Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

শতফুল ফুটতে দাও

কোনো দেশেরই পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করা উচিত নয়

Icon

ড. মাহবুব উল্লাহ্

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কোনো দেশেরই পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করা উচিত নয়

গত ২১ আগস্ট সামা (Samaa) টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ বলেছেন, ভারত যদি পাকিস্তান আক্রমণ করে, তাহলে এটা পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে। এর পরদিন তিনি আরও বলেছেন, পাকিস্তানের কাছে বেশ কিছু ছোট পারমাণবিক বোমা আছে। এ বোমাগুলো একটি সুনির্দিষ্ট এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে। অর্থাৎ ক্ষুদ্র শক্তির এই পারমাণবিক বোমাগুলো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টি করবে না।

পাকিস্তান একটি মুসলিম রাষ্ট্র। মুসলিম জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল। ১৯৪০-এর দশকে পাকিস্তানের দাবি যখন তুঙ্গে ওঠে, তখন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন, ভারতবর্ষে দুটি জাতি বাস করে, মুসলমান ও হিন্দু। পাকিস্তানের লড়াই হল মুসলমানদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আদায়ের। এটাই দ্বি-জাতিতত্ত্ব। ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে দুটি পৃথক স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পেছনে মূল যুক্তি ছিল ভারতের মুসলমানদের জন্য একটি আবাসভূমি প্রতিষ্ঠা করার দাবি।

এ দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য বলা হল ভারতের যেসব অঞ্চলে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সেসব অঞ্চল নিয়েই পাকিস্তান গঠিত হবে। হিন্দু-মুসলমানের রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার মধ্য দিয়েই দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠিত হয়। অতি অল্প সময়ের মধ্যে লাখ লাখ মানুষ তাদের দীর্ঘদিনের আবাসস্থল পরিবর্তন করে। অনেক মুসলমান পাকিস্তানে আসে এবং অনেক হিন্দু ভারতে মাইগ্রেট করে। এখনও ভারতে ২৫ কোটির মতো মুসলমান বসবাস করে। তাদের কাছে ভারতই তাদের প্রিয় মাতৃভূমি। তবে ভারতে বসবাসরত মুসলমানদের মধ্যে ভিন্ন চিন্তা-ভাবনাও পরিলক্ষিত হয়। কাশ্মীরের জনগণ আজাদি স্লোগান তুলে ভারত রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। ‘আজাদি’ বলতে তারা কী বোঝায় সেটা কখনই পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। নরেন্দ্র মোদির সরকার কাশ্মীরের পৃথক মর্যাদা নিশ্চিত করে ভারতীয় সংবিধানে যে ৩৭০ নম্বর ধারাটি যুক্ত করা হয়েছিল, তা বাতিল করে দেয়।

ফলে কাশ্মীরের জনগণের মধ্যে তীব্র হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এ ক্ষোভ ভারতের বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও পছন্দ করেনি। তারাও সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এখন প্রশ্ন হল, পাকিস্তান যদি ভারতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে তাহলে শুধু হিন্দুরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, মুসলমানরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভারতের প্রত্যেকটি শহরে মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী মুসলমানদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় তা বিবেচনায় রেখে বোমা নিক্ষেপ করবে। কিন্তু এ দাবির সারবত্তা নেই বললেই চলে। যেখানেই বোমা নিক্ষেপ করা হোক না কেন, কিছু মুসলমান তো অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আণবিক বোমা ব্যবহারে ঘোষণাটি এসেছে রেলমন্ত্রীর কাছ থেকে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নন, প্রতিরক্ষামন্ত্রীও নন, তার ঘোষণাকে কতটুকু গুরুত্ব দেয়া যায় সেটা ভাবার বিষয়। তবে যুদ্ধ-বিগ্রহের প্রশ্নে উপযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কিছুটা হলেও তথ্যমন্ত্রী। তাই রেলমন্ত্রীর এ ঘোষণাকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়া ঠিক হবে না। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ ঘোষণাটি কৌশলগতভাবে দেয়া হয়েছে কিনা সেটাও হিসাবের মধ্যে রাখতে হবে।

এখন আমরা পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র সম্পর্কে কিছু আলোচনা করতে পারি। আজকের দুনিয়ায় চার রকমের সমস্যা আছে, যেগুলো সমগ্র দুনিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এগুলো হল পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণ, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্বের প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষয়সাধন এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে মানুষে মানুষে ধনসম্পদ ও জীবনযাত্রায় ভয়াবহ অসাম্য। কেউ কেউ এ সমস্যাগুলোর সঙ্গে আরও দু-একটি সমস্যা যোগ করতে চাইবেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামী মৌলবাদ, ছোঁয়াচে রোগ ছড়িয়ে পড়া, নক্ষত্রপুঞ্জের সঙ্গে পৃথিবীর ধাক্কা লাগা এবং প্রাণিকুল ধ্বংস হয়ে যাওয়া। এ মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী কোভিড ১৯-এর মতো একটি ছোঁয়াচে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।

