নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমোদন বাতিলের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০১ পিএম
ইন্টারনেট থেকে নেওয়া ছবি।
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা নিকোটিন পাউচ কারখানা স্থাপনের অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, মহামান্য হাইকোর্টের আপিল বিভাগের স্পষ্ট নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাংলাদেশে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা জনস্বাস্থ্য ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি। এতে তরুণদের আকৃষ্ট করার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে নিকোটিন পাউচের অনুমোদন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ সেন্টার ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিসিজিডি), বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, বাংলাদেশ টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যাডভোকেটস (বিটিসিএ) এবং পাবলিক হেলথ ল’ইয়ার্স নেটওয়ার্ক।
সংবাদ সম্মেলনে বিটিসিএর আহ্বায়ক ইকবাল মাসুদের সভাপতিত্বে ও ধোঁয়াবিহীন তামাক বিশেষজ্ঞ ফারহানা জামান লিজার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আবু নাসের অনিক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হাসান সোহেল, উন্নয়ন সংস্কারক এ কে এম মাকসুদ, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ড. অনুপম হাসান, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি প্রফেসর ডাক্তার গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক প্রমুখ।
সংগঠনটির নেতারা জানান, বিশ্বজুড়ে বহু দেশ নিকোটিন পাউচকে জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। বেলজিয়াম, রাশিয়া, উজবেকিস্তান, ফ্রান্সসহ অন্তত ১১টি দেশে এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রায় ৩৪টি দেশ কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) নিকোটিন পাউচকে ‘তামাকজাত পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে কঠোর প্রি-মার্কেট অনুমোদন বাধ্যতামূলক করেছে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত নিকোটিন পাউচের কোনো সক্রিয় বাজার নেই এবং ব্যবহারকারীও নেই।
টিসিআরসির সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার কোনো সিগারেট দোকান, সুপার শপ বা ফার্মেসিতে এ পণ্য পাওয়া যায়নি। অধিকাংশ ব্যবসায়ী পণ্যটির নামই শোনেননি। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কিসের ভিত্তিতে ফিলিপ মরিস বাংলাদেশ লিমিটেডকে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমোদন দিল— সেই প্রশ্ন তোলেন বক্তারা।
তারা জানান, মাত্র ৬৩ জনের কর্মসংস্থান এবং ৫১ কোটি টাকার বিনিয়োগের যুক্তি দেখিয়ে জনস্বাস্থ্যকে ঝুঁকিতে ফেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ অনুমোদনের ফলে ভবিষ্যতে নিকোটিন পাউচ বাজারে ঢোকার সুযোগ পাবে, যা তরুণদের নিকোটিনের দিকে ঠেলে দেবে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সংকট তৈরি করবে।
বক্তারা আরও বলেন, যেসব দেশে নিয়ন্ত্রণ দুর্বল-সেসব দেশে এর ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। সুইডেন ও ডেনমার্কে এর ব্যবহার ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩-২৪ সালে ১০ম থেকে ১২তম গ্রেডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যবহার ৩.০ শতাংশ থেকে ৫.৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, আর ২১ বছরের নিচে ব্যবহার চারগুণ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এটি তরুণদের নেশার নতুন মহামারি তৈরি করছে।
