Logo
Logo
×

শেষ পাতা

বিএসএফের হাতে খুন

পদ্মায় মিলল সৈয়বুরের ক্ষত বিক্ষত লাশ

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পদ্মায় মিলল সৈয়বুরের ক্ষত বিক্ষত লাশ

সীমান্ত অতিক্রম করে গরু-মহিষ আনতে সোমবার রাতে ভারতে যান চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের দশরশিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের ছেলে সৈয়বুর আলী (২৬)। সঙ্গে ছিলেন একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম পুটুর ছেলে রুহুল আলী (২৭)।

ওই রাতেই তারা এক জোড়া করে মহিষ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সমশেরগঞ্জ থানার ধুলিয়ান ঘাট থেকে পদ্মা নদীতে নেমে পড়েন। উদ্দেশ্য ছিল মহিষ ভাসিয়ে দিয়ে পদ্মায় বহমান তীব্র স্রোতের ভাটিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনোহরপুর বা বোগলাউড়ি এলাকার তীরে উঠে যাওয়া। কিন্তু বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সৈয়বুর আলী। সঙ্গী রুহুল আলীরও খোঁজ নেই চার দিন ধরে।

এলাকার সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, মুর্শিদাবাদ জেলার নিমতিতা বিএসএফ ফাঁড়ির একটি টহল দল টের পেরে স্পিড বোট ছেড়ে পদ্মা নদীতে ধাওয়া করে সৈয়বুর ও রুহুলকে। কিন্তু মহিষ ছেড়ে দিয়ে রুহুল চলে আসতে পারলেও সৈয়বুর ধরা পড়ে যান। বিএসএফ সদস্যরা সৈয়বুরকে ধারালো ও ফলাজাতীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও খুঁচিয়ে হত্যা করে লাশ পদ্মায় ভাসিয়ে দেয়।

বৃহস্পতিবার বিকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ফুলতলা ঘাট এলাকায় পদ্মায় ভাসমান অবস্থায় সৈয়বুরের ক্ষত-বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। তবে রুহুল আলীর কী অবস্থা হয়েছে সেটা এখনো জানা যায়নি।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী নৌপুলিশ ফাঁড়ির ওসি তৌহিদুল ইসলাম জানান, সৈয়বুরের সারা শরীরে ধারালো অস্ত্রের অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে কুপিয়ে ও খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, গোদাগাড়ীর ফুলতলা ঘাটের একজন মাঝি পদ্মায় একটি লাশ ভাসতে দেখে নৌপুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে বৃহস্পবিার বিকালে পুলিশ পদ্মা নদী থেকে লাশটি উদ্ধার বরে। বিএসএফ সৈয়বুরকে হত্যার পর তার মোবাইল ফোন সেটের সব নম্বর ডিলিট করে সেটটি গামছার বেঁধে কোমরের সঙ্গে বেঁধে দিয়েছিল। মোবাইল ফোনের সিমটি চালুর পরপরই একটি ফোন কল আসে তার নম্বরে। ফোন কলটি তার পরিবারের কোনো সদস্যের। তারাই নিশ্চিত করেন নম্বরটি সৈয়বুর রহমানের। সন্ধ্যার দিকে তার দুজন আত্মীয় গোদাগাড়ী নৌপুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে সৈয়বুরের লাশ শনাক্ত করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

ওসি আরও জানান, সৈয়বুরের একজন চাচাত ভাই তাকে জানিয়েছেন, সৈয়বুর সোমবার রাতে রুহুলসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে সীমান্ত পেরিয়ে গরু মহিষ আনতে ভারতে গিয়েছিল। রাতেই তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু পরদিন সকালেও বাড়ি না ফেরায় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তারা সংশয়ে ছিলেন সৈয়বুর হয়তো বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছে। এরপর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্নভাবে খবর পেয়ে সৈয়বুরের লাশের খোঁজে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী পর্যন্ত পদ্মার বিভিন্ন পয়েন্টে নজরদারি করছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফাহাদ হোসেন রিংকু জানান, লাশ উদ্ধারের জন্য বিজিবি গোদাগাড়ী থানা ও নৌপুলিশকে খবর দেয়। পরে নৌপুলিশ লাশ উদ্ধার করে বলে বিজিবি জানতে পেরেছে। তবে সৈয়বুরের পরিবারের কেউ বিজিবির সংশ্লিষ্ট এলাকার ফাঁড়িতে কোনো প্রকার অভিযোগ করেননি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম