ছিনতাইয়ের টাকায় জমির ব্যবসা
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীতে তিন জেলার চারজন মিলে গড়ে তোলে একটি পেশাদার ছিনতাইকারী চক্র। ছিনতাই শেষে তারা টাকা ভাগাভাগি করে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে সেই টাকায় করত জমির ব্যবসা। শুধু তাই নয়, মালিবাগ ও আফতাব নগরে কেনে প্লট, করত মৌসুমি ব্যবসাও। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার একটি মামলায় চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতারের পর এমন তথ্য উঠে এসেছে।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার দুই আসামি হলো-গোপালগঞ্জের সাইফুল ইসলাম শাওন ও কুমিল্লার ফারুক হোসেন। বুধবার ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিন দিনের মঞ্জুর করেন। বাকি দুই আসামি পলাতক। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সূত্র জানায়, ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করার জন্য তারা রামপুরায় একটি বাসা ভাড়া নেয়। ওই বাসায় বসে পরিকল্পনার পর ছিনতাইয়ের টাকায় কেনা দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে বের হতো টার্গেট খুঁজতে।
চক্রের সদস্যদের মধ্যে দুজনের বাড়ি গোপালগঞ্জে, একজনের কুমিল্লায়। আরেকজন অন্য একটি জেলার। তারা পাঁচ লাখ টাকার নিচে কোনো ছিনতাই করত না। প্রতিটি অভিযানে তারা ব্যবহার করত তিন ধরনের জামা-একটি ছিনতাইয়ের আগে, একটি চলাকালীন এবং আরেকটি কাজ শেষে পালানোর সময় পরে তারা। ছিনতাইয়ের পর পরিচয় গোপন করতে তারা মোটরসাইকেলের নাম্বার প্লেট পরিবর্তন করে। এ ছাড়াও ছিনতাইয়ের সময় তারা মোবাইল ফোন এয়ারপ্লেন মুডে রাখত, যেন লোকেশন ট্রেস করা না যায়। ছিনতাইয়ের টাকায় তারা নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে জমি কিনে ব্যবসা করত। এছাড়া বিভিন্ন মৌসুমি ব্যবসাও করত। এ বিষয়ে উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, চক্রটি মূলত ব্যাংক, বিমা প্রতিষ্ঠান, এটিএম বুথ ও অর্থলগ্নি সংস্থার সামনে অবস্থান করে টার্গেট নির্ধারণ করত। কেউ নগদ টাকা উত্তোলন করলে তারা তাকে অনুসরণ করে সুবিধাজনক স্থানে ব্যাগ ছিনিয়ে দ্রুত পালিয়ে যেত। তিনি আরও বলেন, চক্রটি অত্যন্ত পেশাদারভাবে কাজ করত। তারা কখনো ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করত না। উবারচালক বা রিকশাচালকের বেশে বাইরে অবস্থান করত। কেউ বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে বের হলেই ছোঁ মেরে টাকা নিয়ে পালাত।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার প্রাইম ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন আর. এম. জিওটেক্স লিমিটেডের সহকারী ম্যানেজার জসিম উদ্দিন। তার সহকর্মী সঞ্জয় ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে তিনি রিকশায় অফিসে ফেরার পথে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের মিনা বাজার শপের সামনে পৌঁছলে মোটরসাইকেলে থাকা দুই আসামি ছোঁ মেরে ২০ লাখ টাকাসহ ব্যাগ নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল সাকীব জানান, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল, মোটরসাইকেল ও নগদ আট লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। রিমান্ডে চক্রের বিস্তারিত তথ্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে।

