ওভার কনফিডেন্টের কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
যুগান্তর রিপোর্ট
২৯ নভেম্বর ২০২০, ১৯:১৬:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ
ওভার কনফিডেন্টের কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। এর কারণ হলো বেপরোয়া হয়ে চলছি, আমরা বেশি কনফিডেন্ট হয়ে গেছি। কয়েকদিন আগে কক্সবাজারে লাখ লাখ লোক দেখেছি। এভাবেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যায়।
রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা এবং ভ্যাকসিন’ বিষয়ক আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) আয়োজিত সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার প্রথম দিকে এর প্রতিকার সম্পর্কে কেউ জানতো না, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকবার পরিবর্তন করেছে। তখন বলা হলো ভেন্টিলেটর অনেক লাগবে, সেভাবে লাগেনি। সেন্ট্রাল অক্সিজেন, হাই ফ্লো ক্যানোলা প্রয়োজন ছিল, ল্যাবের প্রয়োজন ছিল। ল্যাব একটি থেকে ১১৮টি ল্যাব হয়েছে, এখন ১৭ হাজার পর্যন্ত টেস্ট হচ্ছে।
জাহিদ মালেক বলেন, আজকে ইউরোপ আমেরিকা দেখেন, পাশের দেশ ভারতে দেখেন। উন্নত দেশে প্রতি ১০ লাখে হাজারের মতো মারা গেছে। আমাদের এখানে ৪৫-৪৮ এর মতো। আমাদের অর্থনীতি গ্রোথ রেট ধরে রেখেছে, অনেক দেশ মাইনাসে চলে গেছে। একটি মানুষও না খেয়ে মরেনি। কোনো উন্নয়ন থেমে নেই। শুধু শিক্ষা পুরোপুরি করতে পারিনি, এখন অনলাইনে নেওয়া হচ্ছে।
ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা হচ্ছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিলে প্রথম ধাপেই বাংলাদেশ তা পাবে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালের জন্যও ব্যবস্থা হবে বলে জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শীতকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বেড়ে যায় সে কারণে করোনা বেড়ে যেতে পারে। সরকারি-বেসরকারিভাবে মিলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে পারবো। আগে বেড বেশি ছিল না, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছিল না, এখন হয়েছে, ওষুধের অভাব নেই, ডাক্তার নার্সরা এখন অনেক বেশি ট্রেন্ড। টেলিমেডিসিন বাড়ানোর কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, লাখে লাখে হাসপাতালে গেলে পৃথিবীর কারো সক্ষমতা নেই নিয়ন্ত্রণ করার, বাংলাদেশেরও নেই। তাই সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ কারণে জরিমানা করা হচ্ছে। ডেঙ্গু বাড়ছে, একইসঙ্গে মোকাবিলা করা জটিল, তবে এদিকে নজর রাখতে হবে।
বেসরকারি হাসপাতালে ১০ হাজার বেডের মধ্যে কোভিড রোগীর জন্য ১২শ রয়েছে। ২০ শতাংশে উন্নিত করা ও আইসিইউ বাড়ানোর আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, করোনায় সরকারের পদক্ষেপ যথাযথ ছিল। সে কারণে মৃত্যুহার অন্য দেশের তুলনায় কম। তবে কোনো মৃত্যুই কাম্য হতে পারে না। মনে রাখতে হবে দেশ বাঁচলে তবেই আমরা বাঁচবো। আমি আশাকরি বেসরকারি হাসপাতাল তাদের সহযোগিতার হাত অব্যাহত থাকবে।
ভ্যাকসিনের বিষয়ে বড় প্লান করা হয়েছে। সবাই পাবেন তবে ধাপে ধাপে দেওয়া হবে। টেস্টের খরচ আরও কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেন হেলথ ডিজি।
বিপিএমসিএ সভাপতি এমএ মুবিন খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। যদি পরিস্থিতি খারাপ হয় তাহলে পাটনারশিপ হতে পারে। অথবা সরকার যেভাবে পছন্দ করে। অনেকে অনলাইন কনসালটেশন নিচ্ছেন, এটি খুবই কার্যকর। না হলে সকল রোগী হাসপাতালমুখী হলে হিমশিম খেতে হতো। তাই অনলাইন মেডিকেল বোর্ড করা হচ্ছে। ক্যাম্পেইনের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
সিটিস্ক্যান মেশিনসহ করোনায় অপরিহার্য যন্ত্রপাতি করমুক্ত করা যেতে পারে। এন্টিজেন ও এন্টিবডি কিট আমদানির সুযোগ দিলে রোগীরা বিশাল রিলিফ পেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী, ইস্ট-ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন, খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান গাজী মিজানুর রহমান, নর্থ-ইস্ট মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন, রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান, নর্থবেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান এমএ মুকিত প্রমুখ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওভার কনফিডেন্টের কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ওভার কনফিডেন্টের কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। এর কারণ হলো বেপরোয়া হয়ে চলছি, আমরা বেশি কনফিডেন্ট হয়ে গেছি। কয়েকদিন আগে কক্সবাজারে লাখ লাখ লোক দেখেছি। এভাবেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যায়।
রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা এবং ভ্যাকসিন’ বিষয়ক আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) আয়োজিত সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার প্রথম দিকে এর প্রতিকার সম্পর্কে কেউ জানতো না, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকবার পরিবর্তন করেছে। তখন বলা হলো ভেন্টিলেটর অনেক লাগবে, সেভাবে লাগেনি। সেন্ট্রাল অক্সিজেন, হাই ফ্লো ক্যানোলা প্রয়োজন ছিল, ল্যাবের প্রয়োজন ছিল। ল্যাব একটি থেকে ১১৮টি ল্যাব হয়েছে, এখন ১৭ হাজার পর্যন্ত টেস্ট হচ্ছে।
জাহিদ মালেক বলেন, আজকে ইউরোপ আমেরিকা দেখেন, পাশের দেশ ভারতে দেখেন। উন্নত দেশে প্রতি ১০ লাখে হাজারের মতো মারা গেছে। আমাদের এখানে ৪৫-৪৮ এর মতো। আমাদের অর্থনীতি গ্রোথ রেট ধরে রেখেছে, অনেক দেশ মাইনাসে চলে গেছে। একটি মানুষও না খেয়ে মরেনি। কোনো উন্নয়ন থেমে নেই। শুধু শিক্ষা পুরোপুরি করতে পারিনি, এখন অনলাইনে নেওয়া হচ্ছে।
ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা হচ্ছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিলে প্রথম ধাপেই বাংলাদেশ তা পাবে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালের জন্যও ব্যবস্থা হবে বলে জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শীতকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বেড়ে যায় সে কারণে করোনা বেড়ে যেতে পারে। সরকারি-বেসরকারিভাবে মিলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে পারবো। আগে বেড বেশি ছিল না, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছিল না, এখন হয়েছে, ওষুধের অভাব নেই, ডাক্তার নার্সরা এখন অনেক বেশি ট্রেন্ড। টেলিমেডিসিন বাড়ানোর কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, লাখে লাখে হাসপাতালে গেলে পৃথিবীর কারো সক্ষমতা নেই নিয়ন্ত্রণ করার, বাংলাদেশেরও নেই। তাই সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ কারণে জরিমানা করা হচ্ছে। ডেঙ্গু বাড়ছে, একইসঙ্গে মোকাবিলা করা জটিল, তবে এদিকে নজর রাখতে হবে।
বেসরকারি হাসপাতালে ১০ হাজার বেডের মধ্যে কোভিড রোগীর জন্য ১২শ রয়েছে। ২০ শতাংশে উন্নিত করা ও আইসিইউ বাড়ানোর আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, করোনায় সরকারের পদক্ষেপ যথাযথ ছিল। সে কারণে মৃত্যুহার অন্য দেশের তুলনায় কম। তবে কোনো মৃত্যুই কাম্য হতে পারে না। মনে রাখতে হবে দেশ বাঁচলে তবেই আমরা বাঁচবো। আমি আশাকরি বেসরকারি হাসপাতাল তাদের সহযোগিতার হাত অব্যাহত থাকবে।
ভ্যাকসিনের বিষয়ে বড় প্লান করা হয়েছে। সবাই পাবেন তবে ধাপে ধাপে দেওয়া হবে। টেস্টের খরচ আরও কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেন হেলথ ডিজি।
বিপিএমসিএ সভাপতি এমএ মুবিন খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। যদি পরিস্থিতি খারাপ হয় তাহলে পাটনারশিপ হতে পারে। অথবা সরকার যেভাবে পছন্দ করে। অনেকে অনলাইন কনসালটেশন নিচ্ছেন, এটি খুবই কার্যকর। না হলে সকল রোগী হাসপাতালমুখী হলে হিমশিম খেতে হতো। তাই অনলাইন মেডিকেল বোর্ড করা হচ্ছে। ক্যাম্পেইনের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
সিটিস্ক্যান মেশিনসহ করোনায় অপরিহার্য যন্ত্রপাতি করমুক্ত করা যেতে পারে। এন্টিজেন ও এন্টিবডি কিট আমদানির সুযোগ দিলে রোগীরা বিশাল রিলিফ পেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী, ইস্ট-ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন, খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান গাজী মিজানুর রহমান, নর্থ-ইস্ট মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন, রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান, নর্থবেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান এমএ মুকিত প্রমুখ।