বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে গণমাধ্যমকে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে
যুগান্তর রিপোর্ট
২৮ মে ২০১৮, ২১:৩৩:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে দু’দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও ইতিবাচক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। দু’দেশের সম্পর্ক বিনষ্ট হতে পারে এমন নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের ভিত্তি হাজার বছরের।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশে কর্মরত প্রতিনিধিদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইমক্যাব) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক : গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় নেতারা এ আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এই ভিত্তি আরও দৃঢ় করেছে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধে ভারতের সব ধরনের সহায়তা বন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে।
সাংবাদিক নেতারা তিস্তার পানি সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দু’দেশ দ্রুত সমাধানে পৌঁছাতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।
সংগঠনের সভাপতি বাসুদেব ধরের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও একুশে টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সাহা।
সভায় বিষয়বস্তুর ওপর ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ইমক্যাবের প্রধান উপদেষ্টা ও দি হিন্দুর বাংলাদেশ প্রতিনিধি হারুন হাবীব। সঞ্চালকের দায়িত্বপালন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ।
সভার সূচনায় পঠিত মূল প্রবন্ধে হারুন হাবীব বলেন, বাংলাদেশ-ভারত প্রার্থীত সম্পর্কের নবদিগন্তে দু’দেশের গণমাধ্যমেরই গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। দু’দেশেরই মূলধারার গণমাধ্যম এই সম্পর্ককে লালন করেছে, সমর্থন দিয়েছে। কেউ কেউ একে থমকে দিতে চায়নি, তা নয়। দু’দেশেরই এমন গোষ্ঠী আছে যারা পুরনোকে আঁকড়ে ধরে, সামনে এগোবার যাত্রাকে থমকে দিতে চায়। দু’দেশেই উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি আছে। যারা মানুষে মানুষে ঘৃণা ছড়ায়। কিছু কিছু গণমাধ্যমও এসব অপকর্মে ব্যবহৃত হয়নি তা নয়।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, রক্তের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত দু’দেশের সম্পর্ক কোনো অপশক্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারবে না। ভারত বিশ্বে পঞ্চম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশও উন্নয়শীল দেশের কাতারে পা বাড়িয়েছে। তাই দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিজেদের স্বার্থেই আরও বাড়াতে হবে। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মূল শক্তিকে সহযোগিতা করতে হবে। তাদের স্থিতিশীলতার কারণেও এটা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে আইএসআই ভারতকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় এসে সেই ষড়যন্ত্রের ভিত্তি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
সাইফুল আলম বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকা মুখ্য। এক্ষেত্রে দু’দেশের সাংবাদিকরা হচ্ছেন সহযোগী শক্তি। বিশেষ করে দু’দেশে যারা অন্যদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন তাদের অবশ্যই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে সেই সম্পর্ক আরও বেগবান হবে।
স্বপন কুমার সাহা বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন রাজনৈতিক কারণে বাংলা বিভক্ত হলেও আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য অভিন্ন। রবীন্দ্র-নজরুল বিভক্ত হয়নি। জয় বাংলা আমাদের রণধ্বনি। এই ভিত্তিকে সামনে রেখে আমাদের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে গণমাধ্যমকে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে দু’দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও ইতিবাচক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। দু’দেশের সম্পর্ক বিনষ্ট হতে পারে এমন নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের ভিত্তি হাজার বছরের।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশে কর্মরত প্রতিনিধিদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইমক্যাব) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক : গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় নেতারা এ আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এই ভিত্তি আরও দৃঢ় করেছে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধে ভারতের সব ধরনের সহায়তা বন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে।
সাংবাদিক নেতারা তিস্তার পানি সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দু’দেশ দ্রুত সমাধানে পৌঁছাতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।
সংগঠনের সভাপতি বাসুদেব ধরের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও একুশে টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সাহা।
সভায় বিষয়বস্তুর ওপর ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ইমক্যাবের প্রধান উপদেষ্টা ও দি হিন্দুর বাংলাদেশ প্রতিনিধি হারুন হাবীব। সঞ্চালকের দায়িত্বপালন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ।
সভার সূচনায় পঠিত মূল প্রবন্ধে হারুন হাবীব বলেন, বাংলাদেশ-ভারত প্রার্থীত সম্পর্কের নবদিগন্তে দু’দেশের গণমাধ্যমেরই গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। দু’দেশেরই মূলধারার গণমাধ্যম এই সম্পর্ককে লালন করেছে, সমর্থন দিয়েছে। কেউ কেউ একে থমকে দিতে চায়নি, তা নয়। দু’দেশেরই এমন গোষ্ঠী আছে যারা পুরনোকে আঁকড়ে ধরে, সামনে এগোবার যাত্রাকে থমকে দিতে চায়। দু’দেশেই উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি আছে। যারা মানুষে মানুষে ঘৃণা ছড়ায়। কিছু কিছু গণমাধ্যমও এসব অপকর্মে ব্যবহৃত হয়নি তা নয়।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, রক্তের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত দু’দেশের সম্পর্ক কোনো অপশক্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারবে না। ভারত বিশ্বে পঞ্চম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশও উন্নয়শীল দেশের কাতারে পা বাড়িয়েছে। তাই দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিজেদের স্বার্থেই আরও বাড়াতে হবে। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মূল শক্তিকে সহযোগিতা করতে হবে। তাদের স্থিতিশীলতার কারণেও এটা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে আইএসআই ভারতকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় এসে সেই ষড়যন্ত্রের ভিত্তি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
সাইফুল আলম বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকা মুখ্য। এক্ষেত্রে দু’দেশের সাংবাদিকরা হচ্ছেন সহযোগী শক্তি। বিশেষ করে দু’দেশে যারা অন্যদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন তাদের অবশ্যই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে সেই সম্পর্ক আরও বেগবান হবে।
স্বপন কুমার সাহা বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন রাজনৈতিক কারণে বাংলা বিভক্ত হলেও আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য অভিন্ন। রবীন্দ্র-নজরুল বিভক্ত হয়নি। জয় বাংলা আমাদের রণধ্বনি। এই ভিত্তিকে সামনে রেখে আমাদের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।