Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

বিদেশে যাওয়াটা যেন ‘স্থায়ী’ না হয়

Icon

রাশেদুল ইসলাম

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিদেশে যাওয়াটা যেন ‘স্থায়ী’ না হয়

আমাদের দেশের শিক্ষিত সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মনে করে, এ দেশ বসবাসের উপযোগী নয়; ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বসবাসের জন্য আরও অযোগ্য হয়ে উঠবে। এ ধরনের চিন্তা থেকে তারা স্থায়ীভাবে ভিন্ন দেশে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো উন্নত দেশে ‘সেকেন্ড হোম’ গড়ে তুলেছেন। অনেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন।

আমার চেনাজানা কয়েকজন ইতোমধ্যে দেশের স্থায়ী সম্পদ যা ছিল তা বিক্রি করে সপরিবারে চলে গেছেন। অনেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন; ধীরে ধীরে লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে নিরাপত্তার কথা ভেবে শুধু ছেলেমেয়েদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন। নিজেরা কী করবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে আছেন। এ ধরনের মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়।

ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ সত্যিই একটি বন্ধ্যা ও দুঃখী দেশ। এ দেশে জন্ম নেওয়া অনেক মুসলমান মনে করেছেন, মক্কা-মদিনাই তাদের আসল ঠিকানা। সেখানে জন্ম নিলেই ভালো হতো। সনাতন ধর্মের হিন্দুরা ভেবেছেন গয়া-কাশির কথা। এ দেশের শিক্ষিত শ্রেণির প্রায় সবাই ইউরোপ-আমেরিকায় পাড়ি দেওয়ার জন্য সবসময় দুই পায়ে খাড়া থেকেছেন। শুধু সুযোগের অপেক্ষা! ফলে এ দেশ থেকে সুযোগমতো অন্য দেশে চলে যাওয়ার ঘটনা মোটেও নতুন কিছু নয়। কিন্তু সত্যিকার অর্থে একটি দেশের নাগরিকদের একটি বড় অংশের এ ধরনের পলায়নপর মানসিকতা সেদেশের সত্যিকার উন্নতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসাবে কাজ করে।

যারা নিজেরা স্থায়ীভাবে নিজের দেশ ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবেন, তাদের জন্মভূমির ওপর তেমন দায়বদ্ধতা থাকার কথা নয়। নিজের দেশকে তখন কলোনি রাষ্ট্র মনে হয়। যে কোনোভাবেই অর্থ হাতিয়ে নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ চিন্তার সুবিধা-অসুবিধার কথা আলোচনা করা যেতে পারে।

সুবিধা : ১. নিজে এবং নিজের পরিবার যেহেতু এ দেশে থাকবে না; এক্ষেত্রে দেশ ও দেশের মানুষের ভালো বা মন্দ না ভাবলেও চলে। যে কোনোভাবে যত বেশি অর্থ-সম্পদ নিয়ে অন্য দেশে পাড়ি জমানো যায়, নিজের ভবিষ্যৎ ততই নিরাপদ মনে হতে পারে। ২. আমেরিকা, কানাডার মতো দেশে সবকিছু নিজেদের করতে হয়। কাজের লোক, এমনকি গাড়ির ড্রাইভার পর্যন্ত রাখার কোনো সুযোগ নেই। ফলে এসব কাজ নিজেরা করার কারণে স্বাস্থ্য অনেক ভালো থাকে। আবার স্বাস্থ্য খারাপ বা অসুস্থ হলেও অসুবিধা নেই। স্বাস্থ্যবিমা থাকার কারণে চিকিৎসার জন্য আলাদা কোনো ব্যয় নেই।

৩. আমাদের দেশে কেউ অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়ার ঝামেলা আছে। এতে অর্থ ও সময়ের অপচয় হয়। উন্নত দেশে অসুস্থ বা বিপদে পড়া মানুষকে দেখতে যাওয়ার কোনো ঝামেলা নেই; পুলিশকে ফোন করলেই চলে। ৪. বিদেশে জীবনযাপন নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও শান্তিপূর্ণ। যারা দেশ থেকে সবকিছু নিয়ে বিদেশে স্থায়ীভাবে যেতে চান, তাদের আর্থিক সামর্থ্য আছে। ফলে তাদের সেখানে নিরাপদ, ঝামেলাহীন শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করা সম্ভব হতে পারে। উন্নত দেশে সব সেবাই বলা যায় ইলেকট্রনিক ডিভাইসনির্ভর। ফলে আর্থিক সক্ষমতা থাকলে ঘরে বসেই সব সেবা পাওয়া সম্ভব। উন্নত দেশগুলোতে মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে চাঁদাবাজি বা অনুরূপ কোনো ধরনের অনিয়ম, অন্যায় বা হয়রানি সেখানে নেই বলে ধারণা করা হয়।

