কুরবানির মাংস বণ্টন করবেন যেভাবে
মুফতি তোফায়েল গাজালি
প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শরিকে কুরবানি করলে ওজন করে মাংস বণ্টন করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করা জায়েজ নয়। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭, কাযীখান ৩/৩৫১।
কুরবানির গোশতের এক তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক তৃতীয়াংশ আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। অবশ্য পুরো গোশত নিজে রেখে দেওয়াও জায়েজ। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪, আলমগীরী ৫/৩০০।
কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে চাইলে মূল্য সদকা করে দেওয়ার নিয়তে বিক্রি করতে হবে। সদকার নিয়ত না করে নিজের খরচের নিয়ত করা নাজায়েজ ও গুনাহ। নিয়ত যা-ই হোক বিক্রয়লব্ধ অর্থ পুরোটাই সদকা করে দেওয়া জরুরি। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১, কাযীখান ৩/৩৫৪।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর অনুসরণে মুসলমানরা যুগযুগ ধরে কুরবানি পালন করে আসছেন। পবিত্র কুরআনে কুরবানির ইতিহাস বিবৃত হয়েছে এভাবে-‘অতঃপর যখন সে (ইসমাইল) তার (ইবরাহিমের) সঙ্গে চলাফেরা করার বয়সে পৌঁছল, তখন সে বলল, ‘হে প্রিয় বৎস, আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে জবেহ করছি, অতএব, দেখ তোমার কী অভিমত? সে বলল, ‘হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তাই করুন। আমাকে ইনশাআল্লাহ আপনি অবশ্যই ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন। অতঃপর বাবা-ছেলে উভয়েই যখন আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইবরাহিম (আ.) তাকে (ইসমাইলকে) জবাই করার জন্য কাত করে শুইয়ে দিলেন। তখন আমি ডেকে বললাম, ‘হে ইবরাহিম! তুমি তো স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে দেখালে। নিশ্চয়ই আমি এভাবে সৎকর্মপরায়ণদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। ‘নিশ্চয়ই এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আর আমি তার (সন্তানের) পরিবর্তে জবাইযোগ্য এক মহান জন্তু দিয়ে (কুরবানি করিয়ে) তাকে (সন্তানকে) মুক্ত করে নিলাম। আর এ (কুরবানির) বিষয়টি পরবর্তীদের জন্য স্মরণীয় করে রাখলাম। (সূরা সাফফাত ১০২-১০৮)।
সামর্থ্যবান নর-নারীর ওপর কুরবানি ওয়াজিব। এটি মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ বলেন, ‘অতএব, আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কুরবানি আদায় করুন।’ (সূরা কাউসার-২)।
উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কুরবানির দিনের আমলগুলোর মধ্য থেকে পশু কুরবানি করার চেয়ে কোনো আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় নয়। কিয়ামতের দিন এ কুরবানিকে তার শিং, পশম ও খুরসহ উপস্থিত করা হবে। আর কুরবানির রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহর কাছে কবুল হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে কুরবানি কর। (জামে তিরমিজি-১৪৯৩)।
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এ ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদিস শরিফে কঠোর ধমকি এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার কুরবানির সামর্থ্য আছে তবুও সে কুরবানি করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ মুসনাদে আহমদ ২/৩২১।
