ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক
চলন্ত বাসে ফের ডাকাতি নারীর শ্লীলতাহানি
যুগান্তর প্রতিবেদন, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ‘আল ইমরান’ পরিবহণের একটি চলন্ত বাসে যাত্রীদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে ডাকাতি হয়েছে। এ সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার ভোর ৫টা পর্যন্ত ওই বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাতদল যাত্রীদের সবকিছু লুটে নেয়। রাতভর যাত্রীদের নিয়ে চার-পাঁচবার টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-আশুলিয়া যাওয়া-আসা করে ডাকাতরা। ভোরে ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর চালক ও যাত্রীরা টাঙ্গাইল সদর থানায় যান।
বাসের চালক, সুপারভাইজার ও যাত্রীরা জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রীবাহী বাসটি রংপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে। বাসের সহকারী আতিকুর রহমান জানান, পথে সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া থেকে কিছু যাত্রী ওঠেন। প্রায় ১০ নারীসহ ৪৫ যাত্রী নিয়ে বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা অতিক্রম করে।
যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের সংযোগ সড়কের কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর যাত্রীবেশী ৮-১০ জন ডাকাত ছুরি, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্রের মুখে চালকের কাছ থেকে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে তারা যাত্রী, বাসের চালকসহ সবার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় গিয়ে বাসটি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার দিকে চলতে থাকে। এ সময় প্রত্যেক যাত্রীকে তল্লাশি করে মুঠোফোন, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও অন্য মালামাল লুটে নেয়। তারা বাসটি নিয়ে সাভারের চন্দ্রা-আশুলিয়া পর্যন্ত যায়। পরে রাতভর কয়েকবার বাসটি নিয়ে ওই এলাকা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত চক্কর দেয়।
বাসের চালক আবেদ আলী জানান, সারা রাতে বাসটি নিয়ে ডাকাতরা চার-পাঁচবার টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-আশুলিয়া যাওয়া-আসা করে। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের বাইপাস সড়কের শিবপুরে বাসটি রেখে ডাকাতদল চলে যায়। পরে যাত্রীদের নিয়ে সকালে টাঙ্গাইল সদর থানায় যান। সকালে সদর থানায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বাসের স্টাফ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন।
বাসযাত্রী বগুড়ার আদমদীঘির জুয়েল মিয়া জানান, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য নারী যাত্রীদের তল্লাশির সময় শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। তার চোখ-মুখ বাঁধা ছিল। তবে তিনি নারী যাত্রীদের কান্নাকাটি ও কাকুতি-মিনতি শুনতে পান।
অপর যাত্রী রংপুরের কাউনিয়া এলাকার আকাশ মিয়া জানান, হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ডাকাতরা প্রত্যেক যাত্রীর দেহ কয়েকবার তল্লাশি করে। যার যা কিছু ছিল সব নিয়ে যায়।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহম্মেদ বলেন, ডাকাতদলকে চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
টাঙ্গাইল সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এইচএম মাহবুব রেজওয়ান সিদ্দিকী বলেন, বাসের এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে দুপুরে মামলা করেছেন। মামলার পর পুলিশ ও ডিবির একাধিক টিম ডাকাতদের গ্রেফতারের জন্য মাঠে নেমেছে।
এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি একই মহাসড়কে ইউনিক রয়েলসের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ২ আগস্ট একই কায়দায় কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
