জাতীয় সামার অ্যাথলেটিক্স
হার্ডলসে সেরা তানভীর রোকসানা
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শেষ দুটি ধাপ পেরুতে গিয়ে পায়ের ছোঁয়ায় হার্ডল পড়ে যায় তানভীরের। ধারণা করা হয়েছিল ডিসকোয়ালিফাই হয়ে গেছেন সেনাবাহিনীর হার্ডলার তানভীর। কিন্তু শনিবার জাজদের বিচারে তিনিই স্বর্ণজয়ী। ব্যাখ্যা হলো, হার্ডলস ইচ্ছা করে ফেলেননি তানভীর। তাই ১১০ মিটার হার্ডলসে ১৪.৭০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দৌড় শেষ করা এই অ্যাথলেটই স্বর্ণজয়ী। এ নিয়ে তিনটি স্বর্ণ জিতলেন তানভীর। সব বাধা পার করে একই সংস্থার নারী হার্ডলার রোকসানা বেগম ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় স্বর্ণ জিতলেন। ১০০ মিটার হার্ডলস পেরোতে সময় নেন ১৫ সেকেন্ড। ট্র্যাকের মতো জীবনেও অনেক বাধা পেরিয়ে আসতে হয়েছে নোয়াখালীর মেয়ে রোকসানাকে। কোচ রফিকউল্লাহ মিলনের কাছে অ্যাথলেটিক্সে হাতেখড়ি তার। শুরুতে লংজাম্পে খেললেও পরে কোচের পরামর্শে চলে আসেন হার্ডলসে। তার কথা, ‘রফিক স্যার বলেছিলেন, লংজাম্প নয়, তুই হার্ডলস কর। কারণ এখানে ফাঁকা রয়েছে।’ বাধার সৃষ্টি এরপরই। নোয়াখালীতে অ্যাথলেটিক্স শিখে বাড়ি ফিরতে কখনো সন্ধ্যা নেমে আসত। তখন আশাপাশের লোকজন নানা কথা বলত। রোকসানা বলেন, ‘মানুষের অনেক কথা সইতে হয়েছে আমাকে। আমি অ্যাথলেটিক্স খেলতে গেলে মা-বাবাকে অনেক কথা শুনতে হতো।’
রোকসানার বাবা মাইক্রোবাসের ড্রাইভার ছিলেন। এখন অবশ্য কাজ করতে পারেন না। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে রোকসানা মেঝ। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট ভাই এখনো পড়াশোনা করে। সেনাবাহিনীতে চাকরি করে যে বেতন পান, তা দিয়েই সংসারে সহযোগিতা করেন রোকসানা।
গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার স্বর্ণপদক জিতেছিলেন রোকসানা। না খেললে কী করতেন? আচমকা এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে ঘাবড়ে যাননি সেনাবাহিনীর এই হার্ডলার। তার সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘না খেললে বাবা বিয়ে দিয়ে দিতেন। এটাই গ্রামের নিয়ম।’ এসএ গেমসে পদক জেতাই লক্ষ্য রোকসানার।
সেনাবাহিনীর আন্তঃইউনিট থেকে শুরু তানভীর ফয়সালের। সেখান থেকে আন্তঃবিভাগীয় পর্যায়ে খেলে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে এসেছেন। ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো স্বর্ণ জিতলেন। আগের দুটি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপেও জিতেছেন। এবার জিতলেন সামারে। ২০২২ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা শুরু করা তানভীরের তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। বিষয়টি স্বীকার করলেন তিনি, ‘আমার মনে হয় ১১০ মিটার হার্ডলসে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী আমার নেই।’ সংসারে কোনো সংকট না থাকলেও প্রচার না পাওয়ার কষ্ট তানভীরের অন্তরে, ‘আমার সতীর্থরা যখন স্প্রিন্টে খেলে প্রচারের আলোয় আসছে, তখন আমাদের দিকে তাকায় না কেউই। এটাই আমার কষ্ট।’
