Logo
Logo
×

অল্পকথা

চাষ করুন ছাদ ও পতিত জমিতে

Icon

মো. বশিরুল ইসলাম

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

করোনা মহামারি আর যুদ্ধের সংকটে সাড়ে তিনটি বছর পার করা এই পৃথিবীর চলতি বছরটাও যে অর্থনৈতিকভাবে ভালো যাবে না, সেই পূর্বাভাস বিশ্ব সংস্থাগুলো দিয়ে আসছে। সেই আশঙ্কায় দেশে দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সঞ্চয়ের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারবার সতর্ক করে আসছেন দেশবাসীকে। সত্যি সত্যি যদি তেমন বিপদ আসন্ন হয়, তা সামাল দিতে আমরা কতটা প্রস্তুত, সেই প্রশ্নও সামনে আসছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে সরকার ও নীতিনির্ধারকরা বিভিন্ন সময় দাবি করে এসেছেন। এ বিষয়ে তর্ক না করে আমাদের বুঝতে হবে, এ দেশ অনেকটাই বিশ্ববাজারের ওপর নির্ভরশীল। তাই বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি কিছুটা ব্যাহত হলেই তা দেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ইতোমধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে খাদ্য উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে। সেজন্য চাষের আওতায় আনা হচ্ছে অনাবাদি জমি। একই সঙ্গে এক ফসলি জমিকে দুই বা তিন ফসলি জমিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাছাড়া কম সময়ে ফসল ঘরে তোলা যায়-এমন নতুন জাত উদ্ভাবনের বিষয়ও বিবেচনায় আনা হয়েছে।

খাদ্যনিরাপত্তার অনিশ্চয়তা বাড়ির পাশে পড়ে থাকা জমিতে আবাদ এবং ছাদকৃষির বিষয়টি সামনে এনেছে। সরকারও পতিত জমি খুঁজে চাষ শুরুর কার্যক্রমে নেমে পড়েছে। খাদ্য সংকট মোকাবিলায় দেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শহরাঞ্চলের মানুষ যেন ছাদকৃষিতে বেশি মনোযোগী হয়, সেই বিষয়েও তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন। ছাদকৃষি সম্প্রসারিত হলে সেখান থেকে উৎপাদিত পণ্য একদিকে যেমন মানুষের খাদ্যের চাহিদা মেটাবে, তেমনই তা পরিবেশকে বাস উপযোগী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বুয়েটের বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় ১৩ লাখ, চট্টগ্রামে ৩ লাখ ও সিলেটে ১ লাখ বহুতল ভবন রয়েছে। ঢাকা শহরের ৭০ শতাংশ জায়গা দখল করে আছে ফাঁকা ছাদ। এই ছাদগুলোকে অনায়াসেই সবুজ করা যায়। আর তাতে নগরীর প্রতিটি বাড়ির ছাদ হয়ে উঠতে পারে একখণ্ড সবুজ বাগান। সঠিক পরিকল্পনা থাকলে ছাদের বাগান থেকে পারিবারিক ফলমূল, শাকসবজির চাহিদা মিটিয়ে আয় করাও সম্ভব। যাদের বাড়ি আছে, তারা দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে সামান্য সময় ব্যয় করেই গড়ে তুলতে পারেন একটি সবুজ সুন্দর ছাদবাগান। ছাদবাগানের কোনো নীতিমালা নেই। আশার কথা হলো, বাসাবাড়ির ছাদে বাগান করলে ১০ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের ঘোষণা দিয়েছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, যদিও নাগরিকরা এখনো পাচ্ছে না এ করছাড়। ভবিষ্যতে ওই ঘোষণা বাস্তবায়ন করা হবে, এটাই প্রত্যাশা।

কৃষিবিদ মো. বশিরুল ইসলাম : উপপরিচালক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম