কুমিল্লা জেলার সাহিত্য নিয়ে বিশেষ আয়োজন
কুমিল্লায় সাহিত্যচর্চা
আলী হোসেন চৌধুরী
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
১৪০০ বছর আগে এখানে শিক্ষা ক্ষেত্রে যে বিপ্লব ঘটেছিল তার সাক্ষী হিসাবে অসংখ্য ভগ্ন বিহার কোটবাড়ি-ময়নামতি অঞ্চলে দৃশ্যমান। বিশ্ববিদ্যালয় সমতুল্য আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল শালবন বিহার।
কুমিল্লার বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ক্ষেত্রটি অনেক আগে থেকেই চর্চিত হয়ে আসছিল। দাবি আছে প্রাচীন সাহিত্য চর্যাপদের কোনো কোনো চর্যাকারের জন্ম কুমিল্লা বা প্রাচীন সমতট রাজ্যে। নাথ সাহিত্যের কোনো কোনো কবি সম্পর্কেও এ দাবি আছে। মধ্যযুগের একাধিক কবির নাম পাওয়া যায় কুমিল্লায় যাদের জন্ম। ১৫০০ বছর আগে কুমিল্লার কৈলাইন গ্রামের ভদ্র রাজ পরিবারে জন্ম নেওয়া মহাস্থবির শীলভদ্র পৃথিবী বিখ্যাত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ছিলেন। তিনি এক সময় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জ্ঞানীদের একজন ছিলেন।
উনিশ শতকে নবাব ফয়জুন্নেসার ‘রুপজালাল’ গ্রন্থ একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। বিশ শতকের গোড়ার দিকেই কুমিল্লার সামাজিক, রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ও আধুনিক চিন্তার প্রভাব লক্ষণীয় হয়ে ওঠে। কুমিল্লার ক্রমোন্নতি তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। তখন কুমিল্লা শহরকে বলা হতো ব্যাংক এবং ট্যাংকের শহর। বিশ শতকের প্রথম ভাগে কুমিল্লায় বারবার কবি নজরুলের অবস্থান, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতি কুমিল্লার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অগ্রচিন্তায় প্রভাবক হয়ে ওঠে। বিশ শতকের গোড়ার দিকে ‘মনোহরপুর ইয়াং ম্যান্স্ক্লাবে’ সাহিত্য ও সংগীতের একটি আড্ডা জমত। এতে অংশ নিতেন অজয় ভট্টাচার্য, সঞ্জয় ভট্টাচার্য, সুর সাগর হিমাংশু দত্ত, কাজী নজরুল ইসলাম, মোতাহের হোসেন চৌধুরী, শচীন দেব বর্মণ।
রাজনীতিক আশরাফউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন চৌধুরীর কবিকীর্তি এ সময় প্রকাশিত ও প্রশংসিত হয়। তিরিশের দশকে প্রাবন্ধিক মোতাহের হোসেন চৌধুরী, কবি অজয় ভট্টাচার্য ও সঞ্জয় ভট্টাচার্যের আবির্ভাব ঘটে। এরা দুই ভাই। সঞ্জয় ভট্টাচার্যের সম্পাদনায় কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত হতো ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘পূর্বাশা’। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস ‘পদ্মানদীর মাঝি’ ‘পূর্বাশা’তেই প্রথম ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হওয়া শুরু হয়েছিল। পরে সঞ্জয় ভট্টাচার্য কলকাতায় কবি হিসাবে খ্যাতিমান হন। অনুরূপভাবে বড় ভাই অজয় ভট্টাচার্য বিখ্যাত গীতিকার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন।
ধীমান লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী ‘বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন’ ও ‘শিখা সংসদের’ সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘সংস্কৃতি কথা’ তার বিখ্যাত গ্রন্থ।
বিশ শতকের ৫০-এর দশকে কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হয় তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক সম্মেলন। যার উদ্যোক্তা ছিলেন অধ্যাপক আসহাবউদ্দিন আহমদ ও অধ্যাপক আবুল খায়ের। সেই সম্মেলনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিখ্যাত সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতি সেবীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলাভাষা ও সাহিত্য আন্দোলনের প্রগতিশীল ধারার নব যাত্রাপথের উন্মোচন ঘটে।
ষাটের দশকে ‘সপ্তর্ষি’ নামে একটি সাহিত্য সংগঠনের নাম শোনা যায়। জানা যায় এরা সাতজনের আড্ডা জমাত ‘মনোহর পুর শক্তি ঔষধালয়ে’। তাদের লেখা ছাপা হতো ‘সাপ্তাহিক আমোদে’ও। ষাটের দশকের শেষভাগে গঠিত হয় ‘ইদানীং আমরা’ নামে সাহিত্য সংগঠন। আলী হোসেন চৌধুরী ও সৈয়দ আহমাদ তারেক ছিলেন এর উদ্যোক্তা। সভাপতি ছিলেন মো. ওয়ালীউল্লাহ। যুক্ত ছিলেন কবি মাহবুব জামান মিন্টু, রোকেয়া সুলতানা, ছড়াকার বিমানকান্তি সাহা ও সাহিত্যিক মানবেন্দ্র সাহা। এ সময় শামসুন্নাহার রাব্বির সম্পাদনায় মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘ময়নামতি’ প্রকাশিত হতো।
’৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘আমরা জ্যোৎস্নার প্রতিবেশী’। মূল উদ্যোক্তা জহিরুল হক দুলাল, শওকত আহসান ফারুক, সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক বদরুল হাসান। ’৭১-এর মার্চের প্রথমভাগে উত্তাল গণজাগরণের সময় ট্রাকে করে ভ্রাম্যমাণ অনুষ্ঠান করত ‘আমরা জ্যোৎস্নার প্রতিবেশী’। অনুষ্ঠানের মূল বিষয় ছিল জাগরণের গান ও কবিতা। আবৃত্তি করতেন সুভাষ পাল ও অধ্যাপক বদরুল হাসান (পরে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে উপস্থাপনা ও আবৃত্তি করতেন)।
স্বাধীনতার পর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন নতুন চিন্তাচেতনায় ঋদ্ধ হয়। ইতঃপূর্বে গঠিত ‘ইদানীং আমরা’ ‘আমরা জ্যোৎস্নার প্রতিবেশীর সঙ্গে’ একীভূত হয়। বিশেষ বিশেষ দিনে কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ, চকবাজার ও কোটবাড়িতে কবিতা পাঠের আসর বসত। টাউল হলের মাঠে ফেব্রুয়ারিতে একুশের সংকলন নিয়ে আলোচনা হতো। কবিতা পাঠ হতো বিশাল মঞ্চ তৈরি করে। স্বাধীনতার পর অধ্যাপক আবদুল ওহাব সভাপতির দায়িত্ব নেন। ‘পেড়াভান্ডার’ ছিল কবিতা আড্ডার প্রধান কেন্দ্র। সেখানে প্রতিদিন কবিদের আড্ডা হতো। স্বরচিত নতুন কবিতা পাঠ, আলোচনা-পর্যালোচনা ছিল নিয়মিত। ‘জ্যোৎস্নার প্রতিবেশী’র উদ্যোগে অনেক অনুষ্ঠান হয়েছে সেসব অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, ভাষাবিদ, ঢাকা ও কলকাতার লেখকরা অংশ নিয়েছেন। ‘জ্যোৎস্নার প্রতিবেশী’র লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হতো। প্রায় সবই কবিতার সংকলন। ছোটখাটো এসব সংকলনের অভিনব নাম যেমন ‘চাবি খুঁজছি মহারাজ’, ‘পউশ এলো মহারাজ’, ‘বেশ কিছুদিন শান্ত ছিলাম’, ‘কবিতা আমার ঈশ্বর’, ‘তুই আমার সুখ’, ‘ছিপ ফেলে বসে আছি’, ‘কবিতার তৃপ্ত ঝুমঝুমি’, ‘সুবর্ণ গ্রামে যাব’। ‘চোখ’ নামে একটি গল্পপত্রও প্রকাশিত হয়েছিল।
