রাতেই কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন চিত্রনায়িকা মাহি
গাজীপুর প্রতিনিধি
১৮ মার্চ ২০২৩, ২০:২৬:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ
পুলিশের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং জমি দখল ও মারধরের দুই মামলাতেই জামিনে মুক্তিপেয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে তিনি গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. আনোয়ারুল করিম যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জামিনের কাগজ-পত্র যাচাই-বাছাই শেষে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মাহি মুক্তি পান।
সৌদি আরব থেকে ওমরাহ শেষে সকালে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে তাকে গাজীপুরের আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মহানগর হাকিম মো. ইকবাল হোসেন। তবে সন্ধ্যায় অন্তঃসত্ত্বা এই চিত্রনায়িকার জামিনের আদেশ দেন একই বিচারক। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা কারাবাসের পর রাতে তার তিনি মুক্তি পান।
জেল থেকে বের হয়ে মাহিয়া মাহি গাজীপুরের ভোগড়া চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় স্বামী রাকিব সরকারের বাসায় গেছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে শুক্রবার তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দুটি করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। ওই দিন রাতে বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোকন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এ ছাড়া জমিদখলের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করে আরও একটি মামলা করেন স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন।
স্বামীর সঙ্গে ওমরাহ পালন করতে যান মাহি। শুক্রবার ভোরে সৌদি আরবের মক্কা শহর থেকে ফেসবুক লাইভে তার স্বামী রাকিব সরকারের ‘সানিরাজ কার প্যালেস’ নামে গাড়ির শোরুম ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ করেন।
এ সময় মাহি ফেসবুক লাইভে বলেন, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে তার স্বামীর একটি গাড়ির শোরুম রয়েছে। সেখানে দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে। তারা শোরুমের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে আসবাব, দরজা-জানালা, টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করছে। শোরুমের সাইনবোর্ড খুলে ফেলেছে। অফিসকক্ষ তছনছ করে টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে গেছে। তাদের প্রতিপক্ষ ইসমাইল ওরফে লাদেন ও মামুন সরকারের নেতৃত্বে লোকজন নিয়ে ওই শোরুম দখল করে নিচ্ছে। আর এই কাজে সহযোগিতা করেছেন জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম।
তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম প্রতিপক্ষের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ‘ঘুষ’ নিয়ে বিনিময়ে তাদের গাড়ির শোরুম দখল করে দিচ্ছেন।
২৫ মিনিটের বেশি সময়ে ফেসবুক লাইভে তিনি লোকজনকে ডেকে আনেন এবং পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বিভিন্ন কথা-বার্তা বলেন। এ সময় মাহির স্বামী রাকিব সরকার পাশেই ছিলেন। এর পর তিনি ফেসবুকে বেশ কয়েকটি পোস্ট করেন এই হামলা নিয়ে।
মাহি ফেসবুক লাইভে এও বলেন, তিনি দেশে ফিরে শনিবার বিকাল ৫টার দিকে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ সংলগ্ন ‘সানিরাজ কার প্যালেসে’ সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনার বিস্তারিত জানাবেন।
এদিকে শনিবার দুপুরে মোল্লা নজরুল ইসলাম তার কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে প্রেস ব্রিফিং করে উল্লেখিত বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, চিত্রনায়িকা মাহিয়া তার ফেসবুক লাইভে পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও আমাকে জড়িয়ে ব্যক্তিগত বিষোদগার করেছেন। যা কখনো মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, মাহিয়া মাহির স্বামী রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনের মতো গুরুতর অভিযোগে তিনটি মামলার ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে। বিষয়গুলো খতিয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
রাতেই কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন চিত্রনায়িকা মাহি
পুলিশের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং জমি দখল ও মারধরের দুই মামলাতেই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে তিনি গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. আনোয়ারুল করিম যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জামিনের কাগজ-পত্র যাচাই-বাছাই শেষে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মাহি মুক্তি পান।
সৌদি আরব থেকে ওমরাহ শেষে সকালে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে তাকে গাজীপুরের আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মহানগর হাকিম মো. ইকবাল হোসেন। তবে সন্ধ্যায় অন্তঃসত্ত্বা এই চিত্রনায়িকার জামিনের আদেশ দেন একই বিচারক। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা কারাবাসের পর রাতে তার তিনি মুক্তি পান।
জেল থেকে বের হয়ে মাহিয়া মাহি গাজীপুরের ভোগড়া চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় স্বামী রাকিব সরকারের বাসায় গেছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে শুক্রবার তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দুটি করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। ওই দিন রাতে বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোকন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এ ছাড়া জমিদখলের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করে আরও একটি মামলা করেন স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন।
স্বামীর সঙ্গে ওমরাহ পালন করতে যান মাহি। শুক্রবার ভোরে সৌদি আরবের মক্কা শহর থেকে ফেসবুক লাইভে তার স্বামী রাকিব সরকারের ‘সানিরাজ কার প্যালেস’ নামে গাড়ির শোরুম ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ করেন।
এ সময় মাহি ফেসবুক লাইভে বলেন, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে তার স্বামীর একটি গাড়ির শোরুম রয়েছে। সেখানে দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে। তারা শোরুমের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে আসবাব, দরজা-জানালা, টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করছে। শোরুমের সাইনবোর্ড খুলে ফেলেছে। অফিসকক্ষ তছনছ করে টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে গেছে। তাদের প্রতিপক্ষ ইসমাইল ওরফে লাদেন ও মামুন সরকারের নেতৃত্বে লোকজন নিয়ে ওই শোরুম দখল করে নিচ্ছে। আর এই কাজে সহযোগিতা করেছেন জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম।
তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম প্রতিপক্ষের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ‘ঘুষ’ নিয়ে বিনিময়ে তাদের গাড়ির শোরুম দখল করে দিচ্ছেন।
২৫ মিনিটের বেশি সময়ে ফেসবুক লাইভে তিনি লোকজনকে ডেকে আনেন এবং পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বিভিন্ন কথা-বার্তা বলেন। এ সময় মাহির স্বামী রাকিব সরকার পাশেই ছিলেন। এর পর তিনি ফেসবুকে বেশ কয়েকটি পোস্ট করেন এই হামলা নিয়ে।
মাহি ফেসবুক লাইভে এও বলেন, তিনি দেশে ফিরে শনিবার বিকাল ৫টার দিকে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ সংলগ্ন ‘সানিরাজ কার প্যালেসে’ সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনার বিস্তারিত জানাবেন।
এদিকে শনিবার দুপুরে মোল্লা নজরুল ইসলাম তার কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে প্রেস ব্রিফিং করে উল্লেখিত বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, চিত্রনায়িকা মাহিয়া তার ফেসবুক লাইভে পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও আমাকে জড়িয়ে ব্যক্তিগত বিষোদগার করেছেন। যা কখনো মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, মাহিয়া মাহির স্বামী রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনের মতো গুরুতর অভিযোগে তিনটি মামলার ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে। বিষয়গুলো খতিয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।