ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা
দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন
সব ডিসিকে মনিটরিংয়ের নির্দেশ
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পেঁয়াজের বাজার আগামী ৪-৫ দিন পর্যবেক্ষণে থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী দাম না কমলে আমদানির অনুমতি দেবে সরকার। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আমদানির জন্য ২৮০০ আবেদন জমা পড়েছে। এর ১০ শতাংশ অনুমোদন দিলে শুধু মূল্য কমবে না, বাজারে ধস নামবে। তবে বাজার ধস আমরা চাই না। চাই স্বাভাবিক নিয়মে পেঁয়াজের মূল্য কমবে। রোববার জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে তিনি নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, মূল্য কমাতে এই মুহূর্তে আমদানি শুল্ক কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
প্রতি কেজি পেঁয়াজ এখন সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই যৌক্তিক নয় বলে মনে করছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। এছাড়া ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর ও সব জেলা প্রশাসকদের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাজার পরিস্থিতি তীক্ষ্ণভাবে নজরদারি করা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা আরও বলেন, গত ৭ থেকে ১০ দিন ধরে দেখা যাচ্ছে পেঁয়াজের মূল্যে ঊর্ধ্বগতি। তবে উৎপাদন বাম্পার হওয়ায় পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। আকস্মিক এই মূল্যবৃদ্ধির ওপর নজর রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমদানির জন্য ২৮০০ আবেদন জমা পড়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। তবে মূল্য প্রয়োজন অনুযায়ী না কমলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। আমাদের জানামতে স্থলবন্দরের ওই পারে প্রচুর পেঁয়াজ মজুতও করা হয়েছে। সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কয়েকদিন বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৪-৫ দিন দেখা হবে। এই সময়ে বাজারে মূল্য না কমলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। মূল্যবৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ আছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টি, মৌসুমের শেষ সময় মূল্যবৃদ্ধির কারণ।
এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে বর্তমান ৩ লাখ ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ মজুত আছে। এর সঙ্গে চলতি মাসে আরও ৮৫-৮৭ হাজার টন এবং আগামী মাসে ২ লাখ ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ মজুতের তালিকায় যোগ হবে, সেটি পর্যায়ক্রমে আরও বাড়বে। তথ্য অনুযায়ী পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। বরং গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে উৎপাদন বেশি হবে। এরপরও এভাবে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কারণ নেই বলে যোগ করেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি আরও বলেন, যে কারণে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসকদের বাজার মনিটরিংয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি চলতি সপ্তাহের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।
পেঁয়াজের মূল্য বাড়িয়ে বাজার জিম্মি করে প্রায় দেড়শ থেকে দুশ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর ব্যর্থতা কার, দায় কার-এ প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এ সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় বাস করে না। দায় মিডিয়ার ওপরেও পড়ে। মিডিয়া সিন্ডিকেট দেখিয়ে দিতে পারলে সরকারের সক্ষমতা দিয়ে ঠিক করে ফেলবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, মূল্য কমানোর জন্য এই মুহূর্তে শুল্ক হ্রাস করার কোনো পরিকল্পনা নেই সরকারের। আমরা আমদানির অনুমোদন দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