৫. বিদেশে এ দেশের একজন স্থায়ী হওয়া মানে সেদেশে বাংলাদেশের একজন প্রতিনিধি থাকা। একজন বাংলাদেশি যখন বিদেশের মাটিতে সুশীল নাগরিক হিসাবে বসবাস করেন, সেদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে শরিক হয়ে সুনাম অর্জন করেন, তখন প্রকারান্তরে সেখানে এ দেশেরই সুনাম হয়। তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের জন্য দাবি আদায়ে ভূমিকা রাখতে পারেন।

যেমন কানাডাপ্রবাসী রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুস সালাম আমাদের জাতীয় মাতৃভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারিকে জাতিসংঘ থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ৬. দেশপ্রেম এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসার বিষয়টি মানসিক। একজন দেশে থেকেও দেশ ও দেশের মানুষকে নাও ভালোবাসতে পারেন। তাই দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসার জন্য দেশেই থাকতে হবে, এমনটি নয়। বিশ্বায়নের এ যুগে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে নিজের দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ব পালন করা সম্ভব।

এখন অসুবিধার কথাগুলো আলোচনা করা যেতে পারে : ১. ‘দেশ বসবাসের অযোগ্য’-এ যুক্তিতে নিজের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া নৈতিকতা ও ধর্মীয় বিধানের পরিপন্থি। কনফুসিয়াসের নীতিশাস্ত্র বা বোখারি শরিফ উভয় ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ‘নিজের জন্য যা পছন্দ করো না, অন্যের জন্যও তা পছন্দ করো না।’ তার মানে আমি নিজের জন্য যদি কোনো জায়গা বসবাসের অযোগ্য মনে করি, তাহলে নিজে ভালো থাকার জন্য সেই জায়গা অন্যের জন্য ছেড়ে যাওয়া ধর্মীয় ও নৈতিক দিক থেকে সমর্থনযোগ্য নয়।

এখানে মহানবির (সা.) উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। নবির (সা.) জন্মভূমি মক্কা তার জন্য বসবাসের অযোগ্য হলে তিনি মক্কা ছাড়তে বাধ্য হন। তিনি মদিনা গমন করেন এবং সেখানে, এখনকার ভাষায়, তার ‘সেকেন্ড হোম’ গড়ে তোলেন। পরে তিনি শুধু তার ‘সেকেন্ড হোম’ মদিনাকে নয়, তার জন্মভূমি মক্কাকেও সবার জন্য বাসযোগ্য শান্তিপূর্ণ নগরীতে রূপান্তরিত করেন। দেশকে ভালোবাসা ধর্মীয় বিধান পরিপালনের একটি অংশবিশেষ। তাই নিজের জন্মভূমি বসবাসের অযোগ্য হলে স্বেচ্ছায় ছেড়ে যাওয়া নয়, সেটি বাসযোগ্য করার দায়িত্ব জন্মভূমির সবার।

২. বাংলাদেশ বসবাসের জন্য নিরাপদ নয় বা ভবিষ্যতে নিরাপদ থাকবে না-এ বিশ্বাসে দেশ ছেড়ে যাওয়া মোটেও যৌক্তিক নয়। কারণ, নিরাপত্তার বিষয়টি স্থায়ী কোনো ধারণা নয়। যে কোনো কারণে নিরাপদ কোনো জায়গা হঠাৎ অনিরাপদ হয়ে উঠতে পারে। বলা হয়ে থাকে, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। কাজেই যেসব পলিসির কারণে বর্তমানে একটি দেশকে দেশত্যাগী মানুষের কাছে নিরাপদ মনে হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই দেশটিই যে তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ হবে না, তার নিশ্চয়তা কী? তখন কী হবে?

৩. নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথা ভেবে দেশ ছাড়া জীবনের চূড়ান্ত চাওয়া হলে সেটা জ্ঞানের অভাবের কারণেও হতে পারে। কারণ জীবনের নিরাপত্তা চাওয়া কখনো জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না। তা-ই যদি হতো, তাহলে মানুষ জেলখানা বেছে নিত। কারণ জেলখানায় একজন মানুষের জীবন সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। আসলে আমাদের সমাজে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কোথাও যৌক্তিকভাবে মানুষের জীবনের লক্ষ্য কী তা বোঝানো হয় না। তাই জীবনের লক্ষ্য হিসাবে কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ অনেক টাকার মালিক ইত্যাদি হতে চান। কিন্তু কেন তারা এসব হতে চান, তা শেখানো হয় না।

এ কারণে পেশায় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা ব্যবসায়ী হয়েও অনেকে আচরণে হয়ে ওঠেন নীতিবিবর্জিত বিবেকহীন মানুষ। যারা বিদেশে ‘সেকেন্ড হোম’ গড়ে তুলে সেখানে স্থায়ী বসবাস করতে চান, তাদের এ দেশে টাকা-পয়সা বা মান-সম্মানের কোনো অভাব নেই। হয়তো মনে মনে অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে থাকেন তারা। যখন টাকা-পয়সা ছিল না, তখন মনে করেছেন টাকা-পয়সা হলেই হবে। এখন টাকা-পয়সা হয়েছে, মানসম্মান হয়েছে; এখন মনে করছেন অধিক নিরাপত্তা থাকা দরকার। সেই নিরাপত্তা পাওয়ার পর তাদের চাওয়ার কী থাকবে? নিশ্চয়ই শান্তি। নিজের ও নিজের পরিবারের জন্য শান্তি।

তার মানে, একজন মানুষের আসল চাওয়া মানসিক শান্তি। নিজের ও আপনজনদের জন্য শান্তি। আমাদের মতো ধর্মবিশ্বাসী মানুষের দেশের মানুষের চাওয়া শুধু যে এ দুনিয়ার শান্তি তা নয়; আমরা পরকালের শান্তিও চাই। এটাই যদি আমাদের আসল চাওয়া হয়, তাহলে পরের প্রশ্ন-শান্তি কি বিদেশে থাকে? কোন কোন বিষয়ের ওপর মানসিক শান্তি নির্ভর করে? তার সবই কি বিদেশে থাকে? বিদেশে স্থায়ী হলে সেগুলো কি পাওয়া যাবে? এসব বিচার-বিশ্লেষণ না করে নিজের জন্মভূমির সঙ্গে সম্পর্ক ছেড়ে বিদেশে স্থায়ী হলে তা পরে অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে।

৪. নিজের জন্য স্থায়ী একটি জন্মভূমি থাকার প্রকৃত মর্ম যিনি নিজের দেশ থেকে বিতাড়িত হন তিনিই ভালো জানেন। ফিলিস্তিনি জনগণ সুদীর্ঘকাল নিজের দেশ থেকে নির্বাসিত। তাদের অনেকেই উন্নত দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। সেসব ফিলিস্তিনির সঙ্গে যারা ঘনিষ্ঠভাবে মিশে থাকেন, কেবল তারাই তাদের বুকের কান্না শুনতে পান। ফলে দেশের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে বিদেশে স্থায়ী হলে ভবিষ্যতে নিজের কোনো দেশ না থাকার মতো এক ধরনের মানসিক নিরাপত্তাহীনতা কাজ করতে পারে, যা আরও বেশি ভয়ংকর।

৫. মানুষ জন্মগতভাবে জন্মভূমি দেশের কাছে ঋণী। আমাদের সমাজে মায়ের একার পক্ষে সন্তান মানুষ করা সম্ভব হয় না। আশপাশের অনেকের কোলে নিজের বাচ্চাকে দিতে হয়। এভাবে অনেকের অনেক ধরনের সাহায্য নিয়ে একজন ছেলে বা মেয়েকে এ সমাজে বড় হতে হয়। কারও কাছ থেকে কোনো সাহায্য পেলে তার প্রতিদান দেওয়াটা নৈতিক দায়িত্ব। যে কোনো ধর্মের ব্যাখ্যাও অনেকটা এ রকম। ইসলাম ধর্মের কথাই বলি। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে ঋণ পরিশোধের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বোখারি শরিফের একটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রক্তের সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করিবে না।’ মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে রক্তের সম্পর্ক অনুযায়ী ওয়ারিশদের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, তা অনেক লম্বা। এ দেশের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি বিক্রি করে নিজে পরিবারসহ স্থায়ীভাবে দেশত্যাগ করা হলে ধর্মের বিধান অনুযায়ী রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করা হয় কিনা, তা বিবেচনা করার অবকাশ রয়েছে।

পবিত্র কুরআনে ধর্মবিশ্বাসীদের কথা ও কাজে হজরত মোহাম্মদকে (সা.) অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। হজরত মোহাম্মদ (সা.) নিজে তাঁর রক্তের সম্পর্কের কোরাইশ বংশের জন্য আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ পেয়েছেন (সূরা কোরাইশ)। নবি করিম (সা.) শুধু রক্তের সম্পর্কের নয়, তার দুধমাতা হালিমার সন্তানদের প্রতিও তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। ইসলামে হজ প্রথা ফরজ হওয়ার কারণে গোটা আরব জাতি ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে পারিবারিকভাবে অর্থ উপার্জনের স্থায়ী একটা ব্যবস্থা পেয়েছে। মক্কা হজরত মোহাম্মদের (সা.) নিজের জন্মভূমি হওয়ার কারণে গোটা আরব জাহানের মানুষ যদি এত সুবিধা পেয়ে থাকেন, তাহলে নবির (সা.) প্রকৃত অনুসারীর জন্মভূমি যদি বাংলাদেশ হয়, তার (নবির অনুসারী) কারণে কেন এ দেশ ও দেশের মানুষ বিশেষ বিশেষ সুবিধা পাবে না?

নিশ্চিত ও নিরাপদ জীবনযাপনের লক্ষ্যে নিজের দেশ ছাড়ার ক্ষেত্রে অনেক বাস্তব অসুবিধা থাকলেও অনেকে দেশ ছাড়ার পক্ষে। কিন্তু কেন? আমার এ প্রশ্নের জবাবে একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা গ্রেশামস ল-এর কথা বলেন। অর্থনীতির গ্রেশামস ল’তে বলা হয়েছে, ‘নিকৃষ্ট মুদ্রা উৎকৃষ্ট মুদ্রাকে বাজার থেকে তাড়িয়ে দেয়।’ এ কথার মর্মার্থ হলো, সমাজে খারাপ লোকের সংখ্যা বাড়ছে এবং তা ক্রমবর্ধমান। এ কারণে ভালো মানুষ দেশে থাকতে চান না।

কিন্তু আরেক বাস্তবতা হলো, দেশটা আমাদের। অনেক কষ্টে, অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের দেশ। মানবিক, নৈতিক বা ধর্মীয় যে কোনো বিচারে নিজের জন্মভূমি, জন্মভূমির দূরের ও কাছের মানুষ, সর্বোপরি দেশের কৃষ্টি ও জনগণ অনেক পবিত্র বিষয়। বিশ্বায়নের এ যুগে কে কোন প্রয়োজনে পৃথিবীর কোন দেশে যাবেন এবং কোথায় থাকবেন, তা মৌলিক কোনো বিষয় নয়। প্রয়োজনে যে কেউ যে কোনো দেশে স্থায়ী হতে পারেন; কিন্তু যাওয়াটা সবকিছু বিক্রি করে স্থায়ী যাওয়া হবে কেন?

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেই ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি-সত্য। কিন্তু বর্তমান সরকারের চেষ্টায় দেশে চমৎকার উন্নয়নমুখী একটি অবকাঠামো দাঁড়িয়ে গেছে। দেশটি ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। এ অবস্থায় দেশে-বিদেশে অবস্থানরত এ দেশের সর্বস্তরের জনগণ যার যার অবস্থানে থেকে যদি দেশের প্রতি নিজের দায়িত্ব যথাযথ পালন না করেন, তাহলে দেশের কাম্য উন্নয়ন সম্ভব নয়।

আমরা দেশে থাকি বা দেশের বাইরে থাকি, দেশটি আমাদের। দেশটি বসবাসের অযোগ্য হলে বা কোনো ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকলে তার প্রতিকার আমাদেরই করতে হবে, অন্য কোনো দেশের মানুষ তা করে দেবে না।

রাশেদুল ইসলাম : প্রধান নির্বাহী, অর্পণ-দর্পণ স্মৃতি ফাউন্ডেশন; সাবেক মহাপরিচালক (গ্রেড-১), এনজিওবিষয়ক ব্যুরো, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

 

শিক্ষিত সমাজ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম