প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্রদল-পুলিশ সংঘর্ষ
১৩ আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্রদল-পুলিশ সংঘর্ষের মামলায় ১৩ আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নুর এ আদেশ দেন। এ ঘটনায় রোববার রাতেই এসআই পলাশ সাহা বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
সোমবার বিকালে তাদের আদালতে এনে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই মো. আব্দুল্লাহ রিমান্ডের এ আবেদন করেন। এতে বলা হয়, আসামিরা বেআইনিভাবে সমাবেশের নামে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের স্বাভাবিক থাকার অনুরোধ করলেও তারা তা শোনেননি। এদের কয়েকজন মিছিল ও স্লোগান দিয়ে লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। একপর্যায়ে তারা পুলিশের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ও পলাতক আসামিদের গ্রেফতার এবং ঘটনার মদদদাতাদের সম্পর্কে জানতে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ আসামিদের রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন। অপরদিকে আসামিপক্ষে রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে রিমান্ডের ওই আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- লালবাগের মো. মঞ্জুরুল আলম রিয়াদ, ওয়ারীর মো. আতাউর রহমান, চকবাজারের মো. মাসুদ রানা, শাহজাহানপুরের মো. শফিকুল ইসলাম, কেরানীগঞ্জের শাহীরাজ, বিবাড়িয়ার আহসান হাবিব ভূইয়া রাজু, মানিকগঞ্জের কবির হোসেন, পটুয়াখালীর মো. মানোয়ার ইসলাম, মানিকগঞ্জের মো. আরিফুল হক, কুমিল্লার মো. আনিসুর রহমান, দিনাজপুরের আবু হায়াত মো. জুলফিকার, জামালপুরের মো. আতিক মোর্শেদ ও রমজান আহমেদ তপন।
রোববার ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি কেন্দ্র করে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু ও জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল ছাত্রদল।
মামলার আসামি যারা : প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্রদল ও পুলিশের সংঘর্ষের মামলার এজাহারে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- লালবাগের মো. মঞ্জুরুল আলম রিয়াদ, ওয়ারীর মো. আতাউর রহমান, চকবাজারের মো. মাসুদ রানা, শাহজাহানপুরের মো. শফিকুল ইসলাম, কেরানীগঞ্জের শাহীরাজ, বিবাড়িয়ার আহসান হাবিব ভূইয়া রাজু, মানিকগঞ্জের কবির হোসেন, পটুয়াখালীর মো. মানোয়ার ইসলাম, মানিকগঞ্জের মো. আরিফুল হক, কুমিল্লার মো. আনিসুর রহমান, দিনাজপুরের আবু হায়াত মো. জুলফিকার, জামালপুরের মো. আতিক মোর্শেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেল, সাভার পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সজিব, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এজিএস আক্তারুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদ মাহমুদ জুয়েল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা শাকিল, ইডেন ছাত্রদলের সহসভাপতি জান্নাত, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি মোস্তাফিজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদল নেতা কিরণ, ইডেন কলেজ ছাত্রদল নেত্রী শিরিন, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সহ দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক সোহেল, সাবেক ছাত্রদল নেতা খন্দকার মুজাহিদুল ইসলাম, মো. সওগাতুল ইসলাম, মো. মিনহাজুল হক নয়ন, ছাত্রদল নেতা মো. শওকত উল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদল সভাপতি খন্দকার এনামুল হক এনাম, সিনিয়র সহসভাপতি কামাল হোসেন, সহসভাপতি গিয়াস উদ্দিন মানিক, যুগ্ম সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, ওবি আজাদ চৌধুরী নাহিদ, সোহেল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম নয়ন, ২০ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. মশিউল আজিম শিবলি, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মহিউদ্দিন টিপু, মো. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, মো. মাহফুজ আলম, ২১ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রুবেল হোসেন, সদস্য সচিব মেহেদী হাসান, সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, মো. ফয়সাল আহমেদ, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. নাঈম আবেদীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আল মামুন ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
গ্রেফতারের প্রতিবাদে ঢাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি থেকে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাবি ছাত্রদল। সোমবার দুপুরে টিএসসি থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে রোকেয়া হল, রাজু ভাস্কর্য প্রদক্ষিণ করে আবার টিএসসিতে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে ঢাবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা টিএসসিতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এ সয় নেতৃবৃন্দ বলেন সব ধরনের শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে গতকাল ছাত্রদলের নেতাদের আটক করেছে। আমরা অবিলম্বে ছাত্রদলের আটক সব নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করছি। যে প্রশাসন ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থী আটক করলেও নীরব থাকে, তাদের প্রতি ধিক্কার জানাই। ঐতিহাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কীভাবে পুলিশ এসে ছাত্রনেতাদের আটক করে তা আমাদের জানা নেই।
গ্রেফতার তিন ছাত্রদল নেতা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান খন্দকার, স্যার এ এফ রহমান হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার জিসান ও শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখার কর্মী আতিক মোর্শেদ।
