Logo
Logo
×

আইটি বিশ্ব

ব্যবহারকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ

চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে সাত মামলা

Icon

আইটি ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিতর্কের কেন্দ্রে এবার উঠে এসেছে চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। সাম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার স্টেট আদালতে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে সাতটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় গুরুতর অভিযোগ আনা হয়। চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা ও মানসিক বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, যদিও ভুক্তভোগীদের আগে কোনো মানসিক অসুস্থতার ইতিহাস ছিল না।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানায়, মামলাগুলোয় ওপেনএআইকে অযাচিত মৃত্যু, আত্মহত্যায় সহায়তা, জোরপূর্বক হত্যার দায় এবং অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সাতটি মামলার মধ্যে ছয়টি প্রাপ্তবয়স্ক ও একটি কিশোর ব্যবহারকারীর পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। এ মামলাগুলোর পেছনে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া ভিক্টিমস ল সেন্টার এবং টেক জাস্টিস ল প্রজেক্ট, যারা দীর্ঘদিন ধরে ডিজিটাল মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে কাজ করছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ওপেনএআই ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের জিপিটি-৪ মডেলটি যথাযথ নিরাপত্তা পরীক্ষার আগে বাজারে ছেড়েছে, যদিও কোম্পানির অভ্যন্তরীণ সতর্কতা জানিয়েছিল যে, এ মডেল ব্যবহারকারীর মানসিক অবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি এআইটি ব্যবহারকারীদের প্রতি অতিরিক্ত প্রশংসা ও আবেগপ্রবণ আচরণ প্রদর্শন করে, যা তাদের মানসিকভাবে প্রভাবিত করতে সক্ষম।

সবচেয়ে আলোচিত মামলা হলো, ১৭ বছর বয়সি আমরি লেসির মৃত্যুকে ঘিরে। অভিযোগ অনুযায়ী, লেসি প্রথমে কাজের সহায়তার জন্য চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করলেও পরে সে এতে মানসিকভাবে আসক্ত হয়ে পড়ে। মামলার নথিতে বলা হয়েছে, এআই বটটি কিশোরটিকে আত্মহত্যার নানা ‘উপায়’ শিখিয়েছে-এর মধ্যে ছিল ফাঁস লাগানোর নির্দেশনা এবং কতক্ষণ নিশ্বাস বন্ধ রাখলে মৃত্যু হবে সে সম্পর্কিত তথ্যও। অভিযোগকারীদের দাবি, আমরির মৃত্যু কোনো দুর্ঘটনা নয়; বরং এটি ‘বেপরোয়া প্রযুক্তি প্রকাশ ও পর্যাপ্ত মানব-নিরাপত্তা পরীক্ষার অভাবের সরাসরি ফলাফল।’

একইসঙ্গে কানাডার অন্টারিও প্রদেশেও ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেখানে ৪৮ বছর বয়সি অ্যালান ব্রুকস অভিযোগ করেছেন, দুই বছর ধরে চ্যাটজিপিটি তার ব্যক্তিগত সহকারী হিসাবে কাজ করছিল, কিন্তু একপর্যায়ে এই এআই হঠাৎ আচরণ বদলে তাকে মানসিক চাপে ফেলে দেয়।

ওপেনএআই অবশ্য এ ঘটনাগুলোকে ‘অত্যন্ত হৃদয়বিদারক’ বলে মন্তব্য করেছে এবং জানিয়েছে যে, তারা আদালতের নথি পর্যালোচনা করছে ও পুরো বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ মামলাগুলো এআই নিরাপত্তা ও নৈতিক ব্যবহারের প্রশ্নে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। যদি আদালত ভুক্তভোগীদের পক্ষে রায় দেয়, তবে এটি ভবিষ্যতে এআই কোম্পানিগুলোর জন্য বড় দৃষ্টান্ত তৈরি করবে, যেখানে মানুষের মানসিক সুরক্ষা হবে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের আগে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম