Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

প্রভিডেন্ট ফান্ডের জাকাত দেবেন যেভাবে

Icon

মুফতি বিলাল হুসাইন খান

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৩ এএম

প্রভিডেন্ট ফান্ডের জাকাত দেবেন যেভাবে

জাকাত ইসলামের অন্যতম মৌলিক একটি আর্থিক ইবাদত। জাকাত আদায় করলে সম্পদ পরিশুদ্ধ এবং বরকতময় হয়।

জাকাত ধনীদের সম্পদে গরিবদের অধিকার। এজন্য জাকাত দানকারীদের নিজ দায়িত্বে জাকাতের সম্পদ জাকাত গ্রহীতাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘এবং তাদের (ধনীদের) ধনসম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের অধিকার।’ (সূরা আজ-জারিয়াত : ১৯)।

জাকাতের নিসাব হলো, সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা ৮৭ দশমিক ৪৫ গ্রাম বা সাড়ে ৫২ ভরি রৌপ্য বা ৬১২ দশমিক ১৫ গ্রাম (আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ১ ভরি ১১ দশমিক ৬৬ গ্রাম বা ১ তোলা) বা সমমূল্যের নগদ টাকা, যে কোনো সময় ভাঙানো যায়, এমন বন্ড বা সঞ্চয়পত্র অথবা সমমূল্যের ব্যবসার পণ্য থাকলে জাকাত আদায় করতে হবে। অবশ্য এ পরিমাণ সম্পদ ১ বছর স্থায়ী হতে হবে।

আজকে আমরা প্রভিডেন্ট ফান্ডের জাকাতের খুঁটিনাটি কিছু বিষয়ে জানার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।   

চাকরির মেয়াদ শেষ হলে প্রভিডেন্ট ফান্ড নামে যে লাভ হস্তগত হয়; তা দু’ধরনের। যথা-

ক. বাধ্যতামূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড। অর্থাৎ, চাকরীজীবির পক্ষ থেকে নিষেধ থাকা সত্ত্বে সরকার কিংবা কোম্পানি বাধ্যতামূলকভাবে তার মাসিক বেতন থেকে কিছু টাকা প্রভিডেন্ট ফান্ড নামে প্রতি মাসে কর্তন করে রেখে দেয় এবং চাকরির মেয়াদ শেষ হলে ওই টাকার সঙ্গে আরো কিছু টাকা যোগ করে চাকরিজীবিকে প্রদান করা হয়। 

এ অবস্থায় ওই সম্পূর্ণ টাকা তার জন্য হালাল হবে। কারণ, প্রতি মাসে বেতন থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের যে অংশ চাকরিজীবির হস্তগত হয়নি, সে অংশ তার মালিকানায় প্রবেশ করেনি। 

সুতরাং এই মূল টাকার সঙ্গে যে বর্ধিত টাকা চাকরির মেয়াদ শেষ হলে সে পায়, ওই বর্ধিত টাকা তার মালিকানাধীন টাকার উপর অর্জিত লাভ স্বরূপ দেয়া হয়নি। বরং তা প্রাথমিক পর্যায়েই হাদিয়া-তোহফা রূপে গণ্য হবে। 

অতএব, এ ধরনের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা (মূল ও বর্ধিত অংশসহ) তার জন্য নেওয়া হালাল ও জায়েজ হবে। এবং তা হাতে পাওয়ার পর চলতি বছরের জাকাত দেওয়া ফরজ। তবে বিগত বছরগুলোর জাকাত দেওয়া আবশ্যক নয়। 

খ. ঐচ্ছিক প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্থাৎ চাকরিজীবি যদি বারণ করতো, তবে প্রতি মাসে প্রভিডেন্ট ফান্ড নামে বেতন থেকে কোন অংশ কর্তন করা হত না। এমতাবস্থায় চাকরিজীবী স্বেচ্ছায় মাসিক বেতন থেকে যে অংশ কর্তিত করাবে, ওই কর্তিত অংশ চাকরির শেষে নেওয়া জায়েজ হবে। কিন্তু তার উপর অর্জিত বর্ধিত অংশ সুদ বিধায় তা নেওয়া নাজায়েজ ও হারাম। 

ঐচ্ছিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাকরিজীবি স্বেচ্ছায় যে অংশ কর্তিত করাবে, যদি তা নেসাব বরাবর বা তার চেয়ে বেশি হয় কিংবা চাকরিজীবী প্রথম থেকেই সাহেবে নেসাব থাকে, তাহলে বৎসরে এই ঐচ্ছিক ফান্ডে যে মূল টাকা জমা হবে তার জাকাত দেয়া ফরজ। 

তবে তার উপর অর্জিত বর্ধিত অংশের জাকাত আসবে না। কেননা, এ বর্ধিত অংশ সুদ, যা নেওয়া সম্পূর্ণ রূপে নাজায়েজ ও হারাম। বরং এটাকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়াই ফকীর-মিসকীনদের মাঝে বিতরণ করে দেওয়া আবশ্যক। 

 রদ্দুল মুহতার : ৩/৩৩৬, শামী : ৩/২১৮

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম