিকশা-অটোর দাপট ছিল দৃশ্যমান। মৎস্যভবন মোড়ে দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবক মো. আরমান বলেন, শাহবাগ থেকে পল্টন পর্যন্ত গাড়ি চলতে পারছে না। নেতাকর্মীরা যাতে নির্বিঘ্নে যেতে পারেন, তাই রিকশাগুলোকেও আমরা সামলানোর চেষ্টা করছি। ঢাকার বাইরে থেকে আসা বাসগুলো দূরে পার্কিং করে নেতাকর্মীদের নামিয়ে দিতে দেখা যায়।
পুলিশ জানায়-যাত্রাবাড়ী, মহাখালী, পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে গাড়িগুলো রাখা হয়েছে। ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সকালে মেট্রোরেলেও জামায়াতের পতাকাধারী যাত্রীদের চাপ দেখা গেছে। প্ল্যাটফর্মজুড়ে ছিল নেতাকর্মীদের ভিড়।
সমাবেশে অংশ নিতে চাঁদপুর, কুমিল্লা, জামালপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে শত শত বাস ঢাকায় আসে। সকাল থেকেই ফ্লাইওভার ও প্রবেশপথে সৃষ্টি হয় গাড়ির দীর্ঘ সারি।
ট্রাফিক রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার কাজী রোমানা নাসরিন বলেন, রাস্তায় ডাইভারশন দিয়ে আমরা যান চলাচল সচল রাখার চেষ্টা করছি। ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে আসা শত শত বাস, মিছিলের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন অংশে জটলা তৈরি হয়েছে।
