জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার্থীদের বাংলা (প্রথমপত্র)
ড. সনজিত পাল, সিনিয়র শিক্ষক, সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রার্থনা
-কায়কোবাদ
কবি কায়কোবাদের (১৮৫৭-১৯৫১) প্রকৃত নাম মুহম্মদ কাজেম আল কুরায়শী। তিনি ডাক বিভাগে চাকরি করেছেন। ছেলেবেলা থেকেই কবিতা লেখায় তার হাতেখড়ি হয়। তারপর আপন স্বভাবে তিনি ক্রমাগত লিখে গেছেন। তার রচিত ‘মহাশ্মশান’ বিখ্যাত মহাকাব্য। ‘প্রার্থনা’ কবিতাটি কবির ‘অশ্রুমালা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত। কবি এ কবিতায় স্রষ্টার অপার মহিমার কথা বর্ণনা করে স্রষ্টার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা জানিয়েছেন। কবি ভক্তি বা প্রশংসা করতে না জেনেও কেবল চোখের জলে নিজেকে নিবেদন করেন। বিপদে, আপদে, সুখে, শান্তিতে সব সময় তিনি বিধাতার কাছ থেকে শক্তি কামনা করেন। গাছে গাছে পাখি, বনে বনে ফুল সবই বিধাতাকে স্মরণ করে। তার অফুরন্ত দয়ায় জগতের সব কিছু চলছে। তার কাছেই সবাই সাহায্য প্রার্থনা করে। তার অপার করুণা লাভ করেই বিশ্ব সংসারের প্রতিটি জীব ও উদ্ভিদ প্রাণধারণ করে আছে। তার দয়া ছাড়া আমরা এক মুহূর্তও চলতে পারি না। সুখে-দুখে, শয়নে-স্বপনে তিনি আমাদের একমাত্র ভরসা। আমরা রিক্ত হস্তে পরম ভক্তি ভরে তার কাছে প্রার্থনা জানাই : হে প্রভু, আমাদের দেহে ও হৃদয়ে শক্তি দাও। আমরা যেন তোমার আরাধনায় নিজেকে নিবেদন করতে পারি।
‘প্রার্থনা’ কবিতার যে দিকগুলো ভালো করে পড়তে হবে
‘প্রার্থনা’ কবিতায় কবি মূলত স্রষ্টার কাছে আত্মসর্মপণ করেছেন। কীভাবে স্রষ্টার আরাধনা করতে হয় কবি তা জানেন না। তাই রিক্ত কবি নিজের চোখের জল স্রষ্টার চরণে নিবেদন করেছেন। কবি স্রষ্টাকে নিজের জীবন-পথের সম্বল মনে করেন বলেই সুখে-দুঃখে, বিপদে-সম্পদে তিনি স্রষ্টাকে সর্বদা স্মরণ করেন। এক পলকের জন্যও তিনি স্রষ্টাকে ভুলে যাননি। প্রকৃতিতে বনে বনে বিভিন্ন জাতের পাখি স্রষ্টার গুণগানে মত্ত থাকে। গাছের শাখায় শাখায় ফুল-ফল যেন স্রষ্টার আশীর্বাদ বা প্রসাদ। কবি বসন্তের বায়ুকে স্রষ্টার নিশ্বাসের সঙ্গে তুলনা করে তার দয়া ভিক্ষা করেছেন। স্রষ্টার নামে অশেষ মঙ্গল বিধায় কবি যে কোনো বিপদে স্রষ্টাকে স্মরণ করলে তার হৃদয়ের শোক রূপ অনল তিরোহিত হয়। প্রার্থনা কবিতার যে দিকগুলো ভালো করে পড়তে হবে তা তুলে ধরা হলো। কবি যে কারণে নিজেকে নিঃসম্বল বলেছেন, তিনি কেন স্রষ্টাকে এক পলকের জন্য ভুলেন না, স্রষ্টাকে পথের সম্বল বলা হয়েছে যে কারণে, পাখিরা স্রষ্টার গুণগানে মত্ত থাকে যে কারণে, কবি স্রষ্টার প্রসাদ বলতে যা বুঝিয়েছেন, স্রষ্টার নামের মহিমা কেমন, কবির শোকানল কীভাবে নিভে, কবি স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করেছেন যে কারণে ইত্যাদি।
