|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সোহেল সাহেবের সমস্যাটা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই জন্য তিনি ঠিকমতো অফিসে যেতে পারেন না। ফলে তিনি ভয়ে থাকেন কোন সময় তার চাকরিটা চলে যায়। সোহেল সাহেবের এই সমস্যাটা হচ্ছে কোষ্ঠ পরিষ্কার না হওয়া। তিনি টয়লেটে যান, টয়লেট করেন কিন্তু একটু পরেই টয়লেট আর হয় না। মনে হয় কিছু একটা এসে পায়ুপথের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি নানাভাবে কসরত করেন। এদিক-ওদিক চাপ দেন, তারপর আস্তেধীরে একটু একটু করে কোষ্ঠ পরিষ্কার হয়। এতে তার দীর্ঘ সময় লাগে, ফলে অফিসে যেতে দেরি হয়, এছাড়াও নানা পারিবারিক সমস্যা তৈরি হয়। সোহেল সাহেবের মলত্যাগের এই সমস্যার নাম Obstructed Defecation
Syndrome (ODS) বাংলায় যাকে বলা যায় বাধাগ্রস্ত মলত্যাগ। এর ফলে মলাশয় (Rectum) মল এসে থাকলেও সেই মল আর বের হতে চায় না, মনে হয় কোথাও যেন আটকে যাচ্ছে। এতে মলত্যাগে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়, অনেকের সারা শরীরে জ্বালাপোড়া করতে থাকে, পেটে অস্বস্তি থাকে এবং রোগী সারাদিনই অস্বস্তির মধ্যে দিন কাটান। কারণ কোষ্ঠ পরিষ্কার না হওয়ার কারণে তার সব সময় শরীরের অস্বস্তি থেকেই যায়।
ODS বা বাধাগ্রস্ত মলত্যাগ একটি জটিল রোগ। এই রোগের রোগী যখন মলত্যাগের জন্য চাপ দেন তখন রেকটাম বা মলাশয়টি ভাঁজ হয়ে যায় এবং সেই ভাঁজ মলদ্বারের পথটি আটকে দেয় ফলে কোষ্ঠ আর পরিষ্কার হয় না। এটাকে বলা হয় Rectal Intussu
sceptions. এছাড়াও আরও কয়েক মেকানিজমে বাধাগ্রস্ত মলত্যাগ রোগটি হয়। পূর্বে এই রোগটি যথাযথভাবে নির্ণয় করা যেত না। ফলে চিকিৎসাও আবিষ্কৃত হচ্ছে। সর্বাধুনিক যে পদ্ধতিতে আমরা বর্তমানে অপারেশন করছি, এই অপারেশনটির জন্য আর পেটে কাটাছেঁড়া করতে হয় না। পায়ুপথ দিয়েই মেশিন ঢুকিয়ে এই অপারেশন করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও আমরা এই অপারেশন করছি নিয়মিত, যার সাফল্যের হার বিশ্বের অন্য দেশের সমতুল্য।
অনেকেই পায়ুপথের রোগ চেপে রাখেন, মনে করেন বিষয়টি প্রকাশ করা লজ্জার কথা। কিন্তু কথাটি সত্য নয়, পায়ুপথের রোগ অন্য অঙ্গের রোগের মতোই। এতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণ করে সুন্দর জীবনযাপন করা সম্ভব।
অধ্যাপক ডা. এসএমএ এরফান
বাংলাদেশের পাইয়োনিয়ার কোলোরেকটাল সার্জন
জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল
মোবাইল ফোন : ০১৮ ৬৫ ৫৫ ৫৫ ১১।
