হার্ট অ্যাটাক ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ভিন্ন বিষয়, চিকিৎসকের পরামর্শ কী?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১৩ পিএম
হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বিশ্বজুড়ে মোট মৃত্যুর ১০ শতাংশেরও বেশি ঘটায়
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
হার্ট অ্যাটাক ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট- দুটোই হৃদরোগজনিত জরুরি অবস্থা হলেও এদের প্রকৃতি, লক্ষণ ও চিকিৎসা একেবারেই ভিন্ন। কিন্তু সাধারণ মানুষ প্রায়ই এ দুটিকে একই মনে করেন। আর এই ভুল ধারণাটিই অনেক সময় প্রাণঘাতী হতে পারে।
২০২৪ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বিশ্বজুড়ে মোট মৃত্যুর ১০ শতাংশেরও বেশি ঘটায়। এর মধ্যে অধিকাংশই ঘটছে ৬০ বছরের নিচের বয়সীদের মধ্যে। তাই এই দুই অবস্থার পার্থক্য জানা এবং সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বেঙ্গালুরুর রামাইয়া ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সেসের পরিচালক ও কার্ডিয়োলজিস্ট ডা. ভি. এস সতর্ক করে বলেন, হার্ট অ্যাটাক ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এক নয়। ভুল বোঝাবুঝি হলে মানুষ ভুল প্রতিক্রিয়া দেখায়, যা প্রাণনাশের কারণ হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ:
যখন কোনো করোনারি ধমনি ব্লক হয়ে হৃদপেশিতে পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না, তখন হার্ট অ্যাটাক হয়। এসময় হৃদযন্ত্রের স্পন্দন সচল থাকে এবং রোগী সচেতন থাকে।
প্রধান লক্ষণগুলো হলো-
বুকে চাপ বা ব্যথা
শ্বাসকষ্ট
বমিভাব
অতিরিক্ত ঘাম
ডা. প্রকাশ জানান, হার্ট অ্যাটাক মানে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হওয়া, যা দ্রুত চিকিৎসা ছাড়া বিপজ্জনক হতে পারে।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের লক্ষণ:
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ঘটে হৃদয়ের বৈদ্যুতিক কার্যপ্রণালী হঠাৎ ব্যর্থ হলে। তখন হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়, রক্ত চলাচল থেমে যায়, ফলে শরীর অচেতন হয়ে পড়ে।
লক্ষণগুলো হলো-
হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
নাড়ি না থাকা
শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া
ডা. প্রকাশ আরও বলেন, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হতে পারে। দ্রুত সিপিআর না পেলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
অনেক সময় বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাক থেকেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে। আবার অনেক কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় কোনো ধমনি ব্লক ছাড়াই, যেমন জেনেটিক বা হৃদস্পন্দনের রিদমজনিত সমস্যার কারণে। তাই সাধারণ মানুষের কাছে এ দুই অবস্থাকে এক মনে হওয়া স্বাভাবিক হলেও চিকিৎসকদের মতে এই বিভ্রান্তিই হতে পারে প্রাণঘাতী।
সর্বোপরি, হার্ট অ্যাটাক ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট— দুটোই জীবনসংকটময় অবস্থা, কিন্তু কারণ, লক্ষণ ও করণীয় সম্পূর্ণ আলাদা। সচেতনতা ও দ্রুত পদক্ষেপই পারে বহু জীবন রক্ষা করতে। আর সেই সচেতনতা শুরু হওয়া উচিত প্রতিটি মানুষের মধ্য থেকেই।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

