গৌরবময় মহান মুক্তিযুদ্ধ
দুপচাঁচিয়ায় রাস্তার অভাবে পরিত্যক্ত আমষট্ট স্মৃতিস্তম্ভ
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতি বিজড়িত বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার আমষট্ট শোলার পুকুরপাড়ের স্মৃতিস্তম্ভটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে -যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার আমষট্ট স্মৃতিস্তম্ভ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের এক রক্তাক্ত স্মৃতি বহনকারী এ স্মৃতিস্তম্ভ আজ চরম অবহেলা ও অযত্নে পড়ে রয়েছে। যাতায়াতের রাস্তা ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে এটি।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের হানিফ উদ্দিনের ছেলে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন ও নিলাহালী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান যুদ্ধে যাওয়ার পথে আমষট্ট শোলার পুকুরপাড়ে রাজাকারের মুখোমুখি হন। এ সময় তাদের গুলিতে শহীদ হন নিজাম উদ্দিন। আতাউর রহমান কৌশলে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আমষট্ট গ্রাম। এ গ্রামে শোলার পুকুর রয়েছে। শহীদদের স্মরণে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ওই পুকুর ঘেঁষে পূর্ব-দক্ষিণ কোণে পাঁচ শতক জমিতে ৩৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৫ টাকা ব্যয়ে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেখানে যাতায়াতে গত পাঁচ বছরেও রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি।
স্থানীয় মতিউর রহমান দেওয়ান পলাশ বলেন, প্রায় পাঁচ বছর আগে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে ঝোঁপ জঙ্গল জন্ম নিয়েছে। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের স্থান নির্ধারণে ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। অরক্ষিত স্থানে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মিত হওয়ায় তা কোনো কাজেই আসছে না। সন্ধ্যার পর সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডা হয় বলে শোনা যায়।
গোবিন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন মল্লিক জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে উদ্যোগ না নেওয়ায় রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রকৌশলী আবু তালিম হোসেন জানান, রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় এক কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। অনুমোদন না দেওয়ায় ওই রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরুখ খান বলেন, আমষট্ট স্মৃতিস্তম্ভটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্মাণ করেছিল। যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় তা পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বিভিন্ন স্থানে ফাটলসহ চারপাশে আগাছা জন্ম নিয়েছে। রাস্তা নির্মাণসহ স্মৃতিস্তম্ভটি সংস্কার করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
