সারার কর্নিয়ায় আলো পেলেন দুই রোগী
ব্রেন ডেথ রোগী সারা ইসলামের দান করা কর্নিয়াপ্রাপ্ত দুই রোগী ভালো আছেন। তারা সারা ইসলামের দানকৃত কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করে চোখের আলো ফিরে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
রোববার সারা ইসলামের দুটি কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা রোগী শিক্ষিকা ফেরদৌস আখতার (৫৬) ও মোহাম্মদ সুজনের (২৩) চোখ পরীক্ষা করেন অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
এ সময় উপাচার্য বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি রাতে সারা ইসলামের দুটি কিডনি অন্য দুজন রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। একইসঙ্গে তার দুটি কর্নিয়া দুজনের চোখে বসানো হয়েছে। তার অঙ্গদানের মাধ্যমে চারজন মানুষ নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। এটি দেশের চিকিৎসাসেবায় মাইলফলক।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেরদৌসী আখতার ২০১৬ সালে এক অজানা ভাইরাসে তার ডান চোখে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে তিনি এতদিন কিছুই দেখতে পেতেন না। সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিকে চোখ দেখালেও সমাধান মেলেনি। পরে সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমানের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। সাত বছর আগে কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। তবে কর্নিয়া সংকটে এটি এতদিন করা সম্ভব হয়নি
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানিয়েছে, এই শিক্ষিকা কর্নিয়া জোগাড় করতে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দিয়ে রেখেছিলেন। সারার কর্নিয়া দানের সম্মতি পেয়েই চিকিৎসক শীষ রহমান ফেরদৌসকে ফোন করে ঢাকায় আসতে বলেন। এরপর তার ডান চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। ডান চোখে এখন স্বাভাবিকভাবে দেখতে পাচ্ছেন।
এদিকে মোহাম্মদ সুজনের চোখের অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউর চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ। মোহাম্মদ সুজন এখন ভালো আছেন।
প্রসঙ্গত, দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বিএসএমএমইউর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২০ বছরের তরুণী সারা ইসলাম। তিনি মৃত্যুর আগে তার অঙ্গদান করে যান। গত ১৯ জানুয়ারি সারা ইসলাম ব্রেন ডেথ হওয়ার পরপরই বিএসএমএমইউর ক্যাডাভেরিক সেলের আহ্বায়ক ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে তার দুটি কিডনি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করেন আনেন।
এরপর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল একটি কিডনি শামীমা আক্তার নামের এক রোগীর দেহে সফলভার প্রতিস্থাপন করেন। সারা ইসলামের অপর কিডনিটি বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. খুরশিদুল আলমের নেতৃত্বে অধ্যাপক ডা. হরুন-অর-রশীদ ও তার টিম হাসিনা আক্তার নামের আরেক রোগীর শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেন। তারা দুজনই বর্তমানে ভালো আছেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সারার কর্নিয়ায় আলো পেলেন দুই রোগী
ব্রেন ডেথ রোগী সারা ইসলামের দান করা কর্নিয়াপ্রাপ্ত দুই রোগী ভালো আছেন। তারা সারা ইসলামের দানকৃত কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করে চোখের আলো ফিরে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
রোববার সারা ইসলামের দুটি কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা রোগী শিক্ষিকা ফেরদৌস আখতার (৫৬) ও মোহাম্মদ সুজনের (২৩) চোখ পরীক্ষা করেন অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
এ সময় উপাচার্য বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি রাতে সারা ইসলামের দুটি কিডনি অন্য দুজন রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। একইসঙ্গে তার দুটি কর্নিয়া দুজনের চোখে বসানো হয়েছে। তার অঙ্গদানের মাধ্যমে চারজন মানুষ নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। এটি দেশের চিকিৎসাসেবায় মাইলফলক।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেরদৌসী আখতার ২০১৬ সালে এক অজানা ভাইরাসে তার ডান চোখে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে তিনি এতদিন কিছুই দেখতে পেতেন না। সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিকে চোখ দেখালেও সমাধান মেলেনি। পরে সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমানের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। সাত বছর আগে কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। তবে কর্নিয়া সংকটে এটি এতদিন করা সম্ভব হয়নি
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানিয়েছে, এই শিক্ষিকা কর্নিয়া জোগাড় করতে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দিয়ে রেখেছিলেন। সারার কর্নিয়া দানের সম্মতি পেয়েই চিকিৎসক শীষ রহমান ফেরদৌসকে ফোন করে ঢাকায় আসতে বলেন। এরপর তার ডান চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। ডান চোখে এখন স্বাভাবিকভাবে দেখতে পাচ্ছেন।
এদিকে মোহাম্মদ সুজনের চোখের অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউর চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ। মোহাম্মদ সুজন এখন ভালো আছেন।
প্রসঙ্গত, দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বিএসএমএমইউর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২০ বছরের তরুণী সারা ইসলাম। তিনি মৃত্যুর আগে তার অঙ্গদান করে যান। গত ১৯ জানুয়ারি সারা ইসলাম ব্রেন ডেথ হওয়ার পরপরই বিএসএমএমইউর ক্যাডাভেরিক সেলের আহ্বায়ক ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে তার দুটি কিডনি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করেন আনেন।
এরপর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল একটি কিডনি শামীমা আক্তার নামের এক রোগীর দেহে সফলভার প্রতিস্থাপন করেন। সারা ইসলামের অপর কিডনিটি বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. খুরশিদুল আলমের নেতৃত্বে অধ্যাপক ডা. হরুন-অর-রশীদ ও তার টিম হাসিনা আক্তার নামের আরেক রোগীর শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেন। তারা দুজনই বর্তমানে ভালো আছেন।