১৮ মাসে হামাসের ২৫ শতাংশ টানেল ধ্বংস করেছে ইসরাইল

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম

দীর্ঘ ১৮ মাসের যুদ্ধে গাজাকে রীতিমতো নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে ইসরাইল। যুদ্ধের প্রথম থেকেই দেশটির সামরিকবাহিনীর টার্গেট ছিল গাজার সশস্ত্রবাহিনী হামাসকে নির্মূল করা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজার অভ্যন্তরে হামাসের ২৫ শতাংশ টানেল ধ্বংস করেছে ইসরাইল। তবে ইসরাইলি গণমাধ্যম চ্যানেল ১২ প্রতিবেদন অনুযায়ী-এখনও অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে বিশাল নেটওয়ার্ক রয়ে গেছে।
ইসরাইলের এমন বর্বর হামলার মাঝেও এক চতুর্থাংশ টানেল ধ্বংস হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরাইলি নির্বিচারে হামলার পরও টানেল বিস্তৃত রয়েছে গাজায়। এরমধ্যে অনেকগুলো মিসর থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের সঙ্গে ১২-কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দাবি, টানেলগুলো অস্ত্র সংরক্ষণ বা কমান্ড সেন্টার হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আরও বলেছেন হামাস সদস্যরা এখন সেসব মুখোমুখি লড়াইয়ে না গিয়ে সেসব টানেলেই আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে গত মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেছিলেন, সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের জন্য মিসরীয় দাবি সত্ত্বেও করিডোরটি একটি বাফার জোন থাকবে।
কাটজ বলেন, ইসরাইল সামরিক বাহিনী সেখানে থাকবে। পাশাপাশি গোলাবারুদ ও অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধে করবে যা সুড়ঙ্গের মাধ্যমে হয়ে থাকে। কাটজ আরও বলেস ‘আমি আমার নিজের চোখে দেখেছি বেশ কয়েকটি টানেল মিসরে অতিক্রম করছে; কিছু বন্ধ ছিল এবং কয়েকটি খোলা ছিল।’
আরও পড়ুন- ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কী কথা হলো
গাজা শহরে স্থলমাইন হামলায় নয়জন ইসরাইলি সৈন্য আহত: গাজা শহরে একটি স্থলমাইন হামলায় দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ নয়জন ইসরাইলি সৈন্য আহত হয়েছে।
একজন মুখপাত্র বলেছেন, জেরুজালেমে ব্রিগেডের সৈন্যরা গাজা শহরের শুজাইয়াপাড়ায় আহত হয়েছে।
গাজা কর্তৃপক্ষ বলছে, ফিলিস্তিনিরা অনাহারে থাকায় জাতিসংঘকে ‘জরুরি হস্তক্ষেপ’ করতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খাদ্যের সম্পূর্ণ অভাবের মধ্যে দুর্ভিক্ষ দ্রুত লক্ষ লক্ষ পরিবারকে ধ্বংস করছে। দখলদারদের দ্বারা আরোপিত অবরোধের কারণে বেশিরভাগ ওষুধ এবং চিকিৎসা সরবরাহ অনুপস্থিত। কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে গাজায় ‘স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত মিসন’ মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে।
গাজার ৬৫ হাজার শিশু মৃত্যুর মুখোমুখি: গাজায় গণহত্যা অভিযানের অংশ হিসাবে ইসরাইলের অবরোধ এবং উপত্যকায় দুই মাস ধরে প্রয়োজনীয় সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে ৬৫ হাজারেরও বেশি শিশু দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। শুক্রবার গাজার স্থানীয় সরকার এ কথা জানিয়েছে।
গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইলি দখলদারিত্ব এমন এক দুর্ভিক্ষ তৈরি করছে, যা বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করছে।
ক্রসিং বন্ধ করে এবং খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ বহনকারী ৩৯,০০০ ত্রাণ ট্রাক আটকে দিয়ে ২৪ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে একটি নিয়মতান্ত্রিক অপরাধ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। এটি আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এতে বলা হয়েছে, ৪০ দিন ধরে সব বেকারি দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে, যার ফলে বেসামরিক মানুষ রুটি থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।
ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতিতে চাপ দিচ্ছে ট্রাম্প: হোয়াইট হাউজ হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি-বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ইসরাইলকে চাপ দিচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে হারেৎজ জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ইসরাইলকে হুমকি দিয়েছে যে যদি তারা পদক্ষেপ না নেয় তবে তাদেরকে ‘একা ছেড়ে দেওয়া হবে’। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরাইলি বাহিনী কয়েক ডজন মানুষকে হত্যা করেছে।
শনিবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনী ২৩ জনকে হত্যা করেছে এবং ১০০ জনেরও বেশি লোক আহত করেছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে শুধুমাত্র শনিবারেই তাদের তাঁবুতে ইসরাইলি হামলায় একই পরিবারের পাঁচজন সদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় নিহত ফিলিস্তিনির মোট সংখ্যা ৫২,৮১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ১,১৯,৪০০ জনেরও বেশি।
আরও পড়ুন- ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ: সারাদিনে যা ঘটল