‘জ্যোৎস্নার প্রতিবেশী’র মাসিক কবিতাপত্র ‘চিরকুট’ ফজল মাহমুদের সম্পাদনায় প্রথম প্রকাশিত হয়। এতে শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ প্রমুখ কবিরা লিখতেন। ‘জ্যোৎস্নার প্রতিবেশী’র সংকলনগুলোতে নিয়মিত লিখতেন জহিরুল হক দুলাল, শওকত আহসান ফারুক, সৈয়দ আহমাদ তারেক, আলী হোসেন চৌধুরী, আনোয়ারুল হক, ফরিদ মুজহার, হাসান ফিরোজ, আলাউদ্দিন তালুকদার, ফখরুল ইসলাম রচি, বাবুল ইসলাম, মঞ্জুরই করিম পিয়াস, ফখরুল আবেদিন দুলাল, ফজল মাহমুদ, নীরু শামীম ইসলাম, মোহসেনা চিনু। এ ছাড়া ‘জ্যোৎস্নার প্রতিবেশী’র সঙ্গে জড়িত ছিলেন অনুপ বোস, সুভাষ পাল, অধ্যাপক মোমেনুল হক, রেজাউল করিম শামীম, সুহাস রায়, কমলেন্দু দাস, পরিমল সূত্রধর, পাপড়ি বসু, শিরিন সুলতানা, মিতা পাল, অধ্যাপক শামসুদ্দিন আহমদ ভুলু, কিরণময় দত্ত ঝুনু। ‘জ্যোৎস্নার প্রতিবেশী’ এখনো টিকে থাকলেও অনুষ্ঠান কম, সেভাবে সক্রিয় নয়।
’৭৩-এর শেষভাগে ফখরুল হুদা হেলাল ও ফখরুল ইসলাম রচির নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘সে আমি তুমি’ নামে একটি সাহিত্য সংগঠন। এ সংগঠনের সবচেয়ে বড় আয়োজন ছিল ৭৪ সালে দুই দিনব্যাপী সাহিত্য সম্মেলন। এ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিকরা অংশগ্রহণ করেন। ‘সে আমি তুমি’র উদ্যোগে বেশ ক’টি কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয়। এসব সংকলনের মধ্যে ছিল ‘এ সভা প্রস্তাব করছে’, ‘উদাহরণ’, ‘দীপাধার’, ‘নাচ ময়ূরী নাচ’, ‘পরিচয়’ নামে দ্বিপাক্ষিক একটি সাহিত্য পত্রিকাও প্রকাশ করে সংগঠনটি। এ সংগঠন থেকে ‘সাবধানী নাবিক’ নামে একটি গল্পপত্রও প্রকাশিত হয়। এ সংগঠনের সঙ্গে অন্য যারা জড়িত ছিলেন তারা হলেন নাজনীন রহমান নাজমা, আলম আরা মুকুল, নেলী ইসলাম, জসিম উদ্দিন, আনিসুর রহমান আখন্দ, তপন সেন গুপ্ত।
কুমিল্লা সাহিত্য অঙ্গনে ‘অলক্ত সাহিত্য পরিষদ’ অনেক সমৃদ্ধ অনুষ্ঠান করেছে। এসব অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য অনেক গুণী লেখক ও শিক্ষক অংশ নিয়েছেন। ‘ত্রৈমাসিক অলক্ত’ নামে সাহিত্যপত্রে বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলার প্রখ্যাত লেখকদের লেখা প্রকাশিত হতো। ‘অলক্ত’র মূল উদ্যোক্তা ছিলেন তিতাস চৌধুরী। যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ তোয়াহা, অধ্যাপক লায়লা নূর, ধর্মরক্ষিত মহাথের, রাসমোহন চক্রবর্তী, অধ্যাপক রাশিদা তাহের, অধ্যাপক নূরল ইসলাম, অধ্যাপক স্বপ্না রায়। তিতাস চৌধুরীর বেশ কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। স্বপ্না রায়েরও কবিতা ও প্রবন্ধের কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। প্রতি বছর ‘অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার’ দেশের একটি সম্মাননা স্মারক হিসাবে বিবেচিত হতো।
কুমিল্লা কালচারাল কমপ্লেক্স থেকে ‘কুমিল্লার সাহিত্য পত্রিকা’ নামে একটি সাহিত্যপত্র কয়েকবছর প্রকাশিত হয়েছে। সম্পাদক ছিলেন ড. জয়নাল আবেদিন। ‘জাগরণী সংসদ’ নামে একটি সাহিত্য সংগঠন কয়েক বছর বেশ সক্রিয় ছিল। প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন মনজুর আহমদ।
‘উষসী’ নামে সংগঠনটি ’৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর বহুমুখী কার্যক্রম ছিল। তবে সাহিত্যচর্চাই এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। ছড়াকার রমিজ খানের নেতৃত্বে ‘উষসী’ নিয়মিত সাহিত্যচর্চায় নিবেদিত ছিল। ‘উষসী’ থেকে সাহিত্য ও কবিতা সংকলন যেমন প্রকাশিত হয়েছে তেমনি গ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছে। এ সংগঠনে যুক্ত আছেন অধ্যক্ষ সফিকুর রহমান, ইউনুস উল্লাহ, মফিজ উদ্দিন, হুমায়ূন কবীর, কাজী জাকারিয়া, বাদল, আহম্মেদ কবীর, উত্তম দাশ, আশিস দে, শাহাজান চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান, এ কিউ আশিক। প্রথম সভাপতি ছিলেন যোগেশ চন্দ্র দাশ।
শান্তনু কায়সার ও সমীর মজুমদারের নেতৃত্বে ‘সমতট’ নামে একটি সাহিত্য সংগঠন গড়ে ওঠে। কয়েক বছর এ সংঠনের উদ্যোগে সংকলন প্রকাশ, সেমিনার ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শান্তনু কায়সার একজন মেধাবী লেখক। তার লেখা সমালোচনা ও প্রবন্ধের অনেক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
‘যাত্রী’ ও ‘উদীচী’ মূলত সাংস্কৃতিক সংগঠন হলেও সংগঠনগুলোতে সাহিত্যচর্চা লক্ষণীয়। এসব সংগঠন থেকে নিয়মিত সাহিত্যপত্র প্রকাশিত হয়।
‘বিনয় সাহিত্য পরিষদ’ দীর্ঘদিন সাহিত্যচর্চা করে আসছে। ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘বিনয়’ প্রকাশিত হয় দেশের প্রখ্যাত লেখকদের রচনায় ঋদ্ধ হয়ে। ‘বিনয়’ প্রতিবছর সাহিত্য পুরস্কারের আয়োজন করে। বধ্যভূমি, আন্দোলন ও রাজনীতি বিষয়ে মোতাহের হোসেন মাহবুবের বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রয়েছে।
‘অন্যস্বর’ নামে একটি সাহিত্য সংগঠন ছিল যারা সব সময় সাইকোস্টাইল কবিতার ভাঁজপত্র প্রকাশ করত। অধ্যাপক দীপক ভদ্রের সম্পাদনায় অনিয়মিত সাহিত্যপত্র ‘বর্ণিতা’ প্রকাশিত হয়। ‘ছোটগল্পের আসর’ প্রতিমাসেই বসে। এর উদ্যোক্তা কাজী মোহাম্মদ আলমগীর, রুবেল কুদ্দুস, হালিম আবদুল্লাহ ও কায়সার হেলাল।
অধ্যাপক মোবাশ্বের আলী বাংলা সাহিত্যে একজন উল্লেখযোগ্য প্রাবন্ধিক ও সমালোচক। বাংলা একাডেমি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত এ লেখকের অনেক গ্রন্থ রয়েছে।
শান্তিরঞ্জন ভৌমিক অসংখ্য গ্রন্থ প্রণেতা। তিনি ‘অরণিকা’ নামে একটি ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেন।
ইতিহাসের বিষয় থেকে একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন গোলাম ফারুক, আহম্মদ আলী ও আহসানুল কবীর। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণাধর্মী প্রবন্ধগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে আবুল কাশেম হৃদয়ের। কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অরুণ চৌধুরী। তার কয়েকটি গল্পগ্রন্থ ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া তিনি অসংখ্য টিভি নাটক রচনা করেছেন।
