চট্টগ্রাম-৫ ও ৭ আসন
মীর হেলালের প্রচারণায় স্ত্রী, হুম্মামের পাশে মা
মনোনয়নের প্রতীক্ষায় ইসরাফিল-তুর্য
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চট্টগ্রাম উত্তরের দুই সংসদীয় আসন হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়ায় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপির দুই তরুণ নেতা-ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও হুম্মাম কাদের চৌধুরী। হেলালের পক্ষে প্রচারে নেমেছেন তার স্ত্রী নওশীন আরজান হেলাল। আর হুম্মামকে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়াবাসীর হাতে তুলে দিয়েছেন তার মা ফারহাত কাদের চৌধুরী। এই দুই আসনে বিদ্রোহী প্রার্থীর তেমন চ্যালেঞ্জ নেই। তবে উত্তরের অন্য তিন আসন মীরসরাই, ফটিকছড়ি ও সীতাকুণ্ডে প্রার্থীরা আছেন বিদ্রোহী প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে। আর রাউজান ও সন্দ্বীপে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়নি।
নগরে মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই তরুণ বিএনপি নেতা এখনো আছেন মনোনয়নের প্রতীক্ষায়। এরা হলেন ইসরাফিল খসরু ও সাঈদ আল নোমান তুর্য। ইসরাফিল চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-খুলশী) আসনে তুর্য মনোনয়ন চাইলেও এই আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। এই অবস্থায় ইসরাফিল ও তুর্যের মধ্যে কে কোন আসনে মনোয়ন পাচ্ছেন বা তারা আদৌ পাবেন কিনা-তা নিয়ে নেতাকর্মীরা রয়েছেন দোলাচলে।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও সাবেক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের ছেলে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পর থেকে তিনি এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম বাড়িয়ে দেন। তৃণমূলে সংগঠনকে শক্তিশালী করার পাশপাশি মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসাবে সামনের কাতারে চলে আসেন। ৩ নভেম্বর দলের মনোনয়ন পাওয়ার পর এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেন জোরেশোরে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসসহ নানা দিবসে মেডিকেল ক্যাম্প, শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ থেকে শুরু করে ব্যতিক্রমী সব কর্মসূচি পালন করেন। সর্বশেষ ২৪ নভেম্বর ১৩ নম্বর দক্ষিণ মাদার্শায় মহিলা সমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারণায় নামেন তার স্ত্রী নওশীন আরজান হেলাল।
চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী। বিএনপির প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দেওয়ার পর দিন ৪ নভেম্বর থেকে তিনি মাঠে নেমেছেন। রাঙ্গুনিয়ায় শহীদ জিয়ার প্রথম মাজার জিয়ারত শেষে এলাকাবাসীকে নিয়ে তিনি গণসংযোগে নামেন। ওই দিনই কাদের নগরে নিজ বাড়িতে এক অনুষ্ঠানে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে রাঙ্গুনিয়াবাসীর হাতে তুলে দেন তার মা ফারহাত কাদের চৌধুরী। রাঙ্গুনিয়াবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী মৃত্যুর আগে বলে গিয়েছিলেন রাঙ্গুনিয়াবাসীর ঋণ তিনি কোনোদিন শোধ করতে পারবেন না। তাদের কলিজা কেটে দিলেও ঋণ শোধ হবে না। হুম্মাম সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কলিজার টুকরা ছিলেন। সেই কলিজার টুকরাকে তিনি রাঙ্গুনিয়াবাসীর কাছে তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন। সেই থেকে হুম্মাম কাদের অনুসারীদের নিয়ে প্রতিদিন উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে প্রচার চালাচ্ছেন। সর্বশেষ ২২ নভেম্বর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে হুম্মাম বলেন, আগামী নির্বাচনে রাঙ্গুনিয়ার মানুষ ভোট দিয়ে প্রমাণ করবেন তার বাবা নির্দোষ ছিলেন।
এই আসনে আরেক উল্লেখযোগ্য মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি কুতুব উদ্দিন বাহার। তিনি বা তার অনুসারীরা চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণার পর মাঠে নামবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান তুর্য চট্টগ্রাম-১০ আসনে শুরু থেকে নানা কার্যক্রম চালিয়েছিলেন। এই আসনে আমির খসরুর মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে। এরপরও আশা ছাড়েননি তিনি। নগরীর কোতোয়ালি ও পতেঙ্গা আসন খালি আছে। এই দুটি আসনে এখনো কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসন। এই আসন থেকে থেকে আবদুল্লাহ আল নোমান একাধিকবার এমপি এবং পরবর্তীতে মন্ত্রী হয়েছেন। চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা) আসনটিও খালি আছে। এই আসনে ইসরাফিল খসরু মনোনয়ন চাইছেন এবং প্রচারণা ও গণসংযোগ চালাচ্ছেন। সর্বশেষ ২২ নভেম্বর আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে বড় ধরনের শোডাউন করেন তিনি। ইসরাফিল বলেন, গত ১৭ বছর এত নির্যাতনের পরও বিএনপির কেউ মাঠ ছেড়ে যায়নি। জনগণের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করছে বিএনপি। তিনিও দলের জন্য কাজ করছেন। মনোনয়ন মুখ্য নয়। দল যদি মূল্যায়ন করে সেটা ভিন্ন কথা।
সাঈদ আল নোমান তুর্য যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার বাবা সারা জীবন মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করেছেন। আমিও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে মানুষের সেবা করতে চাই। দল আমাকে সেই সুযোগ করে দেবে বলে বিশ্বাস করি।’