এর ফলে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটছে এবং বিশ্ব অর্থনীতির চাকা কার্যত রোধ করে দিয়েছে। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমাতে আণবিক বোমা নিক্ষেপ করার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে ১ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। এরপর হাজার হাজার মানুষ আহত হয়, পুড়ে যায় এবং বিকিরণের বিষক্রিয়ার শিকার হয়। এখন পারমাণবিক বোমা অনেক দেশের কাছেই আছে। যদি ভারত ও পাকিস্তান অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়া ও চীনের যুদ্ধ হয় তাহলে এসব রাষ্ট্র পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করতে পারে। তাহলে উপর্যুক্ত দেশগুলোতে তাৎক্ষণিকভাবে কয়েক কোটি মানুষ নিহত হবে। পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের পর মানুষের জন্য আরও ভয়াবহ এবং মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হবে। এ অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলবে। ভারত ও পাকিস্তান যদি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তাহলে পৃথিবীর আবহাওয়ার ওপর অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে।

এ বোমা বিস্ফোরণ থেকে যে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়বে এবং বায়ুমণ্ডল ধূলিকণায় অন্ধকার হয়ে যাবে, তার পরিণতিতে বেশ কয়েক সপ্তাহ সূর্য কিরণের দেখা মিলবে না। ফলে সূর্য কিরণের অভাবে মারাত্মক ধরনের শীত নেমে আসবে। এর ফলে মানুষ, পশুপাখি এবং বৃক্ষরাজি কোনো কিছুই বেঁচে থাকবে না। মারাত্মক খাদ্য সংকট দেখা দেবে। এসব কারণে বিজ্ঞানীরা এ অবস্থাটির নাম দিয়েছেন পারমাণবিক ‘শীত ঋতু’। মানুষের মৃত্যু ঘটবে ক্ষুধা, ঠাণ্ডা, রোগব্যাধি এবং বিকিরণজনিত শারীরিক সমস্যায়। ১৯৯০-এর শুরুতে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর শীতল যুদ্ধের অবসান হয়েছে বলে অনেকেই ভেবেছিলেন। এ সময় পৃথিবী এক মেরুকেন্দ্রিক পৃথিবীতে পরিণত হয়েছিল। এই একটি মেরুতে অবস্থান করছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই ভেবেছিলেন পারমাণবিক বোমার ধ্বংসলীলা থেকে পৃথিবীটা বেঁচে গেল। কিন্তু এ আশা এখন দুরাশায় পরিণত হতে যাচ্ছে। এখন এক মেরুতে অবস্থান করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য মেরুতে অবস্থান করছে রাশিয়া ও চীন। বিশ্ব আবারও পারমাণবিক ধ্বংসলীলার ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে।

১৯৬২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের বিপদ দেখা দিয়েছিল। উইলিয়াম পেরি একটি বই লিখেছিলেন যার শিরোনাম হল My Journey at the Nuclear Brink. পেরি আণবিক যুদ্ধের ওপর একজন বিশেষজ্ঞ। ১৯৬২ সালে উইলিয়াম পেরি প্রতিদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির পারমাণবিক যুদ্ধে কী ঘটতে পারে তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ তুলে ধরতেন। ওই সময় সোভিয়েত রাশিয়া কিউবাতে আণবিক অস্ত্রসজ্জিত মিসাইল ঘাঁটি নির্মাণ করেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুদ্র কমিউনিস্ট দ্বীপ রাষ্ট্র রক্ষা করা। উইলিয়াম পেরি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স ছিলেন।

তিনি পারমাণবিক এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা ইস্যুতে উত্তর কোরিয়া, সোভিয়েত ইউনিয়ন/রাশিয়া, চীন, ভারত, পাকিস্তান, ইরান, ইরাকের সঙ্গে দেনদরবার করেছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইউক্রেন ও কাজাখস্তান সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ দুটি দেশেই সোভিয়েত ইউনিয়নের পারমাণবিক ঘাঁটি ছিল। এ দুটি দেশ থেকে কীভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের ঘাঁটি ভেঙে ফেলা যায় তা নিয়েও উইলিয়াম পেরি দেনদরবার করেছেন।

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা আণবিক বোমা কাদের দ্বারা বিস্ফোরিত হতে পারে সে সম্পর্কে অনুমান করেছেন। এর মধ্যে ৩টি ক্ষেত্রে জড়িয়ে পড়বে রাষ্ট্রশক্তি বা সরকার এবং চতুর্থ ক্ষেত্রে সরকারবহির্ভূত সন্ত্রাসবাদী গ্রুপগুলো। আণবিক আক্রমণ ঘটতে পারে একটি দেশ অন্য একটি দেশের ওপর আক্রমণ করতে গিয়ে। এটি হবে পরিকল্পিত বিস্ময়কর আক্রমণ।

এ ধরনের অকল্পনীয় আক্রমণের লক্ষ্য হবে প্রতিপক্ষের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ সম্পূর্ণভাবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ধ্বংস করে দেয়া। প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রটি এ অবস্থায় পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। শীতল যুদ্ধের সময় এ রকম হামলার ভয় সবসময় ছিল। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন যে পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক হয়ে গিয়েছিল, তা দিয়ে একে অপরকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলতে পারত।

হঠাৎ অচিন্তনীয় আক্রমণের বিপদ থেকে আত্মরক্ষার জন্য আণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। দৃষ্টান্তস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিন ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো হল ভূ-গর্ভস্থ অত্যন্ত শক্তিশালী গুদামের মধ্যে মিসাইলগুলো লুকিয়ে রাখা এবং সেখান থেকে মিসাইলের মাধ্যমে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করা। সাবমেরিন থেকে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করা এবং বোমারু বিমান ব্যবহার করা। সোভিয়েতরা যদি আচমকা আক্রমণ চালায় তাহলে তাদের পক্ষে ভূ-গর্ভস্থ গুদামে মজুদ করা সব পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করা সম্ভব হবে না। মার্কিনিরা প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করার জন্য কিছু ডামি ভূ-গর্ভস্থ গুদাম তৈরি করেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের মিসাইলগুলো সঠিক ও নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে সক্ষম ছিল। যদি ভূ-গর্ভস্থ মজুদের সব ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাবমেরিন এবং বোমারু বিমান ব্যবহারে সক্ষম থাকবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত তত্ত্বে আমরা একটি ধারণা ব্যবহৃত হতে দেখি। এ ধারণাটি হল- Mutually Assured Destruction.

আচমকা হামলার ঘটনা ঘটলে এ পরিস্থিতিতে দু’পক্ষই ধ্বংস হয়ে যেত। বলা হয়, মার্কিন ও সোভিয়েত দু’পক্ষই উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় যে, আচমকা হামলা কারও জন্যই সুখকর নয়। মার্কিনিরা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকির মধ্যে দায়িত্বহীন রাষ্ট্রনেতাদের ক্ষতিকর কার্যকলাপ অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাদের দৃষ্টিতে ইরাকের সাদ্দাম হোসেন, উত্তর কোরিয়ার কিং জন উন এবং জার্মানি, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার নেতাদের কাউকে কাউকে এ দায়িত্বহীন গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত বলে মনে হয়। ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে পারমাণবিক অস্ত্রগুলো ভূ-গর্ভে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এ দুটি রাষ্ট্রের কোনোটিরই মিসাইলবাহী সাবমেরিন নেই। সুতরাং ভারত কিংবা পাকিস্তানের নেতারা আচমকা হামলা করে কোনো পক্ষের পারমাণবিক সক্ষমতাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলার চিন্তা করতে পারে। এ জন্যই ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা হঠাৎ করে বড় ধরনের দুর্ঘটনার জন্ম দিতে পারে।

এ দুটি দেশের মধ্যে কখনও যদি কোনো একটি দেশ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তাহলে ক্ষয়ক্ষতি শুধু দুটি দেশের সীমান্তের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে না। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা এবং মালদ্বীপ পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি এসব দেশ ধূলিকণার দ্বারা সূর্যকিরণ বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার ফলে পারমাণবিক শীত ঋতুর কবলে পড়বে। সুতরাং দায়িত্বশীল বিশ্ব নেতাদের দায়িত্ব হল চরম বিপজ্জনক পারমাণবিক যুদ্ধ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঘটতে না দেয়া। যেসব কারণে এ দুটি দেশ পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে গেছে, সে কারণগুলো দূর করার ব্যাপারে আন্তরিকভাবে যত্নবান হওয়া। মনে রাখতে হবে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পারমাণবিক সংঘাত ঘটলে এর ক্ষতিকর অর্থনৈতিক প্রভাব বাকি দুনিয়ার সব দেশের ওপরই কম বেশি পড়বে।

ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ

কোনো দেশেরই পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করা উচিত নয়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম