৫১ মুসল্লিকে হত্যা: কে এই সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারেন্ট
অনলাইন ডেস্ক
২৭ আগস্ট ২০২০, ১৪:২৫:০৮ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজিল্যান্ডে দুটি মসজিদে জুমার সময় এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৫১ মুসল্লিকে হত্যাকারী সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে একজন ‘কট্টরপন্থী, ডানপন্থী সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
বৃহস্পতিবার ক্রাইস্টার্চের হাইকোর্টে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দিয়ে রায় দিয়েছে। অর্থাৎ সে প্যারোলেও কখনো বেরিয়ে আসতে পারবে না। নিউজিল্যান্ডে যে সাজা একেবারেই বিরল।-খবর বিবিসি ও রয়টার্সের
গত বছরের ১৫ মার্চ আল-নূর ও লিনইউড মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫১ মুসল্লিকে হত্যা, ৪১ জনকে হত্যাচেষ্টা ও একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগের দোষ স্বীকার নিয়েছে এই শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী যুবক। যাদের সে হত্যা করেছে, তাদের মধ্যে তিন বছর বয়সী শিশুও ছিল।
নিউজিল্যান্ডে হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান আছে। মুক্তির কোনো সম্ভাবনা না রেখেই বিচারকের এমন রায় দেশটিতে একেবারে বিরল।
অস্ট্রেলিয়ার নিউজ সাউথ ওয়েলসে তার জন্ম। তারা বাবা ছিলেন একজন আবর্জনা সংগ্রহকারী আর মা শিক্ষক।
২০১০ সালে তার বাবার মৃত্যুর পর এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করে কাটায় ব্রেন্টন ট্যারেন্ট।
এই ভ্রমণই তাকে বদলে দিয়েছে বলে ধারণা তার দাদীর। তিনি বলেন, সে যখন ভ্রমণে বের হয়, তখনই এমনটি ঘটেছে। আমরা যে যুবককে চিনতাম, সে সম্পূর্ণ বদলে গেছে।
তবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে উগ্রপন্থীদের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
শরীরচর্চার প্রশিক্ষক ট্যারেন্ট অস্ট্রেলিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডে যায় ২০১৭ সালে। এর পর অস্ত্র সংগ্রহ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ যার বাস্তবায়ন ঘটে।
মসজিদে হামলার আগে অনলাইনে প্রকাশ করা এক ইশতেহারে মুসলমান ও অ-ইউরোপীয় অভিবাসীদের প্রতি তার ঘৃণার কথা জানায়। ‘ব্যাপক প্রতিস্থাপন তত্ত্বের’ প্রতি তার বিশ্বাসের কথাও প্রকাশ করেছে।
এই তত্ত্বের মতে, শ্বেতাঙ্গদের জন্মহার কমে যাওয়ার কারণে অশ্বেতাঙ্গরা সেই জায়গা দখল করে নেবে। তার ইশতেহার ও হত্যার ভিডিও নিউজিল্যান্ডে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডে পাঁচটি অস্ত্র ব্যবহার করেছে ট্যারেন্ট, যা সে বৈধভাবেই কিনেছে। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে আর কখনও এমন ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেনি।
এ ঘটনার পর নিউজিল্যান্ডের বন্দুক আইন সংশোধন করা হয়েছে। এতে বেসামরিক লোকদের জন্য আধাস্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর ৫৬ হাজার ২৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র ক্রেতাদের কাছ থেকে ফেরত নেয়া হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ট্যারেন্ট নিজের নৃশংসতা দেখাতে চেয়েছে। যে কারণে মসজিদে গুলি চালিয়ে সে যখন নিরাপদ মানুষের রক্তের বন্যা বইয়ে দিচ্ছিল, তখন সে তা সরাসরি ফেসবুকে সম্প্রচার করেছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
৫১ মুসল্লিকে হত্যা: কে এই সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারেন্ট
নিউজিল্যান্ডে দুটি মসজিদে জুমার সময় এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৫১ মুসল্লিকে হত্যাকারী সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে একজন ‘কট্টরপন্থী, ডানপন্থী সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
বৃহস্পতিবার ক্রাইস্টার্চের হাইকোর্টে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দিয়ে রায় দিয়েছে। অর্থাৎ সে প্যারোলেও কখনো বেরিয়ে আসতে পারবে না। নিউজিল্যান্ডে যে সাজা একেবারেই বিরল।-খবর বিবিসি ও রয়টার্সের
গত বছরের ১৫ মার্চ আল-নূর ও লিনইউড মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫১ মুসল্লিকে হত্যা, ৪১ জনকে হত্যাচেষ্টা ও একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগের দোষ স্বীকার নিয়েছে এই শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী যুবক। যাদের সে হত্যা করেছে, তাদের মধ্যে তিন বছর বয়সী শিশুও ছিল।
নিউজিল্যান্ডে হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান আছে। মুক্তির কোনো সম্ভাবনা না রেখেই বিচারকের এমন রায় দেশটিতে একেবারে বিরল।
অস্ট্রেলিয়ার নিউজ সাউথ ওয়েলসে তার জন্ম। তারা বাবা ছিলেন একজন আবর্জনা সংগ্রহকারী আর মা শিক্ষক।
২০১০ সালে তার বাবার মৃত্যুর পর এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করে কাটায় ব্রেন্টন ট্যারেন্ট।
এই ভ্রমণই তাকে বদলে দিয়েছে বলে ধারণা তার দাদীর। তিনি বলেন, সে যখন ভ্রমণে বের হয়, তখনই এমনটি ঘটেছে। আমরা যে যুবককে চিনতাম, সে সম্পূর্ণ বদলে গেছে।
তবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে উগ্রপন্থীদের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
শরীরচর্চার প্রশিক্ষক ট্যারেন্ট অস্ট্রেলিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডে যায় ২০১৭ সালে। এর পর অস্ত্র সংগ্রহ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ যার বাস্তবায়ন ঘটে।
মসজিদে হামলার আগে অনলাইনে প্রকাশ করা এক ইশতেহারে মুসলমান ও অ-ইউরোপীয় অভিবাসীদের প্রতি তার ঘৃণার কথা জানায়। ‘ব্যাপক প্রতিস্থাপন তত্ত্বের’ প্রতি তার বিশ্বাসের কথাও প্রকাশ করেছে।
এই তত্ত্বের মতে, শ্বেতাঙ্গদের জন্মহার কমে যাওয়ার কারণে অশ্বেতাঙ্গরা সেই জায়গা দখল করে নেবে। তার ইশতেহার ও হত্যার ভিডিও নিউজিল্যান্ডে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডে পাঁচটি অস্ত্র ব্যবহার করেছে ট্যারেন্ট, যা সে বৈধভাবেই কিনেছে। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে আর কখনও এমন ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেনি।
এ ঘটনার পর নিউজিল্যান্ডের বন্দুক আইন সংশোধন করা হয়েছে। এতে বেসামরিক লোকদের জন্য আধাস্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর ৫৬ হাজার ২৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র ক্রেতাদের কাছ থেকে ফেরত নেয়া হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ট্যারেন্ট নিজের নৃশংসতা দেখাতে চেয়েছে। যে কারণে মসজিদে গুলি চালিয়ে সে যখন নিরাপদ মানুষের রক্তের বন্যা বইয়ে দিচ্ছিল, তখন সে তা সরাসরি ফেসবুকে সম্প্রচার করেছে।