যানজট থেকে বাঁচাতে শিগগিরই আসছে উড়ন্ত গাড়ি
অনলাইন ডেস্ক
২০ ডিসেম্বর ২০২০, ১১:২৯:০৭ | অনলাইন সংস্করণ
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সড়কে বেড়েছে গাড়ির চাপ। পৃথিবীর অনেক দেশেই যানজট এখন অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা এবং স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
এই যানজট নিরসনে বাজারে আসছে উড়ন্ত গাড়ি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, উড়ন্ত ট্যাক্সি আগামী দশকগুলোতে আমাদের যাতায়াত, কর্মজীবন এবং জীবনযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে।
ব্যাটারি প্রযুক্তি, কম্পিউটার ও বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে এতটাই অগ্রগতি হয়েছে যে, উদ্ভাবকরা এখন ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন ধরনের উড়ন্ত গাড়ি তৈরি করছেন। সেই সঙ্গে এসব গাড়ি আকাশে কোন পথ ধরে চলবে তার পথনির্দেশনা পদ্ধতিও তারা উদ্ভাবন করেছেন।
বাণিজ্যিক বিমানের চেয়ে আকারে অনেক ছোট হবে উড়ন্ত গাড়ি। বেশিরভাগই ডিজাইন করা হয়েছে ডানার বদলে হেলিকপ্টারের মতো ঘূর্ণায়মান পাখা বা রোটার দিয়ে, যাতে গাড়িগুলো খাড়াভাবে আকাশে উঠতে বা নামতে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো– এই উড়ন্ত গাড়িগুলোর নকশা তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে, যাতে তারা দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে। বিশেষ করে যানজটের শহরগুলোতে মানুষ যাতে দ্রুত তার গন্তব্যে পৌঁছতে পারে।
বেশ কয়েকটি নতুন প্রতিষ্ঠান পাল্লা দিয়ে বাণিজ্যিক আকাশযান, উড়ন্ত মোটরবাইক এবং ব্যক্তিগত উড়ন্ত ট্যাক্সি তৈরির কাজে নেমে পড়েছে।
উদ্যোক্তাদের অর্থ সহায়তা দানকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান, পাশাপাশি গাড়ি ও বিমান সংস্থা এই সম্ভাবনাময় শিল্পে লগ্নি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের ধারণা, ২০৪০ সাল নাগাদ এটি ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের শিল্প হয়ে উঠতে পারে।
ইতিমধ্যে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আকাশপথে পরিবহন ব্যবস্থার নতুন নিয়মনীতি ও নিরাপত্তার মান কী হবে তার রূপরেখা তৈরির কাজও শুরু করেছে।
জার্মানভিত্তিক কোম্পানি ভলোকপ্টার তাদের ভলোসিটি মডেলের বিদ্যুৎ শক্তিচালিত উড়ন্ত ট্যাক্সিকে প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স দিয়েছে। সংস্থাটির পরিকল্পনা অনুযায়ী এই যান ভবিষ্যতে পাইলটবিহীন উড়তে পারবে।
শুরুর দিকে ভলোসিটির পাইলটচালিত উড়ন্ত ট্যাক্সিতে বসতে পারবেন মাত্র একজন যাত্রী। ফলে এই রাইডের জন্য ভাড়া পড়বে একটু বেশি।
কিন্তু তারা আশা করছে, যাত্রীদের মধ্যে আস্থা তৈরি হলে তারা স্বয়ংচালিত মডেল বের করবে, যেখানে চালকের প্রয়োজন হবে না। এই যান চলবে বিদ্যুৎশক্তিতে, গাড়ির কোনো ডানা থাকবে না। নয়টি ব্যাটারি থেকে সরবরাহ করা বিদ্যুৎশক্তি দিয়ে গাড়ি চলবে।
বিমান ওঠানামার জন্য যেমন বিমানবন্দর বা এয়ারপোর্ট থাকে, এসব উড়ন্ত ট্যাক্সি ওঠানামার জন্য বড় বড় শহরের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হবে ভার্টিপোর্ট। এই ট্যাক্সি যেহেতু খাড়াভাবে (ভার্টিক্যালি) আকাশে উঠবে, তাই এই ওঠানামার বন্দরগুলোর নাম তারা দিতে চাইছেন ভার্টিপোর্ট।
ভলোসিটি বাণিজ্যিকভাবে তাদের ফ্লাইট শুরু করবে ২০২২ সালে।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও তাদের আকাশযান তৈরির জন্য বর্তমান গাড়ি নির্মাতাদের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে কাজ শুরু করেছে।
যেমন জাপানে স্কাই ড্রাইভ নামে নতুন একটি স্টার্টআপ কোম্পানি তাদের পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত উড়ন্ত ট্যাক্সির পরীক্ষামূলক উড়ানোর জন্য টয়োটা কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছে।
বলা হচ্ছে, তাদের উড়ন্ত ট্যাক্সি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র বিদ্যুৎচালিত যান, যা সোজাসুজি খাড়াভাবে আকাশে উঠতে ও নামতে পারবে।
সংস্থাটি এই গ্রীষ্ম মৌসুমে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রের আশপাশে তাদের একটি যান সফলভাবে কয়েক মিনিটের জন্য উড়িয়েছে। সেটিতে চালক ছিল।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
যানজট থেকে বাঁচাতে শিগগিরই আসছে উড়ন্ত গাড়ি
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সড়কে বেড়েছে গাড়ির চাপ। পৃথিবীর অনেক দেশেই যানজট এখন অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা এবং স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
এই যানজট নিরসনে বাজারে আসছে উড়ন্ত গাড়ি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, উড়ন্ত ট্যাক্সি আগামী দশকগুলোতে আমাদের যাতায়াত, কর্মজীবন এবং জীবনযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে।
ব্যাটারি প্রযুক্তি, কম্পিউটার ও বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে এতটাই অগ্রগতি হয়েছে যে, উদ্ভাবকরা এখন ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন ধরনের উড়ন্ত গাড়ি তৈরি করছেন। সেই সঙ্গে এসব গাড়ি আকাশে কোন পথ ধরে চলবে তার পথনির্দেশনা পদ্ধতিও তারা উদ্ভাবন করেছেন।
বাণিজ্যিক বিমানের চেয়ে আকারে অনেক ছোট হবে উড়ন্ত গাড়ি। বেশিরভাগই ডিজাইন করা হয়েছে ডানার বদলে হেলিকপ্টারের মতো ঘূর্ণায়মান পাখা বা রোটার দিয়ে, যাতে গাড়িগুলো খাড়াভাবে আকাশে উঠতে বা নামতে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো– এই উড়ন্ত গাড়িগুলোর নকশা তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে, যাতে তারা দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে। বিশেষ করে যানজটের শহরগুলোতে মানুষ যাতে দ্রুত তার গন্তব্যে পৌঁছতে পারে।
বেশ কয়েকটি নতুন প্রতিষ্ঠান পাল্লা দিয়ে বাণিজ্যিক আকাশযান, উড়ন্ত মোটরবাইক এবং ব্যক্তিগত উড়ন্ত ট্যাক্সি তৈরির কাজে নেমে পড়েছে।
উদ্যোক্তাদের অর্থ সহায়তা দানকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান, পাশাপাশি গাড়ি ও বিমান সংস্থা এই সম্ভাবনাময় শিল্পে লগ্নি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের ধারণা, ২০৪০ সাল নাগাদ এটি ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের শিল্প হয়ে উঠতে পারে।
ইতিমধ্যে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আকাশপথে পরিবহন ব্যবস্থার নতুন নিয়মনীতি ও নিরাপত্তার মান কী হবে তার রূপরেখা তৈরির কাজও শুরু করেছে।
জার্মানভিত্তিক কোম্পানি ভলোকপ্টার তাদের ভলোসিটি মডেলের বিদ্যুৎ শক্তিচালিত উড়ন্ত ট্যাক্সিকে প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স দিয়েছে। সংস্থাটির পরিকল্পনা অনুযায়ী এই যান ভবিষ্যতে পাইলটবিহীন উড়তে পারবে।
শুরুর দিকে ভলোসিটির পাইলটচালিত উড়ন্ত ট্যাক্সিতে বসতে পারবেন মাত্র একজন যাত্রী। ফলে এই রাইডের জন্য ভাড়া পড়বে একটু বেশি।
কিন্তু তারা আশা করছে, যাত্রীদের মধ্যে আস্থা তৈরি হলে তারা স্বয়ংচালিত মডেল বের করবে, যেখানে চালকের প্রয়োজন হবে না। এই যান চলবে বিদ্যুৎশক্তিতে, গাড়ির কোনো ডানা থাকবে না। নয়টি ব্যাটারি থেকে সরবরাহ করা বিদ্যুৎশক্তি দিয়ে গাড়ি চলবে।
বিমান ওঠানামার জন্য যেমন বিমানবন্দর বা এয়ারপোর্ট থাকে, এসব উড়ন্ত ট্যাক্সি ওঠানামার জন্য বড় বড় শহরের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হবে ভার্টিপোর্ট। এই ট্যাক্সি যেহেতু খাড়াভাবে (ভার্টিক্যালি) আকাশে উঠবে, তাই এই ওঠানামার বন্দরগুলোর নাম তারা দিতে চাইছেন ভার্টিপোর্ট।
ভলোসিটি বাণিজ্যিকভাবে তাদের ফ্লাইট শুরু করবে ২০২২ সালে।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও তাদের আকাশযান তৈরির জন্য বর্তমান গাড়ি নির্মাতাদের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে কাজ শুরু করেছে।
যেমন জাপানে স্কাই ড্রাইভ নামে নতুন একটি স্টার্টআপ কোম্পানি তাদের পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত উড়ন্ত ট্যাক্সির পরীক্ষামূলক উড়ানোর জন্য টয়োটা কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছে।
বলা হচ্ছে, তাদের উড়ন্ত ট্যাক্সি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র বিদ্যুৎচালিত যান, যা সোজাসুজি খাড়াভাবে আকাশে উঠতে ও নামতে পারবে।
সংস্থাটি এই গ্রীষ্ম মৌসুমে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রের আশপাশে তাদের একটি যান সফলভাবে কয়েক মিনিটের জন্য উড়িয়েছে। সেটিতে চালক ছিল।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা।