বক্তব্য ভাইরাল
সেই হাসিনাই এখন বাস পোড়াতে ইন্ধন দিচ্ছেন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফ্যাসিস্ট হিসাবে চিহ্নিত ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার শাসনামলে আগুন সন্ত্রাসের বিপক্ষে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনিই আবার তার দলকে দিয়ে আগুন সন্ত্রাস করাচ্ছেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, নানাভাবে তিনিই এতে ইন্ধন দিচ্ছেন। কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসে আগুন দেওয়া হচ্ছে। জনমনে আলোচনা হলো-এই আগুনের ইন্ধন পলাতক শেখ হাসিনার ইন্ধনে ‘ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ’ই দিচ্ছে। রাজধানীসহ দেশের কয়েকটি স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তাই হাসিনার আমলে তারই দেওয়া বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা ও ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করছেন অনেকে। পুরোনো ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, কেউ যদি এভাবে গাড়িতে আগুন ও মানুষের জীবনে আগুন ধরাতে চেষ্টা করে, ওই হাত ওই আগুনে পুড়িয়ে দেবেন।’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় ওই কথা বলেন তিনি। ওইদিন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, অবরোধ আর অগ্নিসন্ত্রাস করে আর যেন একটাও পার না পায়। যদি কোনোটা আগুন দেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ওই আগুনেই তাকে ফেলতে হবে, হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যে হাত দিয়ে আগুন দেবে, সেই হাতই পোড়াতে হবে। তাহলে এরা সোজা হবে, নাহলে সোজা হবে না। কারণ, যে যেমন তার সঙ্গে তেমনই করতে হবে।
শেখ হাসিনা সেদিন আরও বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রত্যেক এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এদের খুঁজে বের করে ধরিয়ে দিতে হবে। আর মানুষের জানমালের সুরক্ষা দিতে হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। আমাদের আর কোনো কিছু নেই, আমাদের কোনো মুরুব্বি নেই। দেশের জনগণই আমাদের সব।
এদিকে শেখ হাসিনার ওই বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে ফেসবুক ব্যবহারকারী এম আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘আগুন-সন্ত্রাস’ শব্দযুগলের আবিষ্কারক পতিত ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনা। বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করতে তার সর্বাধিক উচ্চারিত শব্দযুগলও সম্ভবত এটি। এ নিয়ে তার বহু দামি বয়ান আছে। আগুন দিতে এলে ধরে আগুনে ফেলার নির্দেশ আমল করার সময় এসেছে সম্ভবত। তার উজিরদের কিছু ‘মূল্যবান’ বয়ানও স্মরণযোগ্য।’ একইভাবে ভার্চুয়াল মাধ্যমগুলোয় অসংখ্য মানুষ শেখ হাসিনাকে তুলোধুনো করছেন।
যদিও বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ আছে, হাসিনার শাসনামলে তার দলের কিছু ক্যাডার ও গোয়েন্দা সংস্থার দলবাজ কর্মকর্তারা আগুন সন্ত্রাসে ভূমিকা রাখে। এভাবে তারা হাজার হাজার মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে চরমমাত্রায় হেনস্তা করেছে।
এদিকে পুলিশ সূত্র জানায়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে ১৩ নভেম্বরের তথাকথিত লকডাউন কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল ও নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করছেন, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, তারা এ কর্মসূচির মাধ্যমে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দেবেন। এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ১৩ নভেম্বর নিয়ে আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। ঢাকার মানুষ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আমরা সবাই মিলে সব চক্রান্ত ও সন্ত্রাস রুখে দেব। এজন্য ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
