নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে দুই নেতার পালটাপালটি দাবি
বিএনপির প্রার্থী মাসুদ নাকি সাখাওয়াত?
আমির হুসাইন স্মিথ, নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে মনোনয়ন পাওয়ার দাবি করেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। শুক্রবার রাতে ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমান। আমাকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মনোনীত করার জন্য।’ অপরদিকে বিএনপি থেকে আগে মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অফিশিয়াল নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত দলের প্রার্থিতা অপরিবর্তিত রয়েছে। কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।’ এ নিয়ে শনিবার দিনভর বিএনপির নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। তাদের প্রশ্ন-তাহলে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী কে? জানা গেছে, ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় বিএনপি সারা দেশে ২৩৬ প্রার্থীকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়। সেই তালিকায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপিতে সদ্য যোগ দেওয়া মডেল ডি ক্যাপিটাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ক্রীড়া সংগঠক মাসুদুজ্জামান মাসুদের নাম ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু মাসুদুজ্জামানের নাম ঘোষণার পরপরই বিএনপির অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী চার প্রার্থী ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার বিপক্ষে মাঠে নামেন। এরা হলেন-নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম ও প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল। ১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মাসুদুজ্জামান নিরাপত্তা, পারিবারিক চাপসহ পারিপার্শ্বিক কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই আকস্মিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় নেতারা নাখোশ হন মাসুদুজ্জামানের ওপর। এদিকে প্রেস কনফারেন্স করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় মাসুদুজ্জামানের অনুগত কর্মী ও সমর্থকরা প্রেস ক্লাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাকে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আনুরোধ জানান। দুদিন পর মাসুদুজ্জামান আবার নির্বাচন করার ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত সাত্তার পাটোয়ারী ফোন করে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আমাকে মনোনীত করা হয়েছে। মনোনয়ন ফরমের রশিদ আছে আমার কাছে। তিনি শনিবার দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল বলেন, দল থেকে মনোনয়ন পরিবর্তন করে অন্য কাউকে দেওয়া হয়েছে এমন কোনো খবর আমার জানা নেই।
আরেক মনোনয়নপ্রতাশী আবুল কালাম বলেন, বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তন করা হয়েছে বলে খবর প্রচার করা হচ্ছে। তবে অফিশিয়ালভাবে কিছু জানতে পারিনি। আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, সবাই যেমন শুনছেন মনোনয়ন পরিবর্তন হয়েছে, ঠিক আমিও শুনেছি। তবে বিএনপি থেকে অফিশিয়ালভাবে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এ বিষয়ে মাসুদুজ্জামান মাসুদ যুগান্তরকে বলেন, সকালে আমি ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছি সেটাই আমার বক্তব্য। বিএনপির দপ্তর বা কেন্দ্রীয় কোনো নেতা অফিশিয়ালভাবে মনোনয়ন পরিবর্তন করা হয়েছে এমন কোনো কিছু আমাকে জানায়নি।
এ ব্যাপারে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমকে জানান, প্রার্থী তালিকায় কোনো সংযোজন বা বিয়োজন হলে তা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে। আগামী সোমবার বিএনপির সর্বোচ্চ ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে এসব বিষয়ে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
ইনসাফের মায়ের মৃত্যু হয়েছে : এদিকে আবু আল ইউসুফ খান টিপু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন-ইনসাফের মায়ের মৃত্যু হয়েছে! যেখানে ইনসাফ নেই, সেখানে বলার কিছু থাকে না। যে কোনো স্থানে একজনই সব কিছু বারবার পাবে, আর অন্যরা আঙুল চুষবে । মেয়র প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল, এমপি প্রার্থী দেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হলেও তা ভুল হবে না। ত্যাগ ও যোগ্যতা একজনেরই? বাকিরা কলুর বলদ। গাধার মতো খাটবে একজন, আর ফল দেওয়া হবে আরেকজনকে।
