সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার বিচার ফের শুরু
যুগান্তর রিপোর্ট
০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৫:০২:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ
তিন দশক আগে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে সগিরা মোর্শেদ সালাম হত্যা মামলায় তার ভাসুরসহ ৪ জনের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ বুধবার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে ১১ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন।
আসামিরা হলেন- সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী (৭০), তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহিন (৬৪), শাহিনের ভাই আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান (৫৯) ও মারুফ রেজা (৫৯)।
কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামিদের অভিযোগ পড়ে শোনানো হলে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
এ সময় মামলার প্রধান আসামি ডা. হাসান চৌধুরী এবং সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিনের পক্ষে নিয়েজিত আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল অসুস্থ থাকায় তাদের পক্ষের অপর আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী হাজির ছিলেন। অপর আসামি মারুফ রেজার পক্ষে তার নতুন নিয়োজিত আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান গঠন শুনানি করেন।
সগিরা মোর্শেদা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ছিলেন।
আসামিদের জবানবন্দি অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই বিকালে স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে রিকশায় করে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যাচ্ছিলেন সগিরা। স্কুলের সামনে পৌঁছতেই সগিরার পথ আটকান মোটরসাইকেল আরোহী মারুফ ও রেজওয়ান। হাতব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার পর হাতের বালা নিতে উদ্যত হলে রেজওয়ানকে চিনে ফেলার কথা বলেন সগিরা। এরপরই তার (সগিরা) কোঁকে গুলি চালান মারুফ রেজা।
গত বছরের ১৭ আগস্ট এ মামলাটি তদন্ত শুরু করে পিবিআই। হাইকোর্টের নির্দেশে ৬ মাস তদন্ত চলাকালে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ হত্যার ঘটনায় রমনা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার স্বামী সালাম চৌধুরী।
প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দুজনের কথা বললেও মিন্টু ওরফে মন্টু নামের একজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
বাদীপক্ষের সাক্ষ্যে আসামি মন্টু ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসানের নিকটাত্মীয় মারুফ রেজার নাম আসে। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২৩ মে বিচারিক আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন।
এ আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট রুল দিয়ে অধিকতর তদন্তের আদেশ স্থগিত করেন।
পরের বছরের ২৭ আগস্ট অপর এক আদেশে হাইকোর্ট ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান। এতে থমকে যায় মামলার কার্যক্রম। এরপর ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ।
শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৬ জুন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ মামলার অধিকতর তদন্ত আদেশে ইতিপূর্বে দেয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে ৬০ দিনের মধ্যে ওই মামলার অধিকতর তদন্ত শেষ করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার বিচার ফের শুরু
তিন দশক আগে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে সগিরা মোর্শেদ সালাম হত্যা মামলায় তার ভাসুরসহ ৪ জনের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ বুধবার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে ১১ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন।
আসামিরা হলেন- সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী (৭০), তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহিন (৬৪), শাহিনের ভাই আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান (৫৯) ও মারুফ রেজা (৫৯)।
কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামিদের অভিযোগ পড়ে শোনানো হলে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
এ সময় মামলার প্রধান আসামি ডা. হাসান চৌধুরী এবং সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিনের পক্ষে নিয়েজিত আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল অসুস্থ থাকায় তাদের পক্ষের অপর আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী হাজির ছিলেন। অপর আসামি মারুফ রেজার পক্ষে তার নতুন নিয়োজিত আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান গঠন শুনানি করেন।
সগিরা মোর্শেদা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ছিলেন।
আসামিদের জবানবন্দি অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই বিকালে স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে রিকশায় করে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যাচ্ছিলেন সগিরা। স্কুলের সামনে পৌঁছতেই সগিরার পথ আটকান মোটরসাইকেল আরোহী মারুফ ও রেজওয়ান। হাতব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার পর হাতের বালা নিতে উদ্যত হলে রেজওয়ানকে চিনে ফেলার কথা বলেন সগিরা। এরপরই তার (সগিরা) কোঁকে গুলি চালান মারুফ রেজা।
গত বছরের ১৭ আগস্ট এ মামলাটি তদন্ত শুরু করে পিবিআই। হাইকোর্টের নির্দেশে ৬ মাস তদন্ত চলাকালে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ হত্যার ঘটনায় রমনা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার স্বামী সালাম চৌধুরী।
প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দুজনের কথা বললেও মিন্টু ওরফে মন্টু নামের একজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
বাদীপক্ষের সাক্ষ্যে আসামি মন্টু ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসানের নিকটাত্মীয় মারুফ রেজার নাম আসে। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২৩ মে বিচারিক আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন।
এ আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট রুল দিয়ে অধিকতর তদন্তের আদেশ স্থগিত করেন।
পরের বছরের ২৭ আগস্ট অপর এক আদেশে হাইকোর্ট ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান। এতে থমকে যায় মামলার কার্যক্রম। এরপর ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ।
শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৬ জুন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ মামলার অধিকতর তদন্ত আদেশে ইতিপূর্বে দেয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে ৬০ দিনের মধ্যে ওই মামলার অধিকতর তদন্ত শেষ করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।