Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

আলতাফ মাহমুদের স্মরণসভায় বক্তারা

সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাংবাদিক সমাজকে যে কোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সব ধরনের মতভিন্নতা দূর করে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অগ্রজদের অবদান খাটো না করে তাদের ভালো গুণগুলোকে গ্রহণ করতে হবে। আপসহীন সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের সততাকে গ্রহণ করে সাংবাদিক সমাজকে এগিয়ে যেতে হবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবে নন্দিত সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদের স্মরণসভায় রোববার এমন আহবান জানান সাংবাদিক নেতারা।

স্বাধীনতার চেতনার সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন ইকবাল সোবহান চৌধুরী। সভা পরিচালনা করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদ, সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভুঁইয়া, ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কাজী রফিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শাহেদ চৌধুরী, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব আবদুল মজিদ, সাংবাদিক নেতা জাকারিয়া কাজল, রফিকুল ইসলাম রতন, আতিকুর রহমান খান, তরুণ তপন চক্রবর্তী, সুভাস চন্দ্র বাদল, আক্তার হোসেন, শেখ মামুনুর রশীদ প্রমুখ।

যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, পরম শ্রদ্ধেয় আলতাফ মাহমুদ ছিলেন সাংবাদিকদের রুটি-রুজি আন্দোলনের এক আপসহীন নেতা। তার প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। আর এটা শুধু তার সঙ্গে আমার পেশাগতই নয়, ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও নেতৃত্বের কারণেও এই দায়বদ্ধতা। আমার এই দায়বদ্ধতা গোটা সাংবাদিক সমাজের প্রতি। এটা আমি ধারণ করি, লালন করি। আমি বিশ্বাস করি সাংবাদিক সমাজের নেতৃত্ব, রুটি-রুজির সংগ্রামে যারা আত্মনিয়োগ করেছেন, জীবনের অনেকটা সময় পার করেছেন, তাদের সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। আমি স্মরণ করি দৈনিক ইত্তেফাকের গোলাম সারওয়ার, হাবিবুর রহমান মিলন, শফিকুর রহমান, ইয়াছিন ভাই, আবুল কালাম আজাদ ভাই, বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, ডিইউজে সভাপতি আবু জাফর সূর্য, সংবাদের বজলু ভাই, সন্তোষ গুপ্ত, নাজমুন নাহার নিনি, বাংলার বাণীর আজিজ মিসির ভাই, মানিক ভাই, ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ ভাই, নেতা শাহজাহান মিয়া, আতিক ভাই, হাজী জহিরসহ যাদের নাম এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না তাদের সবাইকে। সবার প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাদের কথা মনে হলে মাঝে মাঝে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। আমরা কি তাদের প্রতি সঠিকভাবে সম্মান দেখাতে পেরেছি? সাংবাদিকদের যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে ওপরে ওঠার পরামর্শ দিয়ে সাইফুল আলম বলেন, অন্য উপায়ে ওপরে ওঠার প্রবণতা আমাদের ছাড়তে হবে। সহমর্মিতা ও সহযোগিতার সঙ্গে কাজ করার মনমানসিকতা তৈরি করতে হবে। আজ সাংবাদিকরা আর্থিক দিক থেকে ভালো নেই। ভালোবাসা, মমতা ও সহমর্মিতা কমে গেছে। তবু আলতাফ ভাইয়ের শুরু করা সাংবাদিকদের রুটি-রুজির সংগ্রাম ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিতে হবে।

মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, আলতাফ মাহমুদ আমার নেতা ছিলেন। তার সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। কিন্তু তিনি কখনও কোনো বিদ্বেষমূলক কথা বলেননি। আর এখনকার নেতাদের জ্ঞানের বহর দেখলে লজ্জা পেতে হয়। তাদের কেউ কেউ ওয়েজবোর্ড বোঝেন না। ইনক্রিমেন্ট, গ্র্যাচুইটি কি জানেন না কিন্তু নির্বাচন এলেই বড় বড় পদে নির্বাচন করেন। তাদের কেউ কেউ ভোটের ঠিকাদার। আলতাফ ভাই তেমন নেতা ছিলেন না। তাই আলতাফ ভাইয়ের সততা গ্রহণ করে আমাদের অধিকার আদায় করতে হবে।

আলতাফ মাহমুদের মতো সাংবাদিক নেতার এখন বড়ই অভাব- এমন মন্তব্য করে সভাপতির বক্তব্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আলতাফ মাহমুদকে তার সততা, আদর্শ ও যোগ্যতা নেতার আসনে বসিয়েছে। অজানা এক গ্রাম থেকে আসা এই সাংবাদিক নেতার মৃতদেহ মর্যাদার সঙ্গে উড়োজাহাজে চিরশয়ানে গেছে- এটাই তার অর্জন।

ইকবাল সোবহান বলেন, আলতাফ মাহমুদসহ যেসব সাংবাদিক নেতা মারা গেছেন তারা সবাই স্মরণীয়। তারা সততা ও আদর্শের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে সাংবাদিকদের অধিকারের আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তাদের অবদান স্মরণে রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, আদর্শের সংগ্রাম এখনও চলছে। আমরা মানসিকতার উন্নয়ন ঘটাই, যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে চলতে পারি। যে যেখানেই নেতৃত্ব দেন এই ফোরামকে কেউ অবজ্ঞা করবেন না। আসুন প্রতিজ্ঞা করি জীবিতকালে কাউকে আঘাত না করি। মৃত্যুর পর যাতে অনুশোচনা করতে না হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম