বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবিকা নিশ্চিতকরণে জীববৈচিত্র্য প্রকল্পের জাতীয় পর্যায়ের কর্মশালা অনুষ্ঠিত

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম

সংগৃহীত ছবি
ফলো করুন |
|
---|---|
বায়ডারভিসিটি ফর রেজিলিয়েন্ট লাইভলিহুডস প্রকল্পের জাতীয় কর্মশালা সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পটি পরিচালনা করছে সিএনআরএস, সহযোগী সংস্থা হিসেবে রয়েছে বেলা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আইইউসিএন, প্রেরণা এবং সিডিও। প্রকল্পটি অর্থায়ন করছে সুইডিশ দূতাবাস, ঢাকা।
বেইজলাইন পর্ব শেষ করে চার বছর মেয়াদী এই প্রকল্পটি এখন তার বাস্তবায়ন কার্যক্রমে প্রবেশ করেছে। অন্তবর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. সোহরাব আলী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (পরিকল্পনা বিভাগ) মো. আলী জিন্নাহ, বন বিভাগের রকিবুল হাসান মুকুল এবং মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার, সুইডিশ দূতাবাস, ঢাকা।
এই কর্মশালায় ৬০ জনের মতো অংশীজন একত্রিত হন যাদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় নারী-পুরুষ নেতা, সিভিল সোসাইটির সদস্য, উন্নয়ন ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী এবং নীতিনির্ধারকগণ। সবাই মিলে, একটি অভিন্ন লক্ষ্য সামনে রেখে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন যাতে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের জন্য এমন একটি সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা যায়, যা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, ক্ষয়প্রাপ্ত জলাভূমি পুনরুদ্ধার করবে এবং জলবায়ু সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে আরও টেকসই ও সক্ষম করে তুলবে।
সি এন আর এস-এর নির্বাহী পরিচালক ড. এম. মোখলেছুর রহমান প্রকল্পের পাইলট ও বাস্তবায়ন পর্যায়ের প্রধান কার্যক্রমসমূহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘অ্যাডাপটিভ ফার্মিং, জলাভূমি বিশেষ করে খাল পুনঃখনন এবং ইজারামুক্ত জলাভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করা শুধু উদ্যোগ নয়, এগুলোই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায়, জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবিকা রক্ষায় মূল চাবিকাঠি।’
ওপেন ফোরাম পর্বে সরকারি প্রতিনিধি, এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা অংশগ্রহণ করেন এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও টেকসই জীবিকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
প্রধান অতিথি ফারিদা আখতার বলেন, ‘এই প্রকল্পে মানুষকে শুধু জলবায়ু সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে দেখা হয়নি, বরং তাদের সহনশীল এবং সমাধান খোঁজার সক্রিয় অংশীদার হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। যদিও জলাভূমির লিজ থেকে কিছু রাজস্ব আসে, কিন্তু তাতে মানুষের জীবিকার যে ক্ষতি হয়, তা তুলনাহীনভাবে বেশি। এই প্রকল্প দেখে আমি এমন একটি উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে আশা করি। প্রকল্পের যে দিকটি আমাকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করেছে, তা হলো নারীদের অংশগ্রহণ ছিল অত্যন্ত অর্থবহ। এখান থেকেই নারীদের প্রকৃত ক্ষমতায়নের সূচনা হয়।’
সুইডিশ দূতাবাসের সিনিয়র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘লবণাক্ততা রোধ করতে হবে, তবে তা বাস্তবতার সীমার মধ্যেই করতে হবে। এই প্রকল্প একটি দারুণ উদ্যোগ হিসেবে কাজ করেছে, যা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এখন দরকার স্থানীয়ভাবে কমিটি গঠন, সঠিক সময়ে কার্যকর সমন্বয়, নীতিমালার সংস্কার এবং শক্তিশালী শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করা।’
কর্মশালায় প্রদর্শিত হয় একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি ও ছবি প্রদর্শনী, যা প্রকল্পের পাইলট পর্যায়ে সম্পন্ন কাজের চিত্র ফুটিয়ে তোলে। এই কর্মশালা শুধুমাত্র স্মৃতিচারণ নয়, বরং প্রকল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে নতুন চিন্তা ও আলোচনার দ্বার উন্মোচন করে।