বিদ্রোহীদের দমাতে টাইগ্রেতে চূড়ান্ত অভিযান চালাবে ইথিওপিয়া সরকার
অনলাইন ডেস্ক
২৬ নভেম্বর ২০২০, ২১:২৫:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ
বিদ্রোহীদের দমাতে ট্রাইগ্রেতে চূড়ান্ত সেনা অভিযানে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। বিদ্রাহীদেরকে বেঁধে দেয়া তিন দিনের সময় বুধবার শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানী মেকেলেতে অভিযানের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে না। এছাড়া শহরটির নাগরিকদের নিজ বাড়িতে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ওই অঞ্চলটিতে ৫ লাখ লোকের বসবাস। তবে টিপিএলএফ বিদ্রোহীরা ওই অঞ্চলটির রাজধানী নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
ইথিওপিয়া সেনাবাহিনী দ্বারা টাইগ্রেতে অভিযানের বিষয়ে জাতিসংঘ সম্ভাব্য যুদ্ধপরাধের আশঙ্কা করছে।
এর আগে দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) সেনাদের আত্মসমর্পণের জন্য বুধবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ইথিওপিয়ার তাইগ্রে অঞ্চলের প্রধান রাজনৈতিক দল টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই চলছে।
প্রায় তিন সপ্তাহ হতে চলা ও লড়াইয়ে কয়েক শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে। ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের দখল থেকে ওই এলাকার কয়েকটি শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, টাইগ্রে অঞ্চলে মোবাইল, ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় সংঘাতের বিস্তারিত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আফ্রিকা ইউনিয়নের তিন দেশের প্রতিনিধি দল ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আববায় পৌঁছেছে। তারা বিদ্রোহীদের সঙ্গে ইথিওপিয়ার সরকারের মধ্যে আলোচনার জন্য মধ্যস্থতা করতে চেয়েছে। তবে ইথিওপিয়ার সরকার তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, এই সংঘাত মারাত্মক উত্তেজনার দ্বারপ্রান্তে।
এদিকে বুধবার ইথিওপিয়া প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ দেশটির অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দূরে থাকতে বলছেন। তিনি বলেন, টাইগ্রে সমস্যা নিয়ে ইথিওপিয়ার পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন না জানানো পর্যন্ত তারা যেন অপেক্ষারত (স্ট্যান্ডবাই) থাকে।
তিনি বলেন, টাইগ্রে নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে তার দেশ প্রশংসা করে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তবে আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, ইথিওপিয়া তার আইন ও আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা অনুসারে এই পরিস্থিতি সমাধান করতে খুব সক্ষম এবং করতে ইচ্ছুকও।’
অন্যদিকে, স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর নেতা ডেবরেটসিয়ন গেবরেমাইকেলন জানিয়েছেন টাইগ্রে জনগণ আমাদের অঞ্চল শাসনের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে জীবন দিতে প্রস্তুত।টিপিএলএফ বাহিনী মূলত আধাসামরিক বাহিনীর একটি ইউনিটের সদস্য এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থানীয় যোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত। ধারণা করা হয়ে থাকে তাদের মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। কোনও কোনও বিশ্লেষক মনে করেন ইথিওপিয়ার বাহিনীর হাতে মেকেল্লের পতন হলে ওই অঞ্চলের সংঘাত গেরিলা লড়াইয়ে মোড় নিতে পারে।
ত্রাণ সংস্থাগুলোর আশঙ্কা টাইগ্রে অঞ্চলের সংঘাত মানবিক সংকটে পরিণত হতে পারে। এছাড়া হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বিদ্রোহীদের দমাতে টাইগ্রেতে চূড়ান্ত অভিযান চালাবে ইথিওপিয়া সরকার
বিদ্রোহীদের দমাতে ট্রাইগ্রেতে চূড়ান্ত সেনা অভিযানে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। বিদ্রাহীদেরকে বেঁধে দেয়া তিন দিনের সময় বুধবার শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানী মেকেলেতে অভিযানের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে না। এছাড়া শহরটির নাগরিকদের নিজ বাড়িতে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ওই অঞ্চলটিতে ৫ লাখ লোকের বসবাস। তবে টিপিএলএফ বিদ্রোহীরা ওই অঞ্চলটির রাজধানী নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
ইথিওপিয়া সেনাবাহিনী দ্বারা টাইগ্রেতে অভিযানের বিষয়ে জাতিসংঘ সম্ভাব্য যুদ্ধপরাধের আশঙ্কা করছে।
এর আগে দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) সেনাদের আত্মসমর্পণের জন্য বুধবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ইথিওপিয়ার তাইগ্রে অঞ্চলের প্রধান রাজনৈতিক দল টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই চলছে।
প্রায় তিন সপ্তাহ হতে চলা ও লড়াইয়ে কয়েক শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে। ইথিওপিয়ার সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের দখল থেকে ওই এলাকার কয়েকটি শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, টাইগ্রে অঞ্চলে মোবাইল, ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় সংঘাতের বিস্তারিত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আফ্রিকা ইউনিয়নের তিন দেশের প্রতিনিধি দল ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আববায় পৌঁছেছে। তারা বিদ্রোহীদের সঙ্গে ইথিওপিয়ার সরকারের মধ্যে আলোচনার জন্য মধ্যস্থতা করতে চেয়েছে। তবে ইথিওপিয়ার সরকার তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, এই সংঘাত মারাত্মক উত্তেজনার দ্বারপ্রান্তে।
এদিকে বুধবার ইথিওপিয়া প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ দেশটির অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দূরে থাকতে বলছেন। তিনি বলেন, টাইগ্রে সমস্যা নিয়ে ইথিওপিয়ার পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন না জানানো পর্যন্ত তারা যেন অপেক্ষারত (স্ট্যান্ডবাই) থাকে।
তিনি বলেন, টাইগ্রে নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে তার দেশ প্রশংসা করে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তবে আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, ইথিওপিয়া তার আইন ও আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা অনুসারে এই পরিস্থিতি সমাধান করতে খুব সক্ষম এবং করতে ইচ্ছুকও।’
অন্যদিকে, স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর নেতা ডেবরেটসিয়ন গেবরেমাইকেলন জানিয়েছেন টাইগ্রে জনগণ আমাদের অঞ্চল শাসনের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে জীবন দিতে প্রস্তুত।টিপিএলএফ বাহিনী মূলত আধাসামরিক বাহিনীর একটি ইউনিটের সদস্য এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থানীয় যোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত। ধারণা করা হয়ে থাকে তাদের মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। কোনও কোনও বিশ্লেষক মনে করেন ইথিওপিয়ার বাহিনীর হাতে মেকেল্লের পতন হলে ওই অঞ্চলের সংঘাত গেরিলা লড়াইয়ে মোড় নিতে পারে।
ত্রাণ সংস্থাগুলোর আশঙ্কা টাইগ্রে অঞ্চলের সংঘাত মানবিক সংকটে পরিণত হতে পারে। এছাড়া হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।