গল্পকার কাজী মোহাম্মদ আলমগীর ও গাজী মোহাম্মদ ইউনুসের একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কথাসাহিত্যে তরুণ লেখক নিসর্গ মেরাজ চৌধুরীর বেশ কয়েকটি গল্পগ্রন্থ ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। কথাসাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন মহিবুল আলম ও হৃদয় রেজোয়ান। বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ কবি কামাল চৌধুরী। কবিতার জন্য বাংলা একাডেমী পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। কথাসাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন মাহবুবা হোসেইন। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ: ‘অর্ধনারী’, ‘একটি সোনার মই উঠে গেছে চাঁদে’। ছোটগল্প: ‘রূপান্তরিত’, ‘অপার্থিব’, ‘চিত্রবিচিত্র’। উপন্যাস: ‘পথের শেষে’।
বর্তমানে যারা লিখছেন তাদের মধ্যে আনোয়ারুল হক কবিতা ও গল্প রচনার পাশাপাশি গবেষণা কাজও করেন নজরুল নিয়ে। আনোয়ারুল হকের বেশ কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কবিতার পাশাপাশি তিনি প্রবন্ধ ও গবেষণাধর্মী কাজ করেন। ইতিহাসকে উপজীব্য করে আবুল কাসেমের বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্রন্থ লিখেছেন মামুন সিদ্দিকী। আহম্মেদ কবীর কবিতা, গল্প ও নাটক লিখেছেন। কবি সৈয়দ আহমাদ তারেকের একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত। কবিতা লিখছেন শওকত আহসান ফারুক, মতিন রায়হান, ফখরুল হুদা হেলাল, নাজনীন রহমান নাজমা, মেহেদী মাহমুদ চৌধুরী, মাহমুদ কচি, ফরিদ মুজহার, আলাউদ্দিন তালুকদার, রতন ভৌমিক প্রণয়, ইকবাল আনোয়ার, এহতেশাম হায়দার চৌধুরী, ইসহাক সিদ্দিকী, রহমান শেলী, নুরুন্নাহার শিরীন, বায়তুল্লাহ কাদেরী, পীযুষ ভট্টাচার্য, সৌম্য সালেক, হালিম আবদুল্লাহ, বিজন দাস, দীপ্র আজাদ কাজল, ভুঁইয়া তাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ শাহজাহান, রুবেল কুদ্দুস, ইয়াসিন আশরাফ, এ কিউ আশিক, মানব হোসেন শিপন, শামীম হায়দার, শফিকুল ইসলম ঝিনুক, হাসনে আরা মীনা, জাফরিন সুলতানা, ফখরুল ইসলাম রচি, জাকির আহমেদ বাবু, রোকসানা ইয়সমিন মণি, সৈয়দা ফেরদৌস সুলতানা, জে এন লিলি, মল্লিকা বিশ্বাস, মো. আরিফুল ইসলাম, আরিফ হাসান, খালেদ চৌধুরী, খলিলুর রহমান শুভ্র, কাজী রাকিব উদ্দিন আহমদ, আহমেদ মোসলেহ, পিয়াস মজিদ, কায়সার হেলাল, অজিত দাশ, মাইনুল শাহিদ, হুমায়ুন করীর (‘ঘুংঘুর’ সম্পাদক), খয়রুল আহসান মানিক, সাইয়্যেদ মোহাম্মদ পারভেজ, মনসুর হেলাল, মোস্তাক আহমেদ হেলাল, জলিল সরকার, জাকির হোসেন কামাল, জাকির আজাদ বাবু, শরীফ আহম্মদ আলি প্রমুখ।
গীতি কবিতায় গাজী মাজহারুল আনোয়ার, এসএম হেদায়েত, ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়া, রংগু শাহাবুদ্দিন, মৃণালকান্তি ঢালী, সমর মোদকের নাম উল্লেখযোগ্য।
