মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার স্মরণে দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি
যুগান্তর ডেস্ক
২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৪:৪২:২১ | অনলাইন সংস্করণ
ভারতের মুম্বাইয়েসন্ত্রাসী হামলার ১৩তম বার্ষিকীতে শুক্রবার দেশজুড়ে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
ভয়াবহ এই দিনটির স্মরণে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, ছাত্র সমাজ, সন্ত্রাসবিরোধী ফোরাম এবং সর্বস্তরের নাগরিকরা একজোট হয়েছিলেন।
এদিন পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীর ওই বর্বরোচিত হামলার নিন্দা এবং হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তারা। আর এই হামলার পৃষ্ঠপোষকতার জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এদিনের বিশেষ আয়োজনের মধ্যে ছিল একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী। যেখানে মুম্বাই হামলার ছবি ছাড়াও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ট্রাজেডির ছবি, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং ২০১৬ সালে রাজধানীর হলি আর্টিসান হামলার ছবি প্রদর্শন করা হয়।
প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী।
এ ছাড়া প্রখ্যাত থিয়েটার শিল্পীরা আবেগ ভরা অভিনয়ের মাধ্যমে মুম্বাই হামলা ঘটনা চিত্রিত করে নাটক উপস্থাপন করেন। তারা শহীদদের পাশাপাশি মুম্বাই হামলার শিকারদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এদিকে, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা হামলার মাস্টারমাইন্ডদের আশ্রয় দিতে পাক সরকারের ভূমিকার নিন্দা জানায়। একইসঙ্গে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বিওএএফ) ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও মুম্বাই হামলা’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং সেমিনারের আয়োজন করে, যেখানে বিশিষ্ট প্যানেলিস্টরা উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর ও কুমিল্লা জেলায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন কর্মসূচি ও বাইক র্যা লির আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ে তাজ হোটেল ও ছত্রপতি শিবাজি রেলওয়ে স্টেশনসহ প্রায় ১২টি স্থাপনায় একযোগে সন্ত্রাসী হামলা হয়। এ হামলায় ১৬৬ জন নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার ১০ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী ভারতের বাণিজ্যিক নগরীসহ প্রায় পুরো দেশকে তিন দিন ধরে অচল করে রেখেছিল।
হামলাকারীদের মধ্যে আজমল কাসাব নামের একজনকে আটক করা হয়। পরে ভারতে ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর তার ফাঁসি কার্যকর হয়। হামলাকারীদের মধ্যে অন্যরা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হন।
পাকিস্তান প্রথম দিকে ওই হামলার সঙ্গে নিজেদের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে। পরে কাসাব ও ওই হামলার মূল পরিকল্পনাকারীরা পাকিস্তানি নাগরিক বলে প্রমাণিত হলে পরে পাকিস্তান বিষয়টি স্বীকার করে নেয়।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার স্মরণে দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি
ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার ১৩তম বার্ষিকীতে শুক্রবার দেশজুড়ে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
ভয়াবহ এই দিনটির স্মরণে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, ছাত্র সমাজ, সন্ত্রাসবিরোধী ফোরাম এবং সর্বস্তরের নাগরিকরা একজোট হয়েছিলেন।
এদিন পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীর ওই বর্বরোচিত হামলার নিন্দা এবং হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তারা। আর এই হামলার পৃষ্ঠপোষকতার জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এদিনের বিশেষ আয়োজনের মধ্যে ছিল একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী। যেখানে মুম্বাই হামলার ছবি ছাড়াও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ট্রাজেডির ছবি, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং ২০১৬ সালে রাজধানীর হলি আর্টিসান হামলার ছবি প্রদর্শন করা হয়।
প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী।
এ ছাড়া প্রখ্যাত থিয়েটার শিল্পীরা আবেগ ভরা অভিনয়ের মাধ্যমে মুম্বাই হামলা ঘটনা চিত্রিত করে নাটক উপস্থাপন করেন। তারা শহীদদের পাশাপাশি মুম্বাই হামলার শিকারদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এদিকে, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা হামলার মাস্টারমাইন্ডদের আশ্রয় দিতে পাক সরকারের ভূমিকার নিন্দা জানায়। একইসঙ্গে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বিওএএফ) ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও মুম্বাই হামলা’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং সেমিনারের আয়োজন করে, যেখানে বিশিষ্ট প্যানেলিস্টরা উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর ও কুমিল্লা জেলায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন কর্মসূচি ও বাইক র্যা লির আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ে তাজ হোটেল ও ছত্রপতি শিবাজি রেলওয়ে স্টেশনসহ প্রায় ১২টি স্থাপনায় একযোগে সন্ত্রাসী হামলা হয়। এ হামলায় ১৬৬ জন নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার ১০ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী ভারতের বাণিজ্যিক নগরীসহ প্রায় পুরো দেশকে তিন দিন ধরে অচল করে রেখেছিল।
হামলাকারীদের মধ্যে আজমল কাসাব নামের একজনকে আটক করা হয়। পরে ভারতে ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর তার ফাঁসি কার্যকর হয়। হামলাকারীদের মধ্যে অন্যরা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হন।
পাকিস্তান প্রথম দিকে ওই হামলার সঙ্গে নিজেদের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে। পরে কাসাব ও ওই হামলার মূল পরিকল্পনাকারীরা পাকিস্তানি নাগরিক বলে প্রমাণিত হলে পরে পাকিস্তান বিষয়টি স্বীকার করে নেয়।