পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা: কেন এখনই প্রতিশোধ নিচ্ছে না ইরান?
অনলাইন ডেস্ক
২৯ নভেম্বর ২০২০, ২০:২৩:২৩ | অনলাইন সংস্করণ
ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ তেহরানের কাছে গুপ্ত হামলায় নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ইসরাইলকে দায়ী করছেন ইরানের রাজনীতিকরা।
তারা বিশ্বাস করেন যে ইসরাইলই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তবে এর প্রতিশোধ 'ইরান যখন সঠিক সময় এসেছে বলে মনে করবে তখনই' নেয়া হবে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, হঠকারী কোনো কিছু করা হবে না, এবং প্রতিশোধ নেয়ার সময়টা ইরান নিজেই বেছে নেবে।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ইরানের মাটিতে আক্রমণ চালিয়ে এত গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তিকে হত্যা করে দেশটির শত্রুরা এক বিরাট এবং অপমানজনক আঘাত হেনেছে।
বিবিসি বলছে, শুক্রবারের হত্যাকাণ্ডটি নতুন কিছু নয়। এর আগেও চারজন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। সেসব হত্যাকাণ্ডের জন্য ইরান ইসরাইলকেই দায়ী করেছে।
হত্যাকাণ্ডের পর ইরানের সামরিক বাহিনী বলেছে, বজ্রের মতো আঘাত হেনে প্রতিশোধ নেয়া হবে।
প্রতিশোধের দাবিতে তেহরানের রাস্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বিক্ষোভও করেছে। একজন বিক্ষোভকারী সেখানে বলেছেন, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ক্ষমতার শেষ দুই মাসে একটা 'যুদ্ধের পরিস্থিতি' তৈরি করতে চাইছেন।
প্রতিশোধের বিষয়ে অনেক হিসাব-নিকাশ করে এগুচ্ছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, প্রতিশোধ নেয়া হবে ঠিকই, কিন্তু হয়তো এক্ষুণি তা হবে না।
ইসরাইলকে ইঙ্গিত করে ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, ইরান যথাসময়ে ব্যবস্থা নেবে, ফাঁদে পা দেবে না। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, কিন্তু আমরা তাদের হাতে কি তাস আছে তা বুঝে ফেলেছি। তারা সফল হবে না। কারণ ইরান জানে, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানের সঙ্গে সংঘাত নয় বরং সংলাপ চান।
শুক্রবার পরমাণু বিজ্ঞানী ফাখরিজাদেহকে রাজধানী তেহরানের কাছে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা হত্যা করে।
এদিকে এ পরমাণু বিজ্ঞানিকে হত্যার পরই পাল্টা প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দেয় ইরান। এরপরই শনিবার থেকে ইসরাইলি মিশনগুলো উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়।
তুর্কি সংবাদ মাধ্যম ইয়েনি শাফাক জানিয়েছে, যখন হত্যাকারীকে শনাক্তের বিষয়টি রহস্যের মধ্যে রয়েছে, সে সময়ই ইরানের উচ্চ পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতারা সরাসরি ইসরাইলকে এ হত্যার জন্য দায়ী করছে।
ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, এই অভিযোগের কারণেই ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির সব দূতবাসগুলোতে হুমকির মাত্রা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন।
বিস্তারিত না জানিয়েই বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ইসরাইলি মিশন ও সম্প্রদায়কে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
এছাড়া ইরানের শীর্ষ স্থানীয় পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। ঘৃণ্য এই অপরাধের পেছনে যারাই থাকুক তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা: কেন এখনই প্রতিশোধ নিচ্ছে না ইরান?
ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ তেহরানের কাছে গুপ্ত হামলায় নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ইসরাইলকে দায়ী করছেন ইরানের রাজনীতিকরা।
তারা বিশ্বাস করেন যে ইসরাইলই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তবে এর প্রতিশোধ 'ইরান যখন সঠিক সময় এসেছে বলে মনে করবে তখনই' নেয়া হবে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, হঠকারী কোনো কিছু করা হবে না, এবং প্রতিশোধ নেয়ার সময়টা ইরান নিজেই বেছে নেবে।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ইরানের মাটিতে আক্রমণ চালিয়ে এত গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তিকে হত্যা করে দেশটির শত্রুরা এক বিরাট এবং অপমানজনক আঘাত হেনেছে।
বিবিসি বলছে, শুক্রবারের হত্যাকাণ্ডটি নতুন কিছু নয়। এর আগেও চারজন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। সেসব হত্যাকাণ্ডের জন্য ইরান ইসরাইলকেই দায়ী করেছে।
হত্যাকাণ্ডের পর ইরানের সামরিক বাহিনী বলেছে, বজ্রের মতো আঘাত হেনে প্রতিশোধ নেয়া হবে।
প্রতিশোধের দাবিতে তেহরানের রাস্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বিক্ষোভও করেছে। একজন বিক্ষোভকারী সেখানে বলেছেন, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ক্ষমতার শেষ দুই মাসে একটা 'যুদ্ধের পরিস্থিতি' তৈরি করতে চাইছেন।
প্রতিশোধের বিষয়ে অনেক হিসাব-নিকাশ করে এগুচ্ছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, প্রতিশোধ নেয়া হবে ঠিকই, কিন্তু হয়তো এক্ষুণি তা হবে না।
ইসরাইলকে ইঙ্গিত করে ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, ইরান যথাসময়ে ব্যবস্থা নেবে, ফাঁদে পা দেবে না। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, কিন্তু আমরা তাদের হাতে কি তাস আছে তা বুঝে ফেলেছি। তারা সফল হবে না। কারণ ইরান জানে, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানের সঙ্গে সংঘাত নয় বরং সংলাপ চান।
শুক্রবার পরমাণু বিজ্ঞানী ফাখরিজাদেহকে রাজধানী তেহরানের কাছে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা হত্যা করে।
এদিকে এ পরমাণু বিজ্ঞানিকে হত্যার পরই পাল্টা প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দেয় ইরান। এরপরই শনিবার থেকে ইসরাইলি মিশনগুলো উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়।
তুর্কি সংবাদ মাধ্যম ইয়েনি শাফাক জানিয়েছে, যখন হত্যাকারীকে শনাক্তের বিষয়টি রহস্যের মধ্যে রয়েছে, সে সময়ই ইরানের উচ্চ পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতারা সরাসরি ইসরাইলকে এ হত্যার জন্য দায়ী করছে।
ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, এই অভিযোগের কারণেই ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির সব দূতবাসগুলোতে হুমকির মাত্রা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন।
বিস্তারিত না জানিয়েই বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ইসরাইলি মিশন ও সম্প্রদায়কে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
এছাড়া ইরানের শীর্ষ স্থানীয় পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। ঘৃণ্য এই অপরাধের পেছনে যারাই থাকুক তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।