Logo
Logo
×

অল্পকথা

চিকিৎসা ব্যয় কমানো হোক

Icon

অলোক আচার্য

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চিকিৎসা ব্যয় কমানো হোক

মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম হলো চিকিৎসা। ইতোমধ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং নানা কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। তাতেই মানুষের নাভিশ্বাস হওয়ার অবস্থা। এ পরিস্থিতির মধ্যে চিকিৎসা ব্যয়ও বেড়েছে। পরিবারে অসুস্থ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস ও খাদ্যদ্রব্যের মান এর একটি বড় কারণ। ফলে সকাল-সন্ধ্যা প্রায়ই ছুটতে হয় ডাক্তারের কাছে। ওষুধের দামও বেড়েছে। রোগ নির্ণয়ের ফি বেড়েছে। আমাদের বারবার বলা হয় রোগ হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতে। বাস্তবে তাদের কাছে চিকিৎসা নিতে যে খরচের প্রয়োজন, মূলত তার জোগান দিতে না পেরেই মানুষ কাছাকাছি যাকে পায় তার কাছ থেকেই চিকিৎসা নেয়। ভালো চিকিৎসা করাতে গেলেই বেশি খরচ। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা বিদেশে যায়।

বস্তুত সংসারে ব্যয়ের একটি অংশ যায় চিকিৎসার পেছনে। আজকাল প্রতিটি পরিবারেই কোনো না কোনো সদস্যের জন্য বা একাধিক সদস্যের জন্য ওষুধপত্র কিনতে হয়। আর প্রতিনিয়ত এ ব্যয় বেড়ে চলেছে। ফলে অন্যান্য খরচের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় নিু ও মধ্যবিত্ত পরিবারকে। এমনকি উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোও এ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।

সম্প্রতি এক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, সরকারি হাসপাতালে ৩ শতাংশ রোগী ওষুধ পায়। বাকি ৯৭ ভাগ রোগীই ওষুধ পায় না। এসব কারণে রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে ছুটে ও দরিদ্র হয়ে পড়ে। এ সংখ্যা প্রতিবছর প্রায় ৮৬ লাখ। আরও জানা যায়, ২০১২ সালে রোগীর স্বাস্থ্যসেবার খরচ কমিয়ে আনতে ২০ বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হবে ২০৩২ সালে। সেখানে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবায় মানুষের খরচ বর্তমান শতকরা ৬৪ ভাগ থেকে ৩২ ভাগে নামিয়ে আনতে হবে।

কারণ একজন প্রাইভেট চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া এবং একাধিক টেস্ট করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। প্রাইভেট চিকিৎসকের আবার আলাদা আলাদা ফি। রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। আজকাল আবার টেস্ট ছাড়া চিকিৎসা করার রীতি প্রায় উঠে গেছে! তারপর ওষুধের প্রশ্ন। এত বিশাল খরচ সবাই বহন করতে পারে না। চিকিৎসার জন্য দেশে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি অসংখ্য প্রাইভেট ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। এসব ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসে অসংখ্য মানুষ।

কিন্তু ব্যয়বহুল হওয়ায় দরিদ্র রোগীদের হিমশিম খেতে হয়। ডাক্তার দেখানো থেকে শুরু করে মেডিকেল টেস্ট পর্যন্ত এই ব্যয় বহন করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। ফলে কখনো অন্যের কাছ থেকে ধার নিয়ে, আবার কখনো পরিবারের সম্পদ বিক্রি করে তারা চিকিৎসা করে। এভাবে চিকিৎসা ব্যয় মানুষের আর্থিক সামর্থ্যকে সীমাবদ্ধ করছে। এ বাস্তবতায় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চিকিৎসা ব্যয় কমাতে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।

অলোক আচার্য : শিক্ষক ও মুক্তগদ্য লেখক

sopnil.roy@gmail.com

 

চিকিৎসা ব্যয়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম