প্রায় এভারেস্ট পর্বতের সমান গভীর গর্ত খুঁড়ছে চীন!
১১ হাজার ১০০ মিটারের বেশি গভীর একটি গর্ত খুঁড়তে শুরু করেছে চীন। গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্বশাসিত এলাকায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ টিলা মরুভূমি তাকলামাকান নামে জায়গায় এই গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, গর্তটি মাটির ১০ স্তর ভেদ করে এমন একটি স্তুরে পৌঁছাবে যেটি প্রায় ১৪৫ থেকে ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে ছিল। পুরো প্রকল্পটি শেষ হতে সময় লাগবে ৪৫৭ দিন। এই সময়ের মধ্যে দুই হাজার টনের বেশি ভারী যন্ত্রপাতি ও মেশিন সামলাবে সংশ্লিষ্টরা।
বিবিসি জানিয়েছে, এটি চীনের সবচেয়ে বড় খনন প্রকল্প যা প্রথম বারের মতো ১০ হাজার মিটার কূপ খননের প্রতিবন্ধকতা ছাড়িয়ে যাবে।
চীন এমন এক সময় এ ধরণের একটি পদক্ষেপ নিলো যখন দেশটি বৈশ্বিক প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক শক্তি হিসেবে নিজের অন্তর্ভূক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আশ্চর্যজনকভাবে, এই কূপটি সেদিনই খোঁড়া শুরু হয় যেদিন বেইজিং ২০৩০ সালে চাঁদে পৌঁছানো প্রকল্পের অংশ হিসেবে কক্ষপথে মহাকাশ স্টেশনে তিনজন নভোচারীকে পাঠায়।
কিন্তু এতো গভীর গর্ত কেন খোঁড়া হচ্ছে, যা প্রায় এভারেস্ট পর্বতের সমান এবং যা কোন বাণিজ্যিক বিমানের সর্বোচ্চ ফ্লাইট উচ্চতার সমান?
রাষ্ট্রীয় পেট্রোরাসায়নিক কর্পোরেশন সিনোপেক এই প্রকল্পটি পরিচালনা করছে। তারা জানিয়েছে যে, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ‘গভীরতার সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া’।
দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং স্থানীয় বিজ্ঞানীদের ভূ-পৃষ্ঠের গভীরতা নিয়ে গবেষণা করার বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানোর দুই বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর চীনে গভীরতম গর্ত খোঁড়ার এই প্রকল্প শুরু হলো।
চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন-সিএনপিসির প্রতিনিধি লিউ শিয়াওগ্যাং বলেন, এই কূপটি খনন করার দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে- বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এবং তেল ও গ্যাসের সন্ধান।
এক ব্যাখ্যামূলক ভিডিওতে এই কর্মকর্তা বলেন, এই প্রকল্পটি গভীর অনুসন্ধানে নতুন মেশিন বা যন্ত্রপাতি উৎপাদনে পেট্রোচায়নার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
সিএনপিসি শুধু চীনেরই সর্ববৃহৎ তেল-গ্যাস কোম্পানি নয়, বরং বিশ্বেরও অন্যতম বড় তেল ও গ্যাস কোম্পানি এটি।
প্রকল্পের দ্বিতীয় উদ্দেশ্যের বিষয়ে সিএনপিসি বলছে যে, তারা এশীয় দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অতি-গভীর তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের অনুসন্ধান করছে।
মাটির এতো গভীরে অর্থাৎ সাধারণত পাঁচ হাজার মিটার গভীরে হাইড্রোকার্বনের মজুদ সাধারণত থাকে সাগর উপকূলে যেখানে পাথর এবং পলির স্তর ঘন থাকে।
তবে কিছু স্থলভাগেও এমন মজুদ পাওয়া যায় যেমন অববাহিকা বা পাললিক এলাকা।
এই বিষয়টি হচ্ছে তারিম অববাহিকায় যেখানে তাকলামাকান মরুভূমি অবস্থিত, সেখানে বিপুল পরিমাণে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ থাকতে পারে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মাটির কঠিন অবস্থা এবং উচ্চ মাত্রায় চাপ ও চরম তাপমাত্রার কারণে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের উত্তোলনের সময় ব্যাপক প্রযুক্তিগত এবং কারিগরি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।
চিলির ভূপদার্থবিদ ক্রিশ্চিয়ান ফারিয়াস বলেন, গর্তের স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখাটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
যদিও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত গভীরতা ধরে রাখতে পেরেছিলো। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, মাটির এতো নিচে পৌঁছানোটা আজও প্রচণ্ড জটিল।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
প্রায় এভারেস্ট পর্বতের সমান গভীর গর্ত খুঁড়ছে চীন!
যুগান্তর ডেস্ক
০৭ জুন ২০২৩, ২০:২২:০৭ | অনলাইন সংস্করণ
১১ হাজার ১০০ মিটারের বেশি গভীর একটি গর্ত খুঁড়তে শুরু করেছে চীন। গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্বশাসিত এলাকায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ টিলা মরুভূমি তাকলামাকান নামে জায়গায় এই গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, গর্তটি মাটির ১০ স্তর ভেদ করে এমন একটি স্তুরে পৌঁছাবে যেটি প্রায় ১৪৫ থেকে ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে ছিল। পুরো প্রকল্পটি শেষ হতে সময় লাগবে ৪৫৭ দিন। এই সময়ের মধ্যে দুই হাজার টনের বেশি ভারী যন্ত্রপাতি ও মেশিন সামলাবে সংশ্লিষ্টরা।
বিবিসি জানিয়েছে, এটি চীনের সবচেয়ে বড় খনন প্রকল্প যা প্রথম বারের মতো ১০ হাজার মিটার কূপ খননের প্রতিবন্ধকতা ছাড়িয়ে যাবে।
চীন এমন এক সময় এ ধরণের একটি পদক্ষেপ নিলো যখন দেশটি বৈশ্বিক প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক শক্তি হিসেবে নিজের অন্তর্ভূক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আশ্চর্যজনকভাবে, এই কূপটি সেদিনই খোঁড়া শুরু হয় যেদিন বেইজিং ২০৩০ সালে চাঁদে পৌঁছানো প্রকল্পের অংশ হিসেবে কক্ষপথে মহাকাশ স্টেশনে তিনজন নভোচারীকে পাঠায়।
কিন্তু এতো গভীর গর্ত কেন খোঁড়া হচ্ছে, যা প্রায় এভারেস্ট পর্বতের সমান এবং যা কোন বাণিজ্যিক বিমানের সর্বোচ্চ ফ্লাইট উচ্চতার সমান?
রাষ্ট্রীয় পেট্রোরাসায়নিক কর্পোরেশন সিনোপেক এই প্রকল্পটি পরিচালনা করছে। তারা জানিয়েছে যে, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ‘গভীরতার সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া’।
দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং স্থানীয় বিজ্ঞানীদের ভূ-পৃষ্ঠের গভীরতা নিয়ে গবেষণা করার বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানোর দুই বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর চীনে গভীরতম গর্ত খোঁড়ার এই প্রকল্প শুরু হলো।
চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন-সিএনপিসির প্রতিনিধি লিউ শিয়াওগ্যাং বলেন, এই কূপটি খনন করার দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে- বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এবং তেল ও গ্যাসের সন্ধান।
এক ব্যাখ্যামূলক ভিডিওতে এই কর্মকর্তা বলেন, এই প্রকল্পটি গভীর অনুসন্ধানে নতুন মেশিন বা যন্ত্রপাতি উৎপাদনে পেট্রোচায়নার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
সিএনপিসি শুধু চীনেরই সর্ববৃহৎ তেল-গ্যাস কোম্পানি নয়, বরং বিশ্বেরও অন্যতম বড় তেল ও গ্যাস কোম্পানি এটি।
প্রকল্পের দ্বিতীয় উদ্দেশ্যের বিষয়ে সিএনপিসি বলছে যে, তারা এশীয় দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অতি-গভীর তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের অনুসন্ধান করছে।
মাটির এতো গভীরে অর্থাৎ সাধারণত পাঁচ হাজার মিটার গভীরে হাইড্রোকার্বনের মজুদ সাধারণত থাকে সাগর উপকূলে যেখানে পাথর এবং পলির স্তর ঘন থাকে।
তবে কিছু স্থলভাগেও এমন মজুদ পাওয়া যায় যেমন অববাহিকা বা পাললিক এলাকা।
এই বিষয়টি হচ্ছে তারিম অববাহিকায় যেখানে তাকলামাকান মরুভূমি অবস্থিত, সেখানে বিপুল পরিমাণে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ থাকতে পারে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মাটির কঠিন অবস্থা এবং উচ্চ মাত্রায় চাপ ও চরম তাপমাত্রার কারণে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের উত্তোলনের সময় ব্যাপক প্রযুক্তিগত এবং কারিগরি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।
চিলির ভূপদার্থবিদ ক্রিশ্চিয়ান ফারিয়াস বলেন, গর্তের স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখাটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
যদিও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত গভীরতা ধরে রাখতে পেরেছিলো। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, মাটির এতো নিচে পৌঁছানোটা আজও প্রচণ্ড জটিল।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023