মেঝেতে বসেই খেতে হয়েছে অতিথিদের
কপ৩০’র প্রথমদিনে হাজার সমস্যা
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সংগৃহীত ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
এবারের কপ৩০ সম্মেলন ঘিরে সমালোচনা যেন পিছু ছাড়ছে না ব্রাজিলের। জাতিসংঘের এ জলবায়ু সম্মেলনের প্রথম দিনটিই ছিল ‘হাজার সমস্যা’য় জর্জরিত। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাস্তায় তৈরি হয় তীব্র যানজট। এরপর প্রবল বৃষ্টিতে সম্মেলনস্থলের বেশকিছু জায়গায় পানি জমে যায়। প্রচণ্ড বৃষ্টির শব্দে ব্যাহত হয় সংবাদ সম্মেলনও । জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি অভিযোগ করেন, তিনি প্রশ্নগুলো ঠিকমতো শুনতে পাননি। এছাড়াও খাবার বিতরণের জায়গাতেও পড়ে লম্বা লাইন পড়ে যায়। ২০০ দেশের ৫০ হাজার অতিথির বিরাট এ আয়োজনে চেয়ার সংকট পড়ায় মেঝেতে বসেই খেতে বাধ্য হন অনেকে! এপি।
কাঠামোগত সমস্যাও চোখে পড়ে সম্মেলনজুড়ে। কিছু প্যাভিলিয়নের কাজ প্রথমদিনেও শেষ হয়নি। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে মাইক্রোফোন ও প্রজেক্টর ব্যবহার করা যায়নি। এছাড়াও গরমে এসি নষ্ট থাকায় হাত পাখা ব্যবহার করতে দেখা গেছে অতিথিদের। এর আগে সকালে বেলেম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণসামগ্রীর এলাকায় আগুন লাগে। তবে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং বিমান চলাচলে কোনো প্রভাব পড়ে না।
‘বুলডোজার সংস্কৃতি’ রোধের আহ্বান : কপ৩০ নিয়ে সমালোচনার আরও একটি কারণ হলো সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তুর সঙ্গে তাদের কার্যকলাপের বিপরীত্য। আদিবাসীর ভাষায়-এটি হলো ‘বুলডোজার সংস্কৃতি’। কেননা এই সম্মেলনের জন্য অ্যামাজনের ১ লাখ গাছ কাটা হয়েছে। এমনকি কিয়োটো ও প্যারিস চুক্তির পরও কৃষি, পশুপালন ও খননভিত্তিক শোষণ বন্ধ হয়নি। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত চার দশকে অ্যামাজন হারিয়েছে প্রায় ৮ কোটি ৮০ লাখ হেক্টর জীববৈচিত্র্য। এই ক্ষয় বৈশ্বিক উষ্ণতা ও চরম আবহাওয়ার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। ফলে আগের মতো এবারও সম্মেলনের বড় প্রশ্ন বিশ্বাসযোগ্যতা। কারণ, কপ সম্মেলনে করপোরেট লবিস্টদের প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। দুবাইয়ে কপ২৮-এ রেকর্ড ২,৪৫৬ জন জীবাশ্ম জ্বালানি ও ৩০৮ জন কৃষি ব্যবসায় লবিস্ট অংশ নিয়েছিলেন। নাগরিক সংগঠনগুলোর মতে, এই প্রভাব প্রকৃত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে। ফলে অ্যামাজনের ৪০০ জনগোষ্ঠী তাদের দাবি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন-ভূমির সুরক্ষা ও রক্ষার নিশ্চয়তা, সরাসরি অর্থায়ন ও স্বায়ত্তশাসন এবং তাদের প্রাচীন জ্ঞানকে জলবায়ু সমাধানের কেন্দ্রে স্থান দিতে হবে।
বন ধ্বংস ছাড়াই পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন : পরিবেশ রক্ষায় ইতোমধ্যেই অন্যন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে আর্জেন্টিনার একটি কোম্পানি। বন ধ্বংস না করেই জফরান নামক কোম্পানিটি পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন করছে। আদিবাসীদের সঙ্গে স্থানীয়রা মিলে প্রকৃতি ধ্বংস না করেই কারব ফল সংগ্রহ করছে যা বার এবং কুকিতে ব্যবহার করা হয়। এ বিষয়ে জাফরানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিতো আনেলো বলেন, ‘সমাধান আসে সম্মিলিত পদক্ষেপ থেকে। সেই পদক্ষেপ শুরু হয় সবাইকে শোনার মধ্য দিয়ে-আদিবাসী জনগোষ্ঠী, অ্যামাজন, সবাইকে বুঝতে হবে। একক পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়। আমাদের একত্র হতে হবে, স্বচ্ছ হতে হবে, সহযোগিতা করতে হবে তখনই আসল পরিবর্তন সম্ভব।’
