ইসলাম বিষয়ক প্রশ্নোত্তর
হজ না করে হজের অর্থ সদকা করে দেওয়া কি জায়েজ?
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রশ্ন: আমি একজন সামর্থ্যবান মুসলমান। আমার ওপর হজ ফরজ হয়েছে। কিন্তু আমি হজ না করে সেই অর্থ গরিব মানুষের মাঝে সদকা করে দিতে চাই। এ ব্যাপারে ইসলামি শরিয়তের বক্তব্য কী?
উত্তর: হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি মৌলিক রুকন। যে মুসলমান আর্থিক ও শারীরিকভাবে হজ পালনে সক্ষম, তার ওপর হজ ফরজ হয়ে যায়। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যারা সেখানে পৌঁছার সামর্থ্য রাখে, তাদের ওপর আল্লাহর জন্য ঐ ঘরের হজ করা ফরজ।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯৭)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে লোকসকল, আল্লাহ তোমাদের ওপর হজ ফরজ করেছেন। সুতরাং তোমরা হজ করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৪১২)।
অতএব, যার ওপর হজ ফরজ হয়েছে, সে হজ না করে সেই অর্থ সদকা করলে তার ফরজ দায়িত্ব পূর্ণ হবে না। কারণ, ফরজ হজ একটি নির্দিষ্ট ইবাদত; এর আদায় শুধু মক্কা মুকাররমায় নির্ধারিত রুকন ও কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমেই সম্ভব। সদকা বা অন্য কোনো নেক আমল হজের বিকল্প নয়। অবশ্য গরিবদের সাহায্য করা অত্যন্ত মহৎ কাজ। সদকার প্রতি কুরআন-হাদিসে অনেক উৎসাহ এসেছে। যেমন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা অর্ধেক খেজুর সদকা করেও জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা করো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস ১৪১৭)।
তবে এ সদকা ফরজ হজের পরিবর্তে গণ্য হবে না। বরং ফরজ হজ আদায় করার পর নফল সদকা করলে তা অধিক পুণ্যের কাজ।
যার ওপর হজ ফরজ হয়েছে, তার জন্য হজ পালন করা আবশ্যক। ফরজ হজ বাদ দিয়ে সেই অর্থ সদকা করা শরিয়তসম্মত নয় এবং এতে হজের দায়ও আদায় হবে না। কিন্তু নফল হজের অর্থ সদকা করা যেতে পারে, বরং অনেক ক্ষেত্রে দরিদ্রদের সহায়তা নফল হজের চেয়ে বেশি কল্যাণকর হতে পারে।
রেফারেন্স: সহিহ বুখারি (১৫৩২, ১৭৮২), সহিহ মুসলিম (৪১২), রাদ্দুল মুহতার (২/৬২১